Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Hare Krishna

‘১১৭৬ হরে কৃষ্ণ’ লিখলেই নাকি ভাগ্য ফিরবে! এই সংখ্যার পিছনে রহস্য কী

‘১১৭৬ হরে কৃষ্ণ’, সমাজমাধ্যমে এখন ভাইরাল এই তিনটি শব্দ। নেটাগরিকদের একাংশের দাবি, ওই শব্দটি বারবার লিখলেই নাকি ভাগ্য ফিরে যাবে।

জেনে নিন ১১৭৬ সংখ্যার পিছনে কী রয়েছে।

জেনে নিন ১১৭৬ সংখ্যার পিছনে কী রয়েছে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২২ ১৩:৩৪
Share: Save:

‘১১৭৬ হরে কৃষ্ণ’, সমাজমাধ্যমে এখন ভাইরাল এই তিনটি শব্দ। নেটাগরিকদের একাংশের দাবি, ওই শব্দটি বারবার লিখলেই নাকি ভাগ্য ফিরে যাবে। সব দুঃখ, সঙ্কট থেকে রক্ষা করবে ‘১১৭৬’ সংখ্যাটি। সনাতন ধর্মে বিশেষ করে বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের কাছে 'হরে কৃষ্ণ' খুবই পবিত্র শব্দ বন্ধ। ঈশ্বর সাধনার মন্ত্র। কিন্তু ‘১১৭৬’ কতটা ধার্মিক, কতটা বৈজ্ঞানিক!

সেই সব প্রশ্ন উঠলেও একদল নেটাগরিক দিন দিন ‘১১৭৬ হরে কৃষ্ণ’-কে ভাইরাল করে চলেছেন। কেউ কেউ দাবি করছেন, এটি একটি বিশেষ মন্ত্র, যা সৌভাগ্য এনে দিতে পারে। ব্যাপারটিতে বিশ্বাসীও অনেকে। অনেকে আবার না বুঝেও এই লাইনটি লিখে চলেছেন সমাজ মাধ্যমে। অনেকে আবার টেনে আনছেন বেদ, বেদান্ত, পুরাণ, উপনিষদের প্রসঙ্গ। অর্থাৎ বিষয়টি নিয়ে নানা মুনির নানা মত। নেট মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে অনেকের দাবি ‘১১৭৬’ একটি অ্যাঞ্জেল সংখ্যা। এটা লিখতে থাকলে দীর্ঘ অপেক্ষারও দরকার নেই। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সৌভাগ্য দরজায় কড়া নাড়বে।

কিন্তু শাস্ত্র কী বলছে? আনন্দবাজার অনলাইনের পক্ষে যোগাযোগ করা হয়েছিল বিশিষ্ট শাস্ত্রকার নবকুমার ভট্টাচার্যের সঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গ বৈদিক অ্যাকাডেমির সম্পাদক নবকুমার বলেন, ‘‘অনেক শাস্ত্র এই জীবনে অধ্যয়ন করেছি কিন্তু ১১৭৬ হরে কৃষ্ণ এমন কিছু পাইনি। আমিও ফেসবুকে দেখেছি সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে ১১৭৬ হরে কৃষ্ণ লিখে চলেছেন। কিন্তু ওই সংখ্যার সম্পর্কে আমার কোনও ধারণা নেই। বৈষ্ণব সাহিত্যে তো বটেই হিন্দু ধর্মের অন্য কোথায় আলাদ করে ১১, ৭, বা ৬ সংখ্যার বিশেষ মাহাত্ম্যর কথা পাইনি।’’ নবকুমার জানান হিন্দুশাস্ত্রে ১১-র সংখ্যে সাযুজ্য রেখে একাদশ রুদ্রের উল্লেখ রয়েছে। প্রাণ (নিঃশ্বাস), অপান (প্রশ্বাস), ব্যান, সমান, উদাম, নাগ, কুর্ম্ম, কৃকল, দেবদত্ত, ধনঞ্জয় এবং জীবাত্মা। নবকুমারের সংযোজন, ‘‘৭৬ বলতে আমার মন্বন্তরের কথা মনে পড়ে। এ ছাড়া আলাদা আলাদা করলে সাতে সমুদ্র আর ছয়ে ঋতু।’’

হিন্দু ধর্মে অবশ্য ‘১০৮’ সংখ্যাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুর্গাপুজোয় ১০৮ প্রদীপ জ্বালানো বা ১০৮টি লালপদ্ম নিবেদনের রীতি রয়েছে। জপ করার ক্ষেত্রেও ১০৮ বারকে মান্যতা দেওয়া হয়। এই ১০৮ কেন? এর উত্তরে নবকুমার যে হিসেব দিয়েছেন তা হল, একজন সুস্থ মানুষ সারা দিন গড়ে ২১ হাজার ৬০০ বার প্রশ্বাস নেয় এবং নিশ্বাস ছাড়ে। এই ২১ হাজার ৬০০-কে ১০০ দিয়ে ভাগ করলে হয় ২১৬। এটাকে আবার ২ দিয়ে ভাগ করলে হয় ১০৮। এই সংক্রান্ত একটি কাহিনিও বলেন নবকুমার। তাঁর কথায়, ‘‘মেধসমুনি বৈশ্য সমাধিকে দু’বেলা ১০৮ বার করে দুর্গামন্ত্র জপ করতে বলেছিলেন। সমাধি সেই জপকে ক্রমে ২০০ গুণ বাড়িয়ে ২১ হাজার ৬০০-তে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তাঁর ব্রহ্মজ্ঞান লাভ হয়েছিল। সুরথ রাজা দুর্গার আরাধনা করে রাজত্ব পেয়েছিলেন আর বৈশ্য সমাধির মোক্ষ লাভ হয়েছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hare Krishna Facebook Viral Trend luck
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE