ধোঁয়া নয়, আদতে জীবন খেয়ে নিচ্ছেন রোজ। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
মার্ক টোয়েন বলেছিলেন, ‘সিগারেট ছাড়া খুব সহজ। আমি কত বার ছেড়েছি!’ ঊনবিংশ শতকে বলে যাওয়া তাঁর এই মজার শব্দবন্ধকে নিয়ে হাসি-মশকরা আজও ফিকে হয়নি। ধূমপান যে স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক, এ কথা কারই বা অজানা! এর ক্ষতিকারক প্রভাবের কথা তো প্রচারও হয় নানা ভাবেই। এমনকি, সিগারেটের প্যাকেটেও বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ ছাপা থাকে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। এত কিছু প্রচারে আসার পরেও ধূমপায়ীরা সচেতন নন। বেশির ভাগই সব ক্ষতি জেনেও নাচার! ‘ছাড়তে আর পারি কই’-এর অসহায়তাই সেখানে মুখ্য হয়ে ওঠে।
যদিও চিকিৎসক ও মনোবিদদের পরামর্শ— সিগারেট ছাড়তে হবে, এমন ইচ্ছাটাই বড়। মনের জোরই পারে যে কোনও নেশা থেকে মুক্তি দিতে। এর আর কোনও বিকল্প হয় না। তবে, সিগারেট ছাড়ার পর যে অস্থিরতা শরীরে ও মনে আসে তাকে কব্জা করতে খাদ্যাভ্যাসে কিছু বদল আনার কথা জানালেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ গৌতম গুপ্ত।
ধূমপান ছেড়ে ‘নিকোটিন উইথড্রয়াল সিম্পটম’-এ আক্রান্ত হলে এই সব খাবার আপনাকে সাহায্য করবে সিগারেটের প্রতি তীব্র টান থেকে মুক্তি পেতে।
আরও পড়ুন: সন্তানের চোখে চশমা? সুস্থ রাখতে মেনে চলুন এ সব
মৌরি: দিনের কোন সময়ে সিগারেট খেতেন, তা খেয়াল করুন। এ বার সেই সময়টা সিগারেটের বদলে মুখে ফেলে রাখুন কয়েক দানা মৌরি। অনেকেই মনে করেন, সিগারেট ছাড়লেই মৌরি বা মশলাকে আঁকড়ে ধরতে হবে! এমন ভুল করবেন না। মৌরি রাখুন সঙ্গে। তবে তার ব্যবহারও করুন খুব নিয়ন্ত্রণ রেখে। কারণ, যে কোনও মশলাও স্নায়ুকে উদ্দীপ্ত করে সেই মশলার প্রতি আসক্ত করে তুলতে পারে। আর কোনও আসক্তিই শরীরের জন্য ঠিক নয়।
চিউইং গাম: নিকোটিনের আসক্তিকে কমিয়ে দেয় মিন্ট। তাই পকেটে রাখুন মিন্ট জাতীয় চিউইং গাম। বাজারচলতি প্রচুর নিকোটিন গাম মেলে, ধোঁয়া এড়িয়ে কার্বন মনোক্সাইডের ক্ষতিকারক দিক সরাতে অনেকেই এগুলোর শরণ নেন। কিন্তু সে সবও শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। তার চেয়ে নিয়ন্ত্রণ রেখে ব্যবহার করুন স্বাভাবিক মিন্ট চিউইং গাম।
জল: ধূমপান পরবর্তী সময়ে ফের নেশার টান কমাতে জল অত্যন্ত উপকারী। শরীরের প্রয়োজন বুঝে সঠিক পরিমাণ জল খান এই সময়। জল শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বজায় রাখে। শরীরকে আর্দ্র রাখে। ফলে সিগারেট ছাড়ার পরের অবস্থায় যে অস্থিরতা তা অনেকটাই কমিয়ে ফেলতে পারে। বরং ক্যাফিন যুক্ত তরল, যেমন চা-কফি এ সব এড়িয়ে চলুন। এতে শরীরে জলের চাহিদা বাড়ে। শরীর শুষ্ক হলে স্নায়ু ও পেশিরা ক্লান্ত হয় ও ফের সিগারেট খাওয়ার ঝোঁক তৈরি হয়।
টক জাতীয় ফল ও ড্রাই ফ্রুটস: এই সব ফলে প্রচুর ভিটামিন সি আছে। কমলালেবু, পাতিলেবুর অ্যান্টি টক্সিন ক্ষমতা শরীরকে সুস্থ রাখে, নিকোটিনের কু-প্রভাব কমায়। এ ছাড়া ড্রাই ফ্রুটসে ক্যালোরি বেশি থাকায় শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ফলে, ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পরের পরিস্থিতি সামলাতে সাহায্য করে।
তবে এ সব খাবার খাদ্যতালিকায় যোগ করার পাশাপাশি ধূমপান ছাড়ার পর অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন। প্রয়োজনে মনোবিদদেরও সাহায্য নিন। অনেক সময় চিকিৎসকরা নিকোটিনের নেশা কাটানোর জন্য কিছু চিকিৎসা প্রক্রিয়ার কথা জানান। দরকারে সে সবেও অংশ নিন। সিগারেট ছাড়ুন, সুস্থ থাকুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy