উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে এখানেই তৈরি হবে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। ছবি: সুব্রত জানা।
শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধি, নার্সিং কলেজ, ডায়ালিসিস সেন্টার, সিটি স্ক্যান সেন্টার উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে আগেই হয়েছে। এ বার ৩০০ শয্যার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি হতে চলেছে উলুবেড়িয়ায়।
পুজোর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এ বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। হাসপাতাল তৈরির প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল চত্বরেই তৈরি হচ্ছে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালটি। হাসপাতালটি তৈরি হলে চিকিৎসাক্ষেত্রে উলুবেড়িয়ার অবস্থানই বদলে যাবে বলে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের মত।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের জন্য জমি চিহ্নিতকরের কাজ শেষ। শেষ হয়েছে মাটি পরীক্ষার কাজও। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস ও উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার সুদীপরঞ্জন কাঁড়ার বলেন, ‘‘রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের অর্থানূকুল্যে এই অত্যাধুনিক হাসপাতাল হচ্ছে। টাকাও বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালটিতে উন্নত মানের ও বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকছে। শীঘ্রই হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে। ৯ বিঘা জমির উপর ওই হাসপাতালে থাকছে ৫টি তল। একেকটি তলের আয়তন ১৬ হাজার বর্গফুট। কার্ডিওলজি, নিওরোলজি, ইউরোলজির মতো জটিল রোগ-সহ অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা থাকছে এখানে। এ ছাড়া উন্নতমানের ল্যাবরেটরি, ব্লাড ব্যাঙ্ক, ডিজিটাল এক্স-রে, ইনটেনসিভ ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট, এমআরআই এর ব্যবস্থাও থাকবে। হাসপাতালের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও থাকছে অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা-সহ অন্যান্য ব্যবস্থা।
কী কী সুবিধা
• শয্যাসংখ্যা ৩০০।
• থাকবে কার্ডিওলজি, নিওরোলজি, ইউরোলজির মতো জটিল রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা।
• উন্নতমানের ল্যাবরেটরি, ব্লাড ব্যাঙ্ক, ডিজিটাল এক্সরে, ইনটেনসিভ ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট, এমআরআই-এর ব্যবস্থা।
বর্তমানে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ৩৫০টি শয্যা রয়েছে। কিন্তু রোগীর চাপ এত বেশি যে প্রায় দ্বিগুণ রোগী ভতি থাকেন। বহির্বিভাগে হাজারেরও বেশি রোগী প্রতিদিন চিকিৎসা করাতে আসেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন হাসপাতালে জেনারেল মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু জটিল ও বিশেষ রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা এখানে নেই। ফলে হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার মানুষকে এর জন্য ছুটতে হয় কলকাতার এসএসকেএম বা অন্য কোনও সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু হাসপাতালটি হলে ওই সব রোগের চিকিৎসা এখানেই করাতে পারবেন হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার মানুষজন। পাশাপাশি আরও উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন তাঁরা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতির দিকে নজর দিয়েছিলেন। সেই প্রক্ষিতে এসএসকেএম-সহ কলকাতার সরকারি হাসপাতালগুলির উপর চাপ কমাতে তিনি জেলায় জেলায় সুপার স্পেশালিটি সুবিধাযুক্ত হাসপাতাল তৈরির কথা বলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ভাবনা থেকেই উলুবেড়িয়ায় এই ধরনের হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্যের কৃষি-বিপণন মন্ত্রী তথা মধ্য হাওড়ার বিধায়ক অরূপ রায়, বিধানসভার পরিষদীয় সচিব ও উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক পুলক রায় ও বিধায়ক নির্মল মাজি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। হাসপাতালটি হলে হাওড়ার গ্রামীণ এলাকা তো বটেই পাশের জেলার রোগীরাও উপকৃত হবেন।’’
উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা তুষারকান্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘নার্ভের রোগী এক আত্মীয়কে নিয়ে প্রায়ই কলকাতায় চিকিৎসার জন্য ছুটতে হয়। এখানে সুপার স্পেশালিটির সুবিধাযুক্ত হাসপাতাল হলে আর কলকাতায় ছুটতে হবে না। আমার মতো বহু মানুষই উপকৃত হবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy