Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রাতে ঘুম হয় না? তা হলে আপনি ‘ট্রাম্প অ্যাংজ়াইটি ডিজ়অর্ডারে’ ভুগছেন

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৮ ০১:৩৬
Share: Save:

দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না? ছোট-বড় নানা চিন্তা মাথায় ভিড় করে? উদ্বেগে বুক ধড়ফড় করে? মার্কিন মনোরোগ বিশেষজ্ঞেরা বলবেন, আপনি তা হলে ‘ট্রাম্প অ্যাংজ়াইটি ডিজ়অর্ডারে’ ভুগছেন।

মাত্রাতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার ঘটনা আমেরিকায় নতুন নয়। মনোবিদ বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে যাঁরা নিয়মিত যান, তাঁদের একটা বড় অংশই দুশ্চিন্তা-রোগে ভুগছেন। কিন্তু সেই রোগকে হঠাৎ প্রেসিডেন্টের নাম দেওয়া কেন?

‘ট্রাম্প অ্যাংজ়াইটি ডিজ়অর্ডার’ শব্দবন্ধটি তৈরি করেছেন মার্কিন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জেনিফার প্যানিং। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল এবং ইয়েল স্কুল অব মেডিসিনের যৌথ প্রকাশনায় সম্প্রতি বেরিয়েছে তাঁর লেখা ‘দ্য ডেঞ্জারাস কেস অব ডোনাল্ড ট্রাম্প’। এই বইটিতেই শব্দবন্ধটি প্রথম ব্যবহার করেন প্যানিং। পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ হারানো, যে কোনও পরিস্থিতিতে অসহায় লাগা, সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যধিক সময় কাটানো এই রোগের প্রধান কয়েকটি লক্ষণ। সাধারণ মানুষের মনে প্রেসিডেন্টের যে ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে, তা-ই এই রোগের উৎপত্তির কারণ হিসেবে ধরছেন মনোবিদেরা।

ওয়াশিংটনের ‘কাউন্সেলিং অ্যান্ড ফিজ়িওথেরাপি সেন্টারের’ মনোবিদ এলিজ়াবেথ লামোট জানাচ্ছেন, এই বিশেষ ধরনের দুশ্চিন্তা-রোগ আর পাঁচটা রোগের থেকে আলাদা। বিশেষ রাজনৈতিক পরিবেশেই এই রোগের উৎপত্তি। তাঁর দাবি, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এই রোগের প্রকোপ অনেক বেড়ে গিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হামেশাই হুমকি দেন, ‘মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল তুলে দেব’, ‘ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাব’ বা আরও এক ধাপ এগিয়ে, ‘পরমাণু বোমা ছুড়ব’। এই ধরনের হুমকি সাধারণ মানুষের মনে ভয় ও সংশয় তৈরি করে। যাঁরা এই রোগে ভোগেন তাঁরা ভাবেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা তাঁদের জীবনকে বিষময় করে তুলেছে। আর যাঁরা এই রোগে বেশি মাত্রায় কাবু তাঁরা ভেবে বসেন— পৃথিবী ধ্বংসের মুখে।

মনোবিদরা বলছেন, এই রোগে আক্রান্তরা শুধু ট্রাম্প-বিরোধী নন। বহু ট্রাম্প-সমর্থক, যাঁরা ২০১৬-তে রিপাবলিকান প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছিলেন, তাঁরাও এই রোগের কবলে পড়ছেন। মনোবিদদের মতে, যখন এই রিপাবলিকানপন্থীরা ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁরা আশা করেছিলেন, দেশে স্থিতাবস্থা ও রাজনৈতিক সুস্থিতি বজায় থাকবে। কিন্তু ট্রাম্প আসা ইস্তক নানাবিধ বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছেন। তিনি কখন, কাকে, কী বলে বসেন, তার কোনও নিশ্চয়তাই নেই। রিপাবলিকান দলের প্রাক্তন কংগ্রেস সদস্য জো স্কারবোরো-র কথায়, ‘‘অনেকেরই দুশ্চিন্তা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ না বাঁধিয়ে বসেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প!’’

ট্রাম্প-পন্থী টিভি সাংবাদিক গ্রেগ গাটফেল্ডের অবশ্য দাবি, মার্কিন সংবাদমাধ্যমের একটা বড় অংশ ট্রাম্প সম্পর্কে সমানে নেতিবাচক খবর পরিবেশন করে। এরই কুপ্রভাব পড়ে জনমানসে। গতকালই সংবাদমাধ্যমের একাংশকে দুষে প্রেসিডেন্ট টুইট করেছিলেন, ‘‘যথেষ্ট ইতিবাচক কাজ করলেও আমার প্রশাসন নিয়ে ৯০ শতাংশ সংবাদমাধ্যম নেতিবাচক খবরই করে।’’ তার পরেই অন্য আর এক টুইটে ডেমোক্র্যাটদের হুমকি দিয়ে বলেন, ‘‘আমার নীতির বিরোধিতা করলে সরকারই বন্ধ করে দেব।’’

‘‘এই ধরনের টুইট-বোমাই তো মানুষের রক্তচাপ বাড়িয়ে আমাদের চেম্বারে পাঠিয়ে দেয়,’’ মন্তব্য চিকিৎসক লামোটের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Donald Trump U.S. President Trump Anxiety Disorder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE