রাজধানীতে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের অনেক স্মরণীয় ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এই প্রথম রাজধানীর ঐতিহাসিক রামলীলা ময়দানে সভা করতে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে মূল বক্তা হিসেবে থাকবেন অণ্ণা হজারে। সভা সফল করতে ইতিমধ্যেই দলের নানা স্তরে বার্তা দিয়েছেন মমতা। অণ্ণার সঙ্গে আগামী বুধবার, ১২ মার্চ রামলীলা ময়দান থেকে তাঁর জাতীয় প্রচারের সূচনার জন্য এখন সেজে উঠছে রামলীলা। একই সঙ্গে চলছে দিল্লির সাতটি আসন-সহ দেশের একাধিক রাজ্যে অণ্ণা-সমর্থিত তৃণমূল প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার কাজ।
রামলীলা ময়দানের সভা ভরিয়ে তুলতে আসরে নেমেছেন মমতা নিজেও। সোমবারই ফেসবুকে মমতা লিখেছেন, “সভায় অণ্ণাজি বক্তব্য রাখবেন। সময় পেলে আপনারা আসুন। আমিও সভায় বলতে পারি।” রাজ্যসভার দুই তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় এবং ডেরেক ও ব্রায়ান আজ রামলীলায় উপস্থিত ছিলেন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির তদারকিতে। হাজার পনেরো চেয়ার বসানো হয়েছে মাঠে। অণ্ণার সঙ্গে যৌথ ভাবে সভা করলেও তৃণমূলের রাজনৈতিক পরিচিতিকে টিম-অণ্ণার থেকে সামান্য হলেও আলাদা রাখতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। তাই সভায় উপস্থিত স্বেচ্ছাসেবী ও কর্মীদের যে টুপিটি দেওয়া হবে, তাতে লেখা থাকবে ‘ম্যায় হু অণ্ণা’। কিন্তু হাতে যে পতাকাটি দেওয়া হবে, সেখানে থাকবে ঘাসফুলের ছবি।
তৃণমূল সূত্রের খবর, আগামিকাল সকালে দিল্লি আসছেন অণ্ণা। আর সন্ধ্যায় আসার কথা মমতার। দু’জনের মধ্যে প্রার্থী তালিকা নিয়ে একটি বৈঠক হওয়ার কথা। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে মমতা পুরোপুরি নির্ভর করছেন অণ্ণার উপর। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়টি স্থির করছেন অণ্ণা। তাঁর পরামর্শ মেনেই তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।” প্রাথমিক ভাবে স্থির ছিল যে, ১২ তারিখই অন্তত দিল্লির ৭টি আসনের জন্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দেওয়া হবে। তৃণমূল সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে আরও ঝাড়াই-বাছাই করতে চান অণ্ণা। সে ক্ষেত্রে তালিকা ঘোষণা আরও পিছোতে পারে। টিম-অণ্ণার সঙ্গে দিল্লিতে সমন্বয় রেখে জাতীয় স্তরে প্রচার কৌশল তৈরির জন্য সুখেন্দুবাবু, ডেরেক-কে দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা।
পূর্ব দিল্লি আসনটিতে আম আদমি পার্টির রাজমোহন গাঁধীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের তরফে বিনোদ কুমার বিন্নিকে দাঁড় করানোর বিষয়টি এক রকম চূড়ান্ত করে ফেলেছে তৃণমূল। কিন্তু আপ সূত্রের খবর, সে ক্ষেত্রে তৃণমূলের সঙ্গে নয়, তাদের লড়াইটা দাঁড়াবে অণ্ণার সঙ্গে। যা এড়াতে চাইছেন অরবিন্দ কেজরীবাল। সে কারণে এক সময় দল থেকে বহিষ্কার করলেও এখন বিন্নিকে নরম করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তৃণমূলের সম্ভাব্য তালিকায় থাকতে পারেন চাঁদনি চক এলাকার দীর্ঘদিনের জেডিইউ নেতা শোয়েব ইকবালও। তৃণমূল শিবির মনে করছে, শোয়েব দাঁড়ালে চাঁদনি চক আসনি জয়ের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাবে। কথা চলছে ঝাড়খণ্ডের বিধায়ক চন্দ্রশেখর দুবে, পালামৌ-এর সাংসদ কামেশ্বর পৈঠা, প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার অরুণ ভাটনগরের সঙ্গেও। কংগ্রেসের রাঁচির সাংসদ সুবোধকান্ত সহায় দিল্লি এসে বসে রয়েছেন। কয়লা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ার কারণে তাঁকে এই বার টিকিট দিতে টালবাহানা করছে কংগ্রেস। এই অবস্থায় তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন সুবোধকান্ত। কিন্তু তাঁর ব্যাপারে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে তৃণমূলে। এক নেতার কথায়, “দুর্নীতির অভিযোগে কংগ্রেসই যাঁকে টিকিট দিতে দ্বিধায়, তাঁকে তৃণমূল দাঁড় করাবে কি না, সেটা ভাবার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy