—প্রতীকী চিত্র।
ছেলেবেলার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে চকোলেট। জন্মদিন বা কোনও বার্ষিকীর উপহার হিসেবেই হোক বা প্রেম নিবেদনের জন্য চকোলেটের চেয়ে ভাল কোনও উপহার বোধহয় আর কিছুই হতে পারে না।
সেই চকোলেট নাকি চির দিনের জন্য হারিয়ে যেতে চলেছে!
সম্প্রতি নেট দুনিয়ায় এমনই একটি খবর ঘোরাফেরা করছে। যে খবরে দাবি করা হয়েছে, উষ্ণায়নের জন্য নাকি পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হতে চলেছে কোকো।
সত্যিই কি তাই?
আমরা প্রায় সকলেই জানি, কোকো থেকেই বানানো হয় চকোলেট। অন্যান্য শস্যের মতো কোকো চাষের জন্যেও বিশেষ ধরনের আবহাওয়ার প্রয়োজন। ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কোকো চাষের পক্ষে আদর্শ। তার সঙ্গে প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিও। আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকাতেই কোকোর চাষ হয় সবচেয়ে বেশি।
নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হওয়া খবরের দাবি, উষ্ণায়নের ফলে বিশ্বের আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। খুব দ্রুত বেড়ে চলেছে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রাও। ফলে, যে সব জায়গায় এখন কোকো চাষ হয়, তাপমাত্রা বাড়লে সেই অঞ্চলগুলিতে কোকো চাষ করা আর সম্ভব হবে না।
কিন্তু এই তথ্য একেবারেই সঠিক নয়।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজের খোসা থেকে বিদ্যুৎ, গবেষণা আইআইটি-তে
সান্তা ক্রুজের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশতন্ত্র এবং বিবর্তন সংক্রান্ত জীববিদ্যার অধ্যাপক ইনগ্রিড পার্কারের মতে, উষ্ণায়নের জন্য পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বাড়লে কোনও একটি অঞ্চল যেমন কোকো চাষের পক্ষে অনুপযুক্ত হয়ে পড়ছে, তেমনই পৃথিবীর অন্য কোনও অঞ্চলের তাপমাত্রা কোকো চাষের ক্ষেত্রে অনুকূল হয়ে উঠছে। অর্থ্যাৎ, উষ্ণায়নের ফলে কোকোর উৎপাদন মানচিত্র হয়তো বদলে যেতে পারে। উৎপাদন-মূল্যেরও হয়ত খানিকটা হেরফের ঘটবে। কিন্তু কোকো কখনওই পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে না।
নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়া খবরে আরও দাবি করা হয়েছে, আগামী ৪০ বছরে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা আর ২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লেই কোকো চাষ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।
আরও পড়ুন: টাক নিয়ে আর চিন্তা নেই, সমাধানের আশ্বাস বিজ্ঞানীদের
বাস্তবের ছবিটা কিন্তু আরও ভয়ঙ্কর। তাপমাত্রা ২.১ ডিগ্রি বাড়লে গোটা পৃথিবীটাই প্লাবিত হয়ে যাবে। ধ্বংস হয়ে যাবে প্রাণীকূল। তাই সে ক্ষেত্রে শুধু কোকো চাষ বাঁচিয়ে রাখার চিন্তাটাই অবান্তর! বিশ্বের তাবড় পরিবেশ বিজ্ঞানীরা তাই পৃথিবীর তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে বেঁধে রাখার পথ খুঁজে চলেছেন নিরন্তর।
দূষণ এবং তার সঙ্গে উষ্ণায়ন রুখতে বিশ্বের পরিবেশ বিজ্ঞানীরা দিন-রাত গবেষণা করে চলেছেন।
তবে বিশ্বের কোটি কোটি চকোলেটপ্রেমীর এখনই দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই।
(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় আমাদের প্রতিবেদকও নানান ওয়েব নিউজ সাইটে প্রকাশিত ‘৪০ বছরের মধ্যে কোকো বিলুপ্ত হবে’—এই ভুল তথ্যে প্রভাবিত হয়েছিলেন। পরে এই ভুল সংশোধন করা হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy