Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চিকিৎসার সঙ্গে আত্মীয়তার বন্ধনও

চিকিৎসা করে চলে যাওয়ার পরেও হাসপাতালের সঙ্গে সম্পর্ক থেকে যায় রোগী বা তাঁর পরিজনদের। হাসপাতালের নানা অনুষ্ঠানে তাঁরা ফিরে ফিরে আসেন। কারণ হিসেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শুধু চিকিৎসাই নয়, রোগী ও তাঁর পরিজনদের সঙ্গে একপ্রকার আত্মীয়তা গড়ে তোলার প্রয়াসে নেমেছেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪৯
Share: Save:

চিকিৎসা করে চলে যাওয়ার পরেও হাসপাতালের সঙ্গে সম্পর্ক থেকে যায় রোগী বা তাঁর পরিজনদের। হাসপাতালের নানা অনুষ্ঠানে তাঁরা ফিরে ফিরে আসেন।

কারণ হিসেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শুধু চিকিৎসাই নয়, রোগী ও তাঁর পরিজনদের সঙ্গে একপ্রকার আত্মীয়তা গড়ে তোলার প্রয়াসে নেমেছেন তাঁরা। সল্টলেকের যে কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানটি এই হাসপাতাল চালায় তার সম্পাদক চিকিৎসক কিষাণ প্রধানের কথায়, “চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয় থেকে সাধারণ কর্মী সবার এই হাসপাতালের সঙ্গে নাড়ির যোগ রয়েছে। পেশাদার হিসেবে নয়, এখানে সবাই এই প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের মনে করে কাজ করেন। সারা বছর সকলকে বেতন দিয়ে সামান্য টাকা বাঁচলেও তা হাসপাতালেরই উন্নয়নে খরচ করা হয়। এ ভাবে তিলে তিলে আমরা গড়ে তুলছি হাসপাতালটিকে।”

১০ বছর আগেও যে হাসপাতালে ৮ শয্যার একটি আইসিসিইউ ছিল, সেখানে এখন ৩২টি শয্যা। সব মিলিয়ে শয্যা সংখ্যা ১১০। নব কলেবরে এ ভাবে বেড়ে ওঠার পিছনে রোগীদের একাংশকে কৃতিত্ব দিচ্ছে হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ। দেড় বছর আগেও সিটি স্ক্যান যন্ত্র ছিল না। হাসপাতালের এক চিকিৎসক বিপ্লব চন্দ্র বলেন, “এক জন রোগীকে সেই সময়ে স্ক্যান করতে বাইরে পাঠাতে হয়। তাঁর দাদা ব্যাঙ্কের বড় অফিসার। তিনি অবাক হন এখানে স্ক্যান মেশিন নেই শুনে। আমরা আমাদের অবস্থার কথা বলি।” সেই ব্যাঙ্ক অফিসার ও তাঁর কিছু বন্ধু মিলে হাসপাতালকে একটি সিটি স্ক্যান যন্ত্র দান করেন।

গত বছর ছাদে পড়ে গিয়ে হাত ভাঙে সল্টলেকের বাসিন্দা ননীত বিশ্বাসের। এই হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পরে সুস্থ হন তিনি। হাসপাতালের কর্মীদের ব্যবহারে এতটাই আপ্লুত তিনি যে ডাক পড়লেই চলে আসেন নানা অনুষ্ঠানে। মঙ্গলবার তেমনই এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় হাসপাতালে। ক্যানসার সচেতনতা নিয়ে সেমিনার, আলোচনা হয় অত্যধিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কুফল নিয়ে। তার আগে বার্ষিক সভায় হাসপাতালের নতুন পরিচালন কমিটি গঠিত হয়। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিলেন চিকিৎসক-নার্স-কর্মী, তাঁদের পরিবার। হাজির ছিলেন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরাও।

লেকটাউনের বাসিন্দা কলেজ পড়ুয়া দিব্যশঙ্কর দাস গত বছর জ্বর নিয়ে ভর্তি ছিলেন। ডাক পেলেই চলে আসেন ‘ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিক অ্যান্ড হসপিটাল’-এর অনুষ্ঠানে। ঘাড় কাত করে বেহালা ধরে ছড় তুলে নেন হাতে। হাসপাতালের অফিসার কৃষ্ণেন্দু সিকদার বলেন, “এখানে যাঁরা চিকিৎসা করান, সবার ঠিকানা ও নম্বর আমাদের কাছে থাকে। অনুষ্ঠান হলেই তাঁদের ফোন, এসএমএস করে বা কার্ড পাঠিয়ে আমন্ত্রণ জানাই। সকলকে হয়তো জানানো যায় না। কিন্তু, চেষ্টা করি যত বেশি মানুষের কাছে পৌঁছনো যায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

saltlake hospital kisen pradhan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE