বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মা দু’জনেই করোনা আক্রান্ত। মেয়ে একা তাঁদের দেখাশোনা করছেন। কখনও গরম জল, কখনও রান্না আবার কখনও অক্সিজেনের মাত্রা মাপার কথা মনে করিয়ে দেওয়া— সারা দিনে এক মুহূর্তও বিশ্রাম নেই মেয়ের। অথচ আত্মীয়েরা ফোন করে কেউ একবারও জানতে চাইছেন না তিনি কেমন আছেন, তাঁর কোনও সাহায্যের প্রয়োজন আছে কি না।
যাঁরা করোনারোগীর দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের শারীরিক পরিশ্রম যেমন, মানসিক চাপ ততটাই। রোগীকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্ব তাঁদের উপরই। ঠিক সময়ে পাল্স রেট, অক্সিজেনের মাত্রা মাপা হচ্ছে কিনা, ওষুধ পড়ছে কি না, পুষ্টিকর খাবার পাচ্ছেন কিনা, গলা ব্যাথা বা কাশির জন্য গরম জল করা, যাবতীয় কর্তব্য কেয়ারগিভারের। তার পরে বাড়তি কাজ, ঘরের প্রত্যেকটা জিনিস স্যানিটাইজ করা, ব্যবহৃত মাস্ক, গ্লাভ্স, রোগীর ব্যবহার করা কাগজের প্লেটের মতো আবর্জনা আলাদা করে স্যানিটাইজ করে ঠিক জায়গায় ফেলা। তাই শারীরিক পরিশ্রমের অন্ত নেই। মাথায় রাখতে হবে, কেয়ারগিভারও ঘরবন্দি। তাঁর উপায় নেই বাড়ির বাইরে গিয়ে বাজারহাট করার। তাই জরুরি জিনিস হাতের কাছে জোগাড় করার দায়িত্বও তাঁর ঘাড়ে পড়ে। তার উপরে যদি তাঁর পেশাগত ব্যস্ততা থাকে, তা হলে সব মিলিয়ে শরীর-মন দুইয়ের উপরেও অত্যন্ত চাপ সৃষ্টি হয় এই সময়।
অথচ আত্মীয়-পরিজনেরা ফোন করে কোভিড রোগীর খোঁজ নিয়ে দায়িত্ব সেরে ফেলেন। কিছু জরুরি জিনিস পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা না করে কয়েকটি নম্বর ফরওয়ার্ড করেই তাঁরা দায়িত্ব ঝেরে ফেলেন। কিন্তু তাতে কোনও রকম সাহায্য হয় না। একজন কোভিডরোগীর বাড়িতে ফোন করলে কী করণীয়, তা বুঝে নেওয়া আবশ্যিক।