Advertisement
E-Paper

নিরাপত্তা দাবি করে পুলিশে রায়গঞ্জ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ

চিকিত্‌সায় গাফিলতির অভিযোগে পরপর তিনবার বিক্ষোভ, ভাঙচুরের ঘটনার পরে নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন রায়গঞ্জ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, “আপাতত হাসপাতালে সর্বক্ষণ পুলিশি নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশক্যাম্প বসানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৫ ০৩:০৭

চিকিত্‌সায় গাফিলতির অভিযোগে পরপর তিনবার বিক্ষোভ, ভাঙচুরের ঘটনার পরে নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন রায়গঞ্জ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, “আপাতত হাসপাতালে সর্বক্ষণ পুলিশি নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশক্যাম্প বসানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”

হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত মঙ্গলবার হাসপাতাল সুপার উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপারকে চিঠি পাঠিয়ে চিকিত্‌সক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা দিতে হাসপাতালে পুলিশক্যাম্প বসানোর আর্জি জানান। সেই সঙ্গে হাসপাতালের চিকিত্‌সক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বৈঠক করে রায়গঞ্জ থানার আইসির কাছেও একই দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হাসপাতালে গোলমাল এড়াতে সুষ্ঠু চিকিত্‌সা পরিষেবা দেওয়ার জন্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে শূন্যপদে চিকিত্‌সক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের দাবিতেও স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

চিকিত্‌সায় গাফিলতির জেরে রায়গঞ্জের শ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ তুলে গত ৮ ও ৯ মার্চ মৃতের পরিজনেরা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখিয়ে সুপার ও সহকারী সুপারের ঘরে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। এক স্বাস্থ্যকর্মীকেও হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। গত ৬ মার্চ কালিয়াগঞ্জের লোহাতারা এলাকার বাসিন্দা এক প্রসূতির মৃত্যুর পর মৃতার পরিবারের সদস্যরা চিকিত্‌সক ও নার্সদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে, হেনস্থা করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

হাসপাতাল সুপার অনুপ হাজরার অভিযোগ, “রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর কবে শূন্যপদে চিকিত্‌সক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করবে, সে বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই। তাই চিকিত্‌সক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থা ও হামলার হামলার হাত থেকে বাঁচাতে এবং সুষ্ঠ চিকিত্‌সা পরিষেবা দেওয়ার স্বার্থে হাসপাতালে বিশৃঙ্খলা রুখতে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিতভাবে হাসপাতালে পুলিশক্যাম্প বসানোর অনুরোধ করেছি।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রাসবিহারী দত্ত দাবি করে বলেন, “রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে চিকিত্‌সক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বিভিন্ন শূন্যপদ পূরণের চেষ্টা করছে।”

হাসপাতালে বর্তমানে ৩৮ জন চিকিত্‌সক ও ৫২ জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। গত প্রায় চার বছর ধরে পর্যায়ক্রমে প্রসূতি, সার্জিক্যাল, মানসিক, মেডিসিন, অর্থোপেডিক ও সাধারণ বিভাগে চিকিত্‌সক ও স্বাস্থ্যকর্মীর ১৫ ও ৪৪টি পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এ ছাড়াও হাসপাতালের শিশু, প্রসূতি, মেডিসিন ও সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে শয্যা ও বিভিন্ন ওষুধেরও অভাব রয়েছে। হাসপাতালের শল্য চিকিত্‌সক সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “প্রয়োজনের তুলনায় চিকিত্‌সক ও স্বাস্থ্যকর্মী কম থাকায় সবার পক্ষেই চিকিত্‌সা পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয় না। নিরাপত্তার স্বার্থে তাই পুলিশই এখন আমাদের প্রধান ভরসা।”

জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অমল আচার্যের দাবি, “চিকিত্‌সক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ অন্য জেলা থেকে বদলি নিয়ে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে কাজে যোগ দিতে রাজি না হওয়ায় সমস্যা মিটতে কিছুটা দেরি হচ্ছে।” বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তী ও জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দের দাবি, পুলিশ ক্যাম্প বসলে ভাল, তবে সবার আগে চিকিত্‌সা পরিষেবা বাড়াতে হবে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পালের অভিযোগ, “চিকিত্‌সক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অভাব থাকলেও চিকিত্‌সকদের একাংশ হাসপাতালে সঠিক পরিষেবা না দিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকেন। এ সবের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামা হবে।”

raiganj hospital security
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy