দুধে ভেজাল মিশছে কি না তা পরখ করা যায় ঘরোয়া উপায়েই। ছবি: শাটারস্টক।
খাস কলকাতার বুকে ভেজাল দুধের রমরম করে চলছে ব্যবসা। কোথাও দুধে যোগ হচ্ছে ডিটারজেন্ট, কোথাও বা ক্ষতিকারক রাসায়নিকের প্রভাবে তার রং করে দেওয়া হচ্ছে সাদা। ভাগাড় কাণ্ডের আতঙ্ক এখনও ধুয়েমুছে সাফ হয়নি মানুষের মন থেকে। তার মধ্যেই দুধে ভেজাল নিয়ে ব্যতিব্যস্ত গৃহস্থ!
প্রচার, সচেতনতা, ধরপাকড়ের পরেও ভেজাল জুজু পিছু ছাড়ছে না মানুষের। গত বৃহস্পতিবার রাতে দুধে ভেজাল মেশানোর দায়ে হাতেনাতে ধরাও পড়েছে তিন জন। স্বভাবতই এ নিয়ে চিন্তিত গৃহস্থ, শিশু থেকে বৃদ্ধ— সকলেরই প্রয়োজন দুধ। রোগীর পথ্য হিসাবেও একে ধার্য করেন চিকিৎসকরা।
সুতরাং তাঁরাও পুরো বিষয়টিতে অত্যন্ত চিন্তায়। যে সব রাসায়নিক প্রতি দিন দুধে মিশছে— তাতে সাধারণ অসুখবিসুখের সঙ্গে প্রাণঘাতী রোগের হাত থেকেও নিস্তার পাওয়া দুষ্কর। ‘‘দুধে যে ধরনের ভেজাল মিশছে তাতে ইউরিয়া অন্যতম। এতে কিডনিতে ইউরিয়া বেড়ে গিয়ে কিডনি নষ্ট হতে পারে। শুধু ইউরিয়াই নয়, দুধে যে পরিমাণে কস্টিক সোডা মিশছে, তাতে খাদ্যনালীতে সংক্রমণ, গ্যাস্ট্রিকের প্রকোপ বেড়ে যাওয়া-সহ নানা অসুখ, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।’’ জানালেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামী।
আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় তৈরি হচ্ছিল ভেজাল দুধ! হাতেনাতে গ্রেফতার তিন জন
তাঁর মতকে সমর্থন করছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ গৌতম বরাটও। তাঁর মতে, এই ধরনের দুধ খেলে পুষ্টিগুণের তো প্রশ্নই নেই উল্টে লিভার খারাপ হওয়াও আশ্চর্যের নয়। ফর্মালিন মেশানোর খবরও কানে আসছে, এতে লিভার, হার্ট, কিডনি সবই খারাপ হতে পারে। এমনকি, এ সব বিষক্রিয়ায় ক্যানসারেও আক্রান্ত হতে পারেন যে কেউ।’’
সুতরাং আজই সাবধান হন। দুধে ভেজাল আটকাতে না পারলেও কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করলে দুধ খাঁটি কি না তা সহজেই বুঝে যাবেন। দেখে নিন সে সব ঘরোয়া উপায়।
আরও পড়ুন: কানে জল ঢুকে গিয়েছে? সহজেই কী ভাবে বার করবেন জানেন
একটু দুধ মাটিতে ঢালুন। যদি দেখেন গড়িয়ে গিয়ে মাটিতে সাদা দাগ রেখে যাচ্ছে, তা হলে এ দুধ খাঁটি। অশুদ্ধ হলে মাটিতে সাদা দাগ পড়বে না। দুধ গরম করতে গেলেই কি হলদেটে হয়ে যাচ্ছে? তা হলে এ দুধ খাঁটি নয়। এতে মিশেছে কার্বোহাইড্রেট। বাড়িতেই করে ফেলুন স্টার্চ টেস্ট। একটু দুধ পাত্রে নিয়ে তাতে ২ চা চামচ নুন মেশান। যদি নুনের সংস্পর্শে এসে দুধ নীলচে হয়, তা হলে বুঝবেন, এ দুধে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। দুধে ফর্মালিন রয়েছে কি না তা বুঝতে এর মধ্যে একটু সালফিউরিক অ্যাসিড মেশান। যদি নীল রং হয়, তবে ফর্মালিন আছে। দুধে ইউরিয়া মেশানো আছে কি না তা ঘরোয়া উপায়ে নির্ণয় একটু কঠিন। তবে একান্তই বুঝতে চাইলে এক চামচ দুধে সয়াবিন পাউডার মেশান। কিছু ক্ষণ রেখে এতে লিটমাস পেপার রাখুন। যদি লিটমাস ডোবাতেই লাল লিটমান নীল হয়, তবে বুঝবেন ইউরিয়া রয়েছে সেই দুধে। দুধের সমান জল মেশান একটি শিশিতে। এ বার শিশির মুখ বন্ধ করে জোরে ঝাঁকান। অস্বাভাবিক ফেনা হলেই বুঝবেন, দুধে মেশানো আছে ডিটারজেন্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy