সর্বোত্কৃষ্ট চিকিত্সা পরিষেবা পেতে মানুষ মেডিক্যাল কলেজ স্তরের হাসপাতালের দ্বারস্থ হয়। অথচ কলকাতার সেই মেডিক্যাল কলেজগুলিতেই বিপুল রোগীকে পরিষেবা দিতে স্বাস্থ্য দফতর বরাদ্দ রেখেছে মাত্র একটি বা দু’টি করে অ্যাম্বুল্যান্স! সম্প্রতি আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে এই অ্যাম্বুল্যান্স পরিস্থিতির প্রতিকার চেয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরে অভিযোগ দায়ের করেছে কলকাতার দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তারা প্রশ্ন তুলেছে, “কেন খরচ বাঁচানোর নামে অ্যাম্বুল্যান্সের মতো জরুরি বিষয়ে কাটছাঁট করবে স্বাস্থ্য দফতর? কেন হাসপাতালের কর্তাদের যাতায়াতের জন্য তিন-চারটি করে সরকারি গাড়ি বরাদ্দ থাকবে আর যত হিসেব করা হবে অ্যাম্বুল্যান্সের বেলায়?”
কী হয়েছিল আরজিকরে?
হাসপাতাল সূত্রের খবর, শোভাবাজারের অবিনাশ দত্ত মেটারনিটি হাসপাতাল বেশ কিছুদিন আগেই আরজিকরের সহযোগী হাসপাতাল হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশেই আরজিকরের প্রসূতি বিভাগে রোগীর বিপুল চাপ সামলাতে কিছু রোগী প্রতিদিন অবিনাশ দত্তে পাঠানোর কথা। এর জন্য আরজিকর থেকে বেশ কয়েক জন চিকিত্সককেও পাঠানো হয়েছে সেখানে। কিন্তু আরজিকরের জন্য স্বাস্থ্য দফতরের বরাদ্দ মাত্র একটি সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স। নভেম্বরের পয়লা তারিখ থেকে একুশ তারিখ পর্যন্ত টানা প্রায় কুড়ি দিন সেই অ্যাম্বুল্যান্সের চালক ছুটিতে গিয়েছিলেন। এই সময়ের মধ্যেই গত ১৮ নভেম্বর ৭টি, ১৯ নভেম্বর ৫টি ও ২০ নভেম্বর ৪টি সদ্যোজাতর মৃত্যু হয় আরজিকরে। মৃত্যু হয় এক প্রসূতিরও। রটে যায়, রোগীর চাপ সামলাতে না-পেরে মা ও সদ্যোজাতদের ঠিকঠাক দেখাশোনা করছেন না চিকিত্সকেরা। বিক্ষোভ শুরু করেন ভর্তি থাকা রোগীর আত্মীয়েরা। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরে অভিযোগ করে দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ২২ নভেম্বর তড়িঘড়ি সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের চালকের ব্যবস্থা করে আরজিকর থেকে প্রসূতিদের অবিনাশ দত্ত হাসপাতালে পাঠানো শুরু হয়।