ফাইল চিত্র।
প্রশ্ন: সাপে কাটার ঘটনা সাধারণত বছরের কোন সময় বেশি ঘটে?
চিকিৎসক: সাপে কাটার ঘটনা গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে সব থেকে বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে বর্ষাকালে। সাধারণত মে থেকে অক্টোবর মাসে বৃষ্টি বেশি হয়। পুকুর তো বটেই, সমস্ত নিচু জমিতে জল জমে যায়। সাপ সচরাচর জলে থাকতে চায় না। শুকনো জায়গায় উঠে আসে। এই সময় চাষ গতি পায়। মাছ ধরার জন্যও বাসিন্দারা জলাশয়ের দিকে যান। জলাজমি সংলগ্ন উঁচু জায়গাতেই সাপ থাকে। ফলে সাপের ছোবলের মতো ঘটনা ঘটে।
সাপের কামড়ের হাত থেকে বাঁচতে কি করণীয়?
উ: সাপ সাধারণত রাতে চলাচল করে। তাই রাতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সব সময় আলো ব্যবহার করা উচিত। সব সময়ে টর্চ নিয়ে বার হওয়া ভাল। সব দিক দেখে পা ফেলতে হবে। খালি পায়ে মাঠে যাওয়া তো ঠিক নয়। এই সময় অনেকেই মাছ ধরতে খালি পায়ে মাঠে যান। গ্রামের মানুষদের অনেকে আবার শৌচকর্ম সারতেও মাঠে যান। এ সব থেকে বিরত থাকতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় মানুষের ঘামের টানে সাপ ঘরের ভিতরে, বিছানার উপরেও উঠে যায়। সে জন্য ঘর সব সময় সাফ রাখতে হবে। ঘরের ভিতরে কোথাও আবর্জনা জমিয়ে রাখা যাবে না। অন্ধকার অংশ ভাল করে খেয়াল করে তবেই সেখানে হাত দিতে হবে। সেই সঙ্গে বিছানা ভাল করে সাফ করে মশারি টাঙিয়ে রাতে ঘুমোতে হবে।
সাপের কামড়ের পর কি করণীয়?
উ: সাপের কামড়ে প্রাথমিক ভাবে আমরা ন্যাশনাল প্রোটোকল-২০০৭ অনুসরণ করে থাকি। এই প্রোটোকলের মূল উদ্দেশ্য হল, কোনও জটিল সমস্যা দেখা দেওয়ার আগেই রোগীকে দ্রুত নিকটবর্তী কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। রোগীকে কোনও ভাবেই হাঁটতে দেওয়া যাবে না। বিশেষ করে যদি পায়ে সাপ ছোবল দেয়। তাঁকে যে কোনও ধরনের গাড়িতে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। রোগীর মনোবল বাড়াতে তাঁকে সাহস দিতে হবে। কোনও ভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়লে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গয়েছে, প্রায় ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে অবিষধর সাপের দ্বারা সর্পদংশনের ঘটনা ঘটে। বিষধর সাপ দংশনের সময় বিষ প্রয়োগ করে। সে ক্ষেত্রে অনেক সময়ই রোগী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েও মারা যেতে পারেন। যে জায়গায় সাপ ছোবল দেবে সেই অংশ স্থির রাখতে হবে। ক্রেপ ব্যান্ডেজ বা হাল্কা কাপড় দিয়ে ভাল করে বাঁধা যেতে পারে। ঠিক যে ভাবে হাত-পা ভেঙে গেলে ওই অংশ স্থির করা হয়। পিঠে বা পায়ে কামড়ালে রোগীকে শুইয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তখন যে সব উপসর্গ দেখা দেবে যেমন চোখের পাতা পড়ে যাওয়া, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া ওই বিষয়গুলি চিকিৎসককে জানাতে হবে।
সাক্ষাৎকার: নমিতেশ ঘোষ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy