গলায় কয়েক সেকেন্ড দড়ির ফাঁস লেগে যাওয়ায় মস্তিষ্কে আঘাত লেগেছিল মেয়েটির। দুই হাসপাতাল ঘোরার পরে বামাইচাঁদপুরের এক বেসরকারি হাসপাতাল মেয়েটিকে সুস্থ করে দেয়। দিন দু’য়েক আগে বাড়ি ফিরে গিয়েছে বীরভূমের রামপুরহাটের রেলপল্লির বাসিন্দা ওই কিশোরী।
অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীর মায়ের দাবি, বকুনি খেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিল ওই কিশোরী। প্রায় সঙ্গেসঙ্গেই তিনি দেখতে পেয়ে মেয়েকে বাঁচান। কিন্তু তার মধ্যেই ওই কিশোরীর মস্তিষ্ক আঘাতপ্রাপ্ত হয়। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে বলে ‘হাইপকসিক ইঞ্জুরি ইন ব্রেন’। কিশোরীটিকে প্রথমে রামপুরহাট হাসপাতাল, পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষে বামাইচাঁদপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালেই সুস্থ হয় মেয়েটি।
ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক নাসীম আখতার বলেন, “গলায় ফাঁস লেগে ঝুলে থাকার কারণে মেয়েটির শ্বাসকষ্ট ও খিঁচুনি শুরু হয়। মস্তিষ্কে আঘাতের ফলে স্মৃতিশক্তিও হারায় সে। মস্তিষ্কে অক্সিজেন ও রক্ত সঞ্চালন না ঘটায় কথাও বলতে পারছিল না। ফলে প্রথমে মেয়েটির গলা ফুটো করে কৃত্তিম উপায়ে শ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ভেন্টিলেশনেও রাখা হয়। তবে দিনকয়েক আগে মেয়েটির কৃত্তিম শ্বাসযন্ত্র খুলে নেওয়া হয়েছে। আপাতত সুস্থ সে।” হাসপাতালে গিয়েও দেখা যায়, মেয়েটি আস্তে আস্তে কথা বলতে পারছে। তবে স্মৃতিশক্তি পুরোপুরি ফেরাতে নিয়মিত ফিজিও ফেরাপি দরকার বলে জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক। তাঁর আশ্বাস, “ফিজিও থেরাপির মাধ্যমে মাথায় রক্ত ও অক্সিজেন পাঠাতে হবে। নিয়মিত ফিজিও থেরাপি করা হলে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে ওই কিশোরী স্মৃতিশক্তিও ফিরে পাবে।”
ওই কিশোরীর বাবা শেখ হাদিউজ্জামান বলেন, “ভাবতেই পারিনি মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠবে।”
কিন্তু জেলার মেডিক্যাল কলেজেও কি এমন চিকিৎসা সম্ভব নয়? বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সহ-অধ্যক্ষ তথা হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ বলেন, “গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝোলার ফলে কন্ঠনালীটি ভেঙে যায়। যদি তা নাও হয়, তাহলে ‘হাইপকসিক ইঞ্জুরি ইন ব্রেন’ ঘটে। এতে মস্তিষ্কের কোষগুলির মৃত্যু ঘটে। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আমাদের সরকারি স্তরে চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy