মুহূর্তে মুহূর্তে ভোল বদল, এই বায়না থেকে সেই বায়না সামাল দিতে দিতে প্রত্যেকেই কখনও না কখনও নাজেহাল হয়েছেন।
শিশুদের সামলানো যে মোটেই সহজ কাজ নয়, তা বোধ হয় সব মা-বাবাই স্বীকার করবেন। বিশেষ করে যাঁরা সদ্য অভিভাবক হয়েছেন, তাঁরা তো বলবেনই। মুহূর্তে মুহূর্তে ভোল বদল, এই বায়না থেকে সেই বায়না সামাল দিতে দিতে প্রত্যেকেই কখনও না কখনও নাজেহাল হয়েছেন। সঙ্গে আবদার পূরণে ব্যর্থ হলে পাড়া জাগিয়ে দেওয়ার মতো তারস্বরে চিৎকার তো রয়েছেই।
এ সবই শিশুদের জটিল মনস্তত্ত্বের প্রকাশ। এই মনস্তত্ত্ব নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে। বলা বাহুল্য এখনও তা চর্চা ও গবেষণার বিষয়। নিজের সন্তান কী চাইছে, তা সামান্য হলেও বোঝার চেষ্টা করলে সে বড়সড় কোনও ঝামেলা পাকানোর আগেই তাকে নিরস্ত করা যেতে পারে। কোন কোন দিকে খেয়াল রাখলে সন্তান-পালন হয়ে উঠবে সহজ, বোঝামুক্ত?
১) শিশুদের ভাষা বুঝতে যেমন বড়দের কষ্ট হয়, তেমনই বড়দের নির্দেশ বুঝতেও সমস্যা হয় শিশুর। প্রাথমিক কিছু শব্দ বলতে শেখার আগে তাদের ভাব বিনিময়ের জন্য নির্ভর করতে হয় কিছু বিশেষ অঙ্গভঙ্গীর উপরে। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই শিশুর চাহিদা বুঝতে ব্যর্থ হন মা-বাবা। তখনই শুরু হয় কান্না, চিৎকার। অর্থাৎ, এই চিল-চিৎকারের মারফত আসলে সে জানান দিতে চাইছে নিজের চাহিদা। এইটা বোঝা হল অভিভাবকত্বের প্রথম ধাপ।
২) নিজের সন্তানের বিশেষ নজর দিন। তাকে সময় দিন। সে আপনার সঙ্গ চায়। তার কথা মন দিয়ে শোনার, বোঝার চেষ্টা করুন। সময় কাটালেই শিশুদের মনের ভাষার অনেকটা পরিচয় পাওয়া যায়। ফলে বড় কোনও সমস্যা সৃষ্টির আগেই বুঝে ফেলা যাবে তার চাহিদা।
৩) সে যা চাইছে, তার উত্তরে সঙ্গে সঙ্গে ‘হ্যাঁ’ বলে দেওয়া যেমন উচিত নয়, তেমনই সঙ্গে সঙ্গে তা বাতিল করে দেওয়াও ঠিক নয়। বরং সে কী চাইছে, তা সময় নিয়ে শুনুন। তার চাহিদার ভাল দিক এবং খারাপ দিক, উভয়ই বিচার করুন। চটজলদি সিদ্ধান্ত নেবেন না।
৪) চাইলেই হাতের কাছে সব পেয়ে গেলে সন্তান কোনও দিনই প্রয়োজন ও বিলাসিতার পার্থক্য বুঝতে শিখবে না। তার মনে হবে চাইলেই সব পাওয়া যায়। এ হেন মানসিকতা তার বিকাশের পক্ষেই খুব ক্ষতিকারক। তাই শিশুকে শেখাতে হবে প্রয়োজন ও বিলাসিতার মধ্যে পার্থক্য করতে।
৫) আপনি নিজেই সব সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবেন না। সন্তানকেও কিছু ক্ষেত্রে নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিন। কিছুটা জায়গা তারও প্রাপ্য।
৬) খিদে পেলে মানুষ বদলে যায়। পেটে খাবার পড়লেই আবার সে ফিরে পায় স্বমহিমা। এই অমোঘ সত্য উঠে এসেছে চকোলেটের বিজ্ঞাপনেও। আর শিশুর ক্ষেত্রে এই সত্য খাটবে না? সন্তানকে সময় মতো খেতে দিন, তাহলেই অনেক সমস্যা মিটে যাবে। খালি পেট অনেক সমস্যার মূল।
৭) খাওয়ার মতো চাই ঠিক ঠাক মতো পর্যাপ্ত ঘুমও। ঘুম বা বিশ্রাম কম হলে জন্মায় রাগ, বিরক্তি।
৮) এত কিছুর পরেও যদি ফল না মেলে, অশান্তির সৃষ্টির সময়ে অন্য দিকে নজর ঘুরিয়ে দিন। শিশু অন্যমনস্ক হয়ে গেলে সহজেই কাটাতে পারবেন বড় ঝামেলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy