‘১১৭৬ হরে কৃষ্ণ’, সমাজমাধ্যমে এখন ভাইরাল এই তিনটি শব্দ। নেটাগরিকদের একাংশের দাবি, ওই শব্দটি বারবার লিখলেই নাকি ভাগ্য ফিরে যাবে। সব দুঃখ, সঙ্কট থেকে রক্ষা করবে ‘১১৭৬’ সংখ্যাটি। সনাতন ধর্মে বিশেষ করে বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের কাছে 'হরে কৃষ্ণ' খুবই পবিত্র শব্দ বন্ধ। ঈশ্বর সাধনার মন্ত্র। কিন্তু ‘১১৭৬’ কতটা ধার্মিক, কতটা বৈজ্ঞানিক!
সেই সব প্রশ্ন উঠলেও একদল নেটাগরিক দিন দিন ‘১১৭৬ হরে কৃষ্ণ’-কে ভাইরাল করে চলেছেন। কেউ কেউ দাবি করছেন, এটি একটি বিশেষ মন্ত্র, যা সৌভাগ্য এনে দিতে পারে। ব্যাপারটিতে বিশ্বাসীও অনেকে। অনেকে আবার না বুঝেও এই লাইনটি লিখে চলেছেন সমাজ মাধ্যমে। অনেকে আবার টেনে আনছেন বেদ, বেদান্ত, পুরাণ, উপনিষদের প্রসঙ্গ। অর্থাৎ বিষয়টি নিয়ে নানা মুনির নানা মত। নেট মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে অনেকের দাবি ‘১১৭৬’ একটি অ্যাঞ্জেল সংখ্যা। এটা লিখতে থাকলে দীর্ঘ অপেক্ষারও দরকার নেই। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সৌভাগ্য দরজায় কড়া নাড়বে।
কিন্তু শাস্ত্র কী বলছে? আনন্দবাজার অনলাইনের পক্ষে যোগাযোগ করা হয়েছিল বিশিষ্ট শাস্ত্রকার নবকুমার ভট্টাচার্যের সঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গ বৈদিক অ্যাকাডেমির সম্পাদক নবকুমার বলেন, ‘‘অনেক শাস্ত্র এই জীবনে অধ্যয়ন করেছি কিন্তু ১১৭৬ হরে কৃষ্ণ এমন কিছু পাইনি। আমিও ফেসবুকে দেখেছি সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে ১১৭৬ হরে কৃষ্ণ লিখে চলেছেন। কিন্তু ওই সংখ্যার সম্পর্কে আমার কোনও ধারণা নেই। বৈষ্ণব সাহিত্যে তো বটেই হিন্দু ধর্মের অন্য কোথায় আলাদ করে ১১, ৭, বা ৬ সংখ্যার বিশেষ মাহাত্ম্যর কথা পাইনি।’’ নবকুমার জানান হিন্দুশাস্ত্রে ১১-র সংখ্যে সাযুজ্য রেখে একাদশ রুদ্রের উল্লেখ রয়েছে। প্রাণ (নিঃশ্বাস), অপান (প্রশ্বাস), ব্যান, সমান, উদাম, নাগ, কুর্ম্ম, কৃকল, দেবদত্ত, ধনঞ্জয় এবং জীবাত্মা। নবকুমারের সংযোজন, ‘‘৭৬ বলতে আমার মন্বন্তরের কথা মনে পড়ে। এ ছাড়া আলাদা আলাদা করলে সাতে সমুদ্র আর ছয়ে ঋতু।’’