হিন্দি বলয়ের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের দায়িত্বে থাকা দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তিনি। অথচ ভোটের আগে নিজের আস্থাভাজন সেই সেনাপতি, মধুসূদন মিস্ত্রিকেই কিনা গুজরাতে পাঠিয়ে দিলেন রাহুল গাঁধী! তা-ও আবার একেবারে বডোদরায়, নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে! তা হলে কি মোদীর খাস তালুকেই তাঁকে হারানোর স্বপ্ন দেখছেন রাহুল?
২৪ আকবর রোডের অফিসে বসা কংগ্রেসের অতি বড় সমর্থকও এ প্রশ্নের জবাবে ইতিবাচক সাড়া দেবেন না। বরং সহাস্যে বুঝিয়ে দেবেন, বডোদরায় মধুসূদনের হারাটাই ভবিতব্য। কিন্তু একই নিঃশ্বাসে কংগ্রেস নেতারা এ-ও বলছেন, আদতে মোদীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এ বার কংগ্রেসের ‘কেজরীবালকে’ নামিয়ে দিয়েছেন রাহুল! বারাণসীতে এমনিতেই মোদীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হচ্ছেন স্বয়ং অরবিন্দ কেজরীবাল। বডোদরাতেও প্রায় তেমনই এক জনের মুখোমুখি হতে হবে মোদীকে।
কেন? কংগ্রেস নেতারাই জানান, কেজরীবাল যতটা ছাপোষা, মধুসূদন বোধহয় তারও এক ধাপ উপরে। পরণে খাদির পাজামা-কুর্তা। কাঁধে সুতির ঝোলা। কংগ্রেসের এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, “বারাণসীতেই কি জয়ের আশা করছেন কেজরীবাল? কিন্তু মোদীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়ে যেমন তিনি প্রচারের আলো টানছেন, এবং সেই সুবাদে নানা অভিযোগ তুলে বিজেপিকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলছেন, ঠিক সে ভাবেই বডোদরায় মোদী তথা বিজেপিকে অতিষ্ঠ করে তুলতে সচেষ্ট হবেন মধুসূদন।
বস্তুত তা শুরুও করেছেন তিনি। বডোদরায় কংগ্রেস গোড়ায় নরেন্দ্র রাওয়াতকে প্রার্থী করেছিল। পরে মোদী সেখান থেকে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মধুসূদনকে সেখানে প্রার্থী করে দেন রাহুল। গত কাল সেই প্রসঙ্গ তুলে দলিতের অধিকার প্রশ্নে কংগ্রেসের সমালোচনা করেন মোদী। আজ পাল্টা জবাবে মধুসূদন বলেন, “গুজরাতের ভাবনগরে বিজেপি-র সাত বারের সাংসদ দলিত নেতা রাজুভাই রাণার টিকিট মোদী কেটে দিয়েছেন। তার পরেও এমন তিনি বলেন কী করে?”
মোদী নিজেকে চা-ওয়ালা হিসেবে তুলে ধরেই নেমেছেন ভোটের ময়দানে। আজ মধুসূদন বলেন, “আমিও চালিওয়ালা (বস্তিবাসী)। চালিতে জন্মেছি। বডোদরায় চা-ওয়ালার বিরুদ্ধে চালিওয়ালার লড়াই হবে।” তাঁর আরও মন্তব্য, “আমার জীবনের শখ ছিল মোদীর বিরুদ্ধে ভোটে লড়া। ওঁকে সাবরকাঁটায় চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। কিন্তু মোদী যখন সাবরকাঁটা থেকে লড়তে রাজি হননি, তখন আমিই বডোদরায় চললাম!”
গত বার গুজরাতের মোট ২৬টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছিল ১৫টি, কংগ্রেস ১১টি। এ বারে মোদী প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ায় সেখানে ২৬টি আসনেই জেতার আশা করছে বিজেপি। এই অবস্থায় অনেকেই মনে করছে, মোদীর বিরুদ্ধে মধুসূদনকে প্রার্থী করে সেই ধস ঠেকানোর চেষ্টা করলেন রাহুল। মধুসূদনকে প্রার্থী করে গুজরাতে অন্তত লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন রাহুল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy