মউ স্বাক্ষরের সময় কথা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রকের কাছ থেকে পনেরো দিনের মধ্যে ফরাক্কা ব্যারাজ হাসপাতালের দায়িত্ব নেবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রক। ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারির ওই মউ চুক্তির পরে গঙ্গা দিয়ে জল গড়িয়েছে অনেক। কিন্তু বছর ঘুরতে চললেও হাসপাতালের দায়িত্বভার হস্তান্তরিত হয়নি। এ দিকে দু’দফতরের টানাপড়েনে কোনও দিক থেকেই অর্থ সাহায্য পাচ্ছে না হাসপাতাল। এমনকী ফরাক্কা ব্যারাজের হাতে থাকার সময়ে ওষুধপত্রের দিক থেকে যে কিছুটা সুবিধা মিলত, হারিয়েছে তাও। ফলে কার্যত রোগীরা এসে ঘুরে চলে যাচ্ছেন। কাজ না থাকায় মাছি তাড়াচ্ছেন নার্স, ফার্মাসিস্টরাও।
তৈরির সময় থেকেই কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রকের হাতে ছিল এই হাসপাতালটি। ক্রমে ব্যারাজের কর্মী সংখ্যা কমতে থাকায় হাসপাতালে রোগীর সঙ্গে পরিষেবার মানও নামতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে গত লোকসভা ভোটের আগে হাসপাতালটিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনে এনে ৬ মাসের মধ্যে ৬০ শয্যার একটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের আধিকারিকদের মধ্যে মউ চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। ঠিক হয়, ২০১৪ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে হাসপাতালটি হস্তান্তরের কাজ শেষ করা হবে। কিন্তু বছর পার হতে চললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ হাসপাতালের চিকিত্সক থেকে কর্মী সকলের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মউ অনুযায়ী হাসপাতালটির যাবতীয় আর্থিক দায়ভার নেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রকের। কিন্তু এক বছরে কানাকড়ি সাহায্যও মেলেনি সেখান থেকে। সঙ্গে ফরাক্কা ব্যারাজের হাতে থাকাকালীন ওষুধপত্রের দিক থেকে যেটুকু সুবিধা মিলত, এখন তাও বন্ধ। ফরাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজার সৌমিত্র হালদার নিজে স্বাক্ষর করেছিলেন হাসপাতাল হস্তান্তরের মউ চুক্তিতে। কিন্তু এখন সমস্ত দায় ঝেড়ে ফেলে তাঁর সাফ জবাব, “ফরাক্কা ব্যারাজ হাসপাতালের দায়িত্ব পুরোপুরি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রকের। তারাই বলতে পারবে হাসপাতালের বর্তমান পরিস্থিতির হাল।”