হৃদরোগ থেকে বাঁচতে নিজের জন্য অন্তত ৩০ মিনিট সময় রাখুন হাতে। ছবি: শাটারস্টক।
অনেকেই মনে করেন, হার্ট ভাল রাখতে গেলে সপ্তাহে পাঁচ দিন কম করে ৩০ মিনিট বা সব মিলিয়ে ১৫০ মিনিট মাঝারি মাপের এমন ব্যায়াম করতে হয়, যাতে হার্টরেট বাড়ে। যেমন, জোর কদমে হাঁটা, জগিং, সাঁতার, সাইকেল চালানো ইত্যাদি৷ এ বার হার্ট ভাল রাখতে আরও কিছু কৌশল ও উপায়ের কথা জানালেন গবেষকরা।
সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে জানা গেল এর পাশাপাশি দিনে মিনিট ২০ যোগা, প্রাণায়াম, ধ্যান করলে শুধু যে হার্ট ভাল থাকে তা নয়, যে যে কারণে ইসকিমিক হৃদরোগ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে— যেমন, ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেস্টেরল ইত্যাদিও নিয়ন্ত্রণে থাকে৷ বিভিন্ন গবেষণাপত্রে এর স্বপক্ষে যুক্তিও পাওয়া গিয়েছে৷
ইউরোপিয়ান জার্নাল অব কার্ডিওভ্যাসকুলার নার্সিং পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রবন্ধে গবেষকরা জানিয়েছেন, অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের রোগীরা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো সপ্তাহে মাত্র ৩০ মিনিট হালকা যোগা করলে ১২ সপ্তাহের মাথায় তাঁর হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ অনেক স্থিতিশীল হয়৷ মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়৷ উন্নত হয় জীবনযাপনের মান৷
আরও পড়ুন: সুগার-কোলেস্টেরল থাকলেই বাদ মাটির নীচের সব্জি?
যোগাসনেই কমবে হার্টের অসুখের প্রবণতা, দাবি গবেষণার।
ইসকিমিক হৃদরোগের এক বড় কারণ হল শুয়ে–বসে থাকা। গবেষকরা দেখেছেন সপ্তাহে অন্তত দিন দুয়েক যোগা করলেও দশ সপ্তাহের মধ্যে অধিকাংশ মানুষ আগের চেয়ে বেশি নিয়মনিষ্ঠ ও কর্মক্ষম হন৷ হৃদরোগের আশঙ্কা কমে৷ ‘অল্টারনেটিভ থেরাপিস ইন হেলথ অ্যান্ড মেডিসিন’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল এই প্রবন্ধ৷
এ ছাড়াও ‘আমেরিকান জার্নাল অব হাইপারটেনশন’-এ প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন মোটামুটি ৮ সপ্তাহ যোগা ও প্রাণায়ামের করার পরই উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ কমতে শুরু করে৷ শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানো ও মানসিক চাপ কমানোই এর অন্যতম কারণ৷ এই গবেষণার জন্য ৪০ জন হৃদরোগীকে যথাযথ চিকিৎসার পাশাপাশি ৮–১০ সপ্তাহের মধ্যে ১৬ বার যোগা করানো হয়। দেখা যায়, অন্যান্য উন্নতি হওয়ার পাশাপাশি তাঁদের শ্বাসকষ্ট প্রায় ২২ শতাংশ কমে গিয়েছে৷ ‘মেডিসিন অ্যান্ড সায়েন্স ইন স্পোর্টস অ্যান্ড এক্সারসাইজ’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই প্রবন্ধ৷
আরও পড়ুন: আপনি কি বেশি খুঁতখুঁতে? সাবধান না হলে কী বিপদ অপেক্ষা করছে জানেন?
হার্ট সুস্থ রাখতে প্রাণায়মের জুড়ি নেই।
জার্নাল অফ অ্যামেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধ থেকে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে যে এট্রিয়াল ফিব্রিলেশন নামে দ্রুত ও অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের যে মারাত্মক অসুখ আছে, যা থেকে যখন–তখন স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হতে পারে, তার প্রকোপও কম থাকে নিয়মিত যোগা করলে৷ যদিও এই তত্ত্বকে দৃঢ় ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করতে আরও গবেষণার দরকার, কিন্তু কিছুটা যে উন্নতি হয়, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মনে সন্দেহ নেই৷
৪৯ জন এট্রিয়াল ফিব্রিলেশনের রোগীকে যোগা করানোর পর দেখা যায় তাঁদের রক্তচাপ ও হার্টরেট খানিকটা কমেছে৷ ও বেশ কিছু দিন নিয়মিত করার পর বিপদের আশঙ্কা আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে৷
এই প্রসঙ্গে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ কুণাল সরকার জানিয়েছেন, ‘হৃদরোগ, মেদবাহুল্য, ডায়াবিটিস, মারাত্মক উচ্চ রক্তচাপ থাকলে যোগা শুরু করার আগে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞ যোগা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি৷ অন্য ক্রনিক অসুখ থাকলেও একই কথা৷ ব্যথা–বেদনা থাকলে যথাযোগ্য সাবধানতা না গিয়ে যোগা করলে ব্যথা বেড়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়তে পারেন৷’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy