বৃদ্ধের নাম রেজিনাল্ড পাই, বৃদ্ধার নাম হুগেত জোফ্রোয়া। ছবি: ইউটিউব থেকে।
প্যালেস্তাইনের কবি মহম্মদ দারভিশের একটি কবিতা রয়েছে, “আমাদের কবে দেখা হবে? এ যুদ্ধের শেষে।/ এ যুদ্ধ কবে শেষ হবে? যে দিন আমাদের দেখা হবে।” এই কাহিনি মনে করিয়ে দিতে পারে সেই কবিতা। বিশ্বযুদ্ধের সময় আলাপ, যুদ্ধেই বিচ্ছেদ। কিন্তু তার পরেও ৭৮ বছর ধরে এক সৈনিক নিজের ওয়ালেটে রেখে দিয়েছিলেন এক নারীর ছবি। ৯৯ বছর বয়সে পৌঁছে ফের তাঁর দেখা পেলেন বৃদ্ধ! বৃদ্ধার বয়স এখন ৯২।
বৃদ্ধের নাম রেজিনাল্ড পাই, বৃদ্ধার নাম হুগেত জোফ্রোয়া। ১৯৪৪ সালে ব্রিটেনের রয়্যাল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগে ২২৪ ফিল্ড কোম্পানির হয়ে নর্ম্যান্ডির যুদ্ধে গিয়েছিলেন রেজিনাল্ড। তখন তাঁর বয়স ২১। ওই সময়েই নর্ম্যান্ডিতে বেড়াতে গিয়েছিলেন ফ্রান্সের বাসিন্দা ১৪ বছরের হুগেত। ঘুরতে ঘুরতে কিশোরী হুগেতের প্রবল খিদে পেয়ে যায়। তখনই তাঁর সঙ্গে দেখা হয় রেজিনাল্ডের। নিজের স্যান্ডউইচ হুগেতকে খেতে দেন রেজিনাল্ড। খাওয়ার পর সেই খাবারের কৌটোতে নিজের একটি ছবি ভরে রেজিনাল্ডকে ফেরত দেন কিশোরী। তার পর সেনাবাহিনীর সঙ্গে সেই জায়গা ছেড়ে চলে যেতে হয় রেজিনাল্ডকে। আর দেখাও হয়নি হুগেতের সঙ্গে। কিন্তু তাঁর দেওয়া সেই ছবি নিজের কাছে রেখে দেন রেজিনাল্ড।
তার পর কেটে গিয়েছে ৭ দশকেরও বেশি সময়। রেজিনাল্ড পরে একাধিক বার খোঁজ করেছিলেন বটে, কিন্তু খোঁজ পাননি হুগেতের। তবু সেই ছবি নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। চলতি বছরের জুন মাসে প্রাক্তন সেনাকর্মীর এই কাহিনি শুনতে পান এক ট্যাক্সিচালক। তিনিই নিজ উদ্যোগে সংবাদমাধ্যমে জানান বিষয়টি। সেই ছবিটি-সহ যুদ্ধের সময় আলাপ হওয়া রেজিনাল্ড ও হুগেতের খবর প্রকাশিত হয় সংবাদপত্রে। আর তাতেই বদলে যায় সব কিছু। সংবাদমাধ্যমে মায়ের ছবিটি দেখতে পান হুগেতের কন্যা। তিনিই যোগাযোগ করে খুঁজে বার করেন রেজিনাল্ডকে। অবশেষে চলতি মাসে ফ্রান্সে আসেন ৯৯-তে পা দেওয়া প্রাক্তন সেনাকর্মী। সেখানেই হুগেতের সঙ্গে দেখা হল তাঁর।
এত বছর পর দেখা হওয়ার পর কী করলেন তাঁরা? প্রথম বার দেখা হওয়ার সময় যে জিনিসটি দিয়েছিলেন, এ বারও সেই স্যান্ডউইচই হুগেতের হাতে দেন রেজিনাল্ড। দুই নবতিপরের দেখা হওয়ায়, খুশি তাঁদের পরিবারও। হুগেত জানান, রেজিনাল্ডের থেকে বিয়ের প্রস্তাব পেলে আপত্তি নেই তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy