Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ডেঙ্গি রোধে নামছে তিন পুরসভা

অবশেষে ঘুম ভাঙল পুরসভাগুলির! পুর-এলাকার কারও মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি কি না, সেই বিতর্কে না গিয়ে মশাবাহিত ওই রোগ প্রতিরোধে পথে নামল তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৫ ০০:৩৩
Share: Save:

অবশেষে ঘুম ভাঙল পুরসভাগুলির! পুর-এলাকার কারও মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি কি না, সেই বিতর্কে না গিয়ে মশাবাহিত ওই রোগ প্রতিরোধে পথে নামল তারা।

ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি মশা মারতে কামান দাগাও শুরু করেছে বরাহনগর পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, বুধবার দুপুরে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞেরা এসে চেয়ারপার্সনের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার পর থেকেই দফায় দফায় পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মী, কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। রক্তপরীক্ষা শিবির শুরু করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা।

বরাহনগরের চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক বলেন, ‘‘কয়েক দিনের মধ্যেই বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে বিনামূল্যে রক্তপরীক্ষা শিবির হবে। কয়েকটি ল্যাবরেটরির সঙ্গেও এ নিয়ে কথা হয়েছে।’’ এক পুরকর্তার মন্তব্য, ‘‘এত যে জ্বর হচ্ছে, তার কারণ জানা জরুরি। তাই ঢালাও রক্তপরীক্ষার এই ব্যবস্থা।’’ অপর্ণাদেবী জানান, স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া লিফলেট বাড়ি বাড়ি বিলির পাশাপাশি রাস্তার মোড়ে-মোড়ে টাঙানো হচ্ছে সচেতনতা সংক্রান্ত ফ্লেক্স।

অন্য দিকে, আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে সমস্ত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং বিধাননগর মহকুমা হাসপাতাল ও দুই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের বৈঠক ডেকেছেন বিধাননগর পুরসভার মেয়র সব্যসাচী দত্ত। সেখানেই ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে। সব্যসাচীবাবু বলেন, ‘‘ডেঙ্গি মোকাবিলায় আমরা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেব।’’

এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপের কথা কবুল করেছেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) গোপা পাণ্ডেও। তিনি বলেন, ‘‘নাগেরবাজারের কাছে দাস ভিলা এলাকার একটি আবাসনে ডেঙ্গির মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। অথচ পুরকর্মীরা ডেঙ্গি নিয়ে সচেতন করতে গেলে অনেক সময়ে তাঁদের আবাসনে ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছে না।’’ ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে দমদমেও। সেখানকার এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘এনএস-১, আইজিএম এবং আইজিজিএম— এই তিন ধরনের পরীক্ষা থেকেই ডেঙ্গি নিশ্চিত হচ্ছে, এমন রোগী বেশি আসছেন দমদম, দমদম ক্যান্টনমেন্ট, রাজারহাটের মতো জায়গা থেকে।’’

সোমবারই বরাহনগরের দুই বাসিন্দা অর্পিতা চক্রবর্তী ও নমিতা সামন্তর মৃত্যু হয়। অর্পিতার ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ লেখা ডেঙ্গি এবং নমিতার মৃত্যুর কারণে লেখা হয় এনএস-১ পজিটিভ। দুই পরিবারের তরফেই বলা হয়, রোগিণীর মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গিতে। পুরসভা ডেঙ্গিতে মৃত্যুর কথা স্বীকার না করায় বিতর্ক বাধে। চেয়ারপার্সন অপর্ণাদেবী অবশ্য বলেন, ‘‘ডেঙ্গি হচ্ছে না, তা তো বলছি না। ডেঙ্গি হয়েছে কি না জানতে যে রক্ত পরীক্ষা দরকার, তা করার পরে বললে আপত্তির কিছু নেই। তবে অনেকে শুধু এনএস-১ পজিটিভ হলেই তাকে ডেঙ্গি বলে দিচ্ছেন। এটাতেই আমাদের আপত্তি।’’

দিন কয়েক আগে বাগুইআটির পাঠশালা এলাকার বাসিন্দা গৌতম সাহা জ্বর নিয়ে বেলেঘাটা আইডি-তে ভর্তি হন। পরে বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলেও মারা যান তিনি। তাঁর রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে এনএস-১ পজিটিভ এসেছিল। তবে মৃত্যু ডেঙ্গিতেই কি না, তা নিয়ে এখনই মন্তব্য করতে নারাজ বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘ওঁর ডেথ সার্টিফিকেট নিগমের কাছে আসেনি। তাই কোনও মন্তব্য করব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE