Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Corona

Corona: কোভিডে ফুসফুসের কতটা ক্ষতি হবে? ভাইরাসের অণুর ত্রিমাত্রিক ছবি দেখাবে দিশা

আমেরিকার গবেষকেরা ক্রায়ো-ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের অণুর ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরি করেছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহিত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২১ ১২:৩৪
Share: Save:

ফুসফুসের চারপাশে যে প্রোটিনের স্তর ঘিরে থাকে, তার সঙ্গে করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন মিশে কী ধরনের প্রক্রিয়া তৈরি হয়, সেটা ভাল ভাবে বোঝার একটি উপায় বার করেছেন আমেরিকার একদল গবেষক। একটি ক্রায়ো-ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে ভাইরাসের প্রোটিনের অণুর ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরি করেছেন তাঁরা। যা ভাল ভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা সম্ভব ফুসফুসের কতটা ক্ষতি করতে পারবে এই ভাইরাস। ‘নেচার কমিউনিকেশন’ প্রত্রিকায় প্রকাশিত এই রিপোর্ট ভবিষ্যতে করোনার ওষুধ তৈরিতে সাহায্য করতে পারে। যাতে ফুসফুসের চরম ক্ষতি হওয়া আটকানো সম্ভব হয়।

ব্রুকহ্যাভেন ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির স্ট্রাকচারাল বায়োলজিস্ট ক্যুন লিউ এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘দু’ধরনের প্রোটিন কী ভাবে মিশে যাচ্ছে তাঁর অণুবিক চিত্র পরিষ্কার হলে বোঝা সম্ভব কেন করোনাভাইরাস ফুসফুসের জন্য এতটা ক্ষতিকর। এতে ওষুধ নির্মাতাদের সুবিধে হবে, যাতে এই ধরনের প্রক্রিয়াগুলো আটকানো যায়। যাঁদের শরীরে প্রথম থেকেই অন্য কোনও অসুবিধা রয়েছে, তাঁদের পক্ষে করোনার সঙ্গে লড়াই করার সুযোগ বেড়ে যাবে এর ফলে।’’

ভাইরাস প্রোটিনের মানচিত্র

মেমব্রেন প্রোটিন এবং ডায়নামিক প্রোটিন কমপ্লেক্স কী ভাবে মিশে যাচ্ছে, তা পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয় ক্রায়ো ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ। ‘‘এই প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা একটি ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করতে পেরেছি, ’’ বললেন লিউ।

সার্স-সিওভি-টু ভাইরাসের বাইরের দিকে থাকে একটা স্পাইক প্রোটিন। শরীরের যে কোষগুলো এই ভাইরাস আক্রমণ করে, স্পাইক প্রোটিনের সাহায্যে সেগুলোয় আরও নতুন ভাইরাস তৈরি করতে পারে করোনাভাইরাস। সেটা তৈরি করতে ভাইরাস মানুষের শরীরের প্রোটিনের সাহায্য নেয়। ফুসফুসের কোষগুলো একসঙ্গে জুড়ে রাখে যে প্রোটিন, সেগুলোই টেনে বার করে ভাইরাসের প্রোটিন নতুন ভাইরাস তৈরি করে বলে অনুমান করছেন বৈজ্ঞানিকরা। লিউ বুঝিয়ে বলেছেন, ‘‘এই ধরনের প্রক্রিয়া ভাইরাসের জন্য দারুণ। কিন্তু মানুষের শরীরে নানা রকম ক্ষতি হয়ে যায়। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে বা যাঁদের অন্য কোনও রোগ রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে।’’

ফুসফুসের কোষগুলো আলগা হয়ে গেলে, সেগুলো সারাতে রোগ প্রতিরোধর কোষ জেগে ওঠে। কিন্তু সেই সময় ‘সাইটোকাইন’ নামে এক ধরনের প্রোটিন তৈরি করে রোগ প্রতিরোধক কোষগুলি। অনেক সময় এই থেকেই শুরু হয় সাইটোকাইন ঝড়। এবং সেটাই মারাত্মক রূপ নেয় কোভিড রোগীদের মধ্যে। ফুসফুসের কোষ খুব দুর্বল হয়ে পড়লে ভাইরাস সহজেই ফুসফুস ছেড়ে রক্তের সঙ্গে মিশে শরীরের অন্য অঙ্গে আক্রমণ করতে পারে।

ভাইরাসের প্রোটিন এবং শরীরের প্রোটিন কী ভাবে মেলামেশা করছে তাঁর অণু-মাত্রিক ছবি তোলেন গবেষকেরা। খুব দ্রুত গতিতে অনেক সংখ্যায় ছবি তোলার পর সেগুলো ক্রায়ো-ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে পরীক্ষা করা হয়। এই ভাবে তৈরি হয় একটি ত্রিমাত্রিক ছবি। যা থেকে একেকটা অ্যামিনো অ্যাসিডের (অ্যামিনো অ্যাসিড থেকেই তৈরি হয় প্রোটিন) সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্য জোগাড় করা সম্ভব হয়। গবেষকেরা আশা করছেন, এই ত্রিমাত্রিক ছবি দেখে ওষুধ নির্মাতা করোনার সঙ্গে লড়াই করার নতুন ওষুধ তৈরি করতে পারবেন ভবিষ্যতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE