Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রাজনাথের পরমাণু মন্তব্যে জলঘোলা

রাজনাথের বার্তার প্রতিক্রিয়ায় যে পাকিস্তান সরব হবে, তা অবশ্য প্রত্যাশিতই ছিল। কার্যত পাকিস্তানকে মাথায় রেখেই মোদী সরকার এই ‘হুমকি’ দিয়েছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।

রাজনাথ সিংহ। ছবি: পিটিআই।

রাজনাথ সিংহ। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৯ ০৩:২৯
Share: Save:

প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ভারতের পরমাণু নীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেওয়ার পর আজ পাল্টা আক্রমণে নামল পাকিস্তান। পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির বক্তব্য, রাজনাথের মন্তব্য ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ এবং ‘দুর্ভাগ্যজনক’। তাঁর অভিযোগ, নেহরুর রাষ্ট্রনীতি থেকে অনেকটাই সরে এসেছে মোদীর ভারত।

রাজনাথের বার্তার প্রতিক্রিয়ায় যে পাকিস্তান সরব হবে, তা অবশ্য প্রত্যাশিতই ছিল। কার্যত পাকিস্তানকে মাথায় রেখেই মোদী সরকার এই ‘হুমকি’ দিয়েছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। পাশাপাশি রাজনাথের এই মন্তব্যের সমালোচনাও হচ্ছে বিস্তর। বলা হচ্ছে, রাজনাথের মন্তব্য আন্তর্জাতিক আঙিনায় ভারতকে বেকায়দায় ফেলতে পারে। নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার গ্রুপ (এনএসজি)-এর মতো অভিজাত পরমাণু ক্লাবে ঢোকার জন্য এক দশক ধরে লাগাতার চেষ্টা করছে দিল্লি। পরমাণু অস্ত্র সম্প্রসারণ-বিরোধী চুক্তি বা সিটিবিটি-তে সই না-করা ভারতের পক্ষে কাজটি এমনিতেই ভাবে কঠিন। সেখানে পরমাণু শক্তি ব্যবহারের প্রশ্নে দিল্লি তার ট্র্যাক রেকর্ডকেই বারবার তুলে ধরেছে। কিন্তু এ বার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে প্রথম পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে যে ইঙ্গিত করলেন রাজনাথ, তাতে আমেরিকা থেকে চিন প্রত্যেকের কপালেই ভাঁজ পড়বে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।

সেই সঙ্গে এ বার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের প্রশ্নে ভারতের দিকে আঙুল তোলাটাও ইসলামাবাদের জন্য সহজ হয়ে গেল বলে অনেকের মত। কার্যত সেই প্রচারই শুরু করলেন পাক বিদেশমন্ত্রী। বিশেষ করে কাশ্মীর প্রশ্নটি যখন রাষ্ট্রপুঞ্জ পর্যন্ত গড়িয়েছে, তখনই দিল্লির এই শক্তি প্রদর্শনের আগ্রহকে সামনে আনা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিদেশ মন্ত্রকের অভ্যন্তরে।

প্রশ্ন হল, রাজনাথের মতো পোড় খাওয়া, মিতভাষী রাজনীতিক এমন মন্তব্য করলেন কেন? রাজনৈতিক শিবিরের মতে, রাজনাথ যা বলেছেন মোদী সরকারের মুখপাত্র হিসেবেই বলেছেন এবং খানিকটা ঝুঁকি নিয়ে চমক দেওয়াটা নরেন্দ্র মোদীরই বিশেষত্ব। সে সার্জিকাল স্ট্রাইক হোক, বা বালাকোট অভিযান, অথবা নওয়াজ শরিফের বাড়িতে চলে যাওয়া বা নোটবন্দির মতো সিদ্ধান্ত। প্রশাসনের অন্দরে সূত্রের বক্তব্য, ৩০০-র বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফেরার পরেই ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে সাহসই দেখিয়েছে সরকার। রাজনাথের মুখে বিতর্কিত মন্তব্য সেই সাহসই বজায় রেখেছে। ঘরোয়া রাজনীতিই হোক বা বৈদেশিক প্রশ্ন, দাপট নিয়েই এগোতে চাইছেন মোদী-অমিত শাহরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Controversy Rajnath Singh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE