স্কুলে ফিরে যেতে চাই মনোবল।
নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হচ্ছে। বহু দিন গৃহবন্দি থাকার পর অনেক শিশুরই স্কুলে যেতে যথেষ্ট অসুবিধে হবে বলে মনোবিদদের আশঙ্কা। বেড়েছে বাবা-মা’র প্রতি নির্ভরতা। বন্ধুদের সান্নিধ্য না পেয়ে অনেক শিশুই অবসাদে ভুগছে। এমনটাই মনে করছেন মনোবিদ এবং চিকিৎসক কেদাররঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়।
একালের শিশুরা অত্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যে জীবন কাটিয়ে অভ্যস্ত। কোভিডের কারণে সব কিছুই প্রায় থমকে গিয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, আমাদের দেশের ৫ থেকে ১৬ বছর বয়সের শিশুদের মধ্যে ৩.৬ শতাংশই স্কুলে যেতে ভয় পায় বা পড়াশোনার মাঝপথে স্কুল ছেড়ে দেয়। এত দিন পরে স্কুল খুললে এই সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা। কেদাররঞ্জন জানালেন, স্কুল খুললে তবেই বোঝা যাবে, স্কুলে যাবার উৎসাহ বেড়েছে, নাকি তাতে ভাটা পড়েছে।
কেদাররঞ্জন অবশ্য বলছেন, ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে স্কুলে যেতে না চাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। নবম শ্রেণির বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েদের প্রাথমিক ভাবে স্কুলে যাওয়ার বিষয়ে কিছুটা অসুবিধে হলেও, আশা করা যায় কিছু দিনের মধ্যেই তারা অভ্যস্ত হয়ে পড়বে।
কেন স্কুলে যেতে অনীহা
স্কুলে যেতে না চাওয়ার পিছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। স্কুলের বকুনি তার একটা হতে পারে। স্কুলে বা স্কুলে যাওয়ার পথে সহপাঠীদের কাছে হেনস্থা হতে হলেও, অনেকে স্কুলে যেতে চায় না। আবার পরীক্ষায় কম নম্বর পেয়ে বকুনির ভয়েও অনেকে স্কুলে যেতে চায় না। দীর্ঘক্ষণ বাড়ির সদস্যদের ছেড়ে থাকতে হবে, ফিরে এসে তাঁদের সঙ্গে যদি দেখা না হয় সেই আতঙ্কেও অনেক শিশু স্কুলে যেতে চায় না। শেষে উল্লেখ করা সমস্যাটিকে বলে ‘সেপারেশন অ্যাংজাইটি’। এই সব শিশুকে বুঝিয়ে এবং মনোবিদের সাহায্য নিয়ে স্কুলে যাওয়ার অভ্যেসটা বজায় রাখতে হবে।
স্কুলে যেতে উৎসাহ দিতে হবে
যদিও এখনই সব ক্লাস শুরু হচ্ছে না। তবু শিশুদের এখন থেকেই স্কুলে যাবার ব্যাপারে উৎসাহ দিতে হবে বাবা, মা ও বাড়ির অন্যদের। এ বিষয়ে মনোবিদদের পরামর্শও নিতে পারেন। তাঁরা কয়েকটা সহজ কথা মাথায় রাখতে বলছেন।
• যে সব বাবা মা ওয়ার্ক ফ্রম হোম করছেন, তাঁরা সন্তানদের বোঝান, নিজেরা অফিস যেতে কতটা আগ্রহী।
• স্কুলে যাওয় নিয়ে শিশুদের মনে উদ্বেগ হলে মাথাব্যথা, পেটব্যথা, শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ওদের বাড়ির ছাদে বা পার্কে কিছু ক্ষণ খেলতে পাঠান। সঙ্গে নিয়মিত ব্যায়াম করতে বলুন।
• বাড়িতে আটকে থেকে শিশুরা অবসন্ন হয়ে পড়েছে। নাচ-গান করলে এটা কিছুটা কাটতে পারে। সে সবে উৎসাহ দিন।
• ঘুম কম হলে শিশুদের অবসাদ বাড়ে। রাত্তিরে টিভি দেখা ও ভিডিয়ো গেম খেলতে দেবেন না।
• রাতে ঘুমোতে যাবার আগে কয়েক মিনিট ধ্যান করতে শেখান। ভাল বই পড়তে উৎসাহ দিন। এতে ঘুম ভাল হবে। স্কুলে যেতে ভয় পাবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy