Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

হঠাৎ এসে গল্প জুড়লেন রাহুল! অবাক ৭ অতিথি 

বেলা একটায় হুড়মুড়িয়ে ঢুকলেন রাহুল গাঁধী। সাত জনের চোখ ছানাবড়া। আগে তো জানানো হয়নি! এসেই গল্প জুড়লেন রাহুল।

বৈঠক: দিল্লির ‘অন্ধ্র ভবন’-এ ‘নিজের কথা রাহুলের সঙ্গে’। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাত ব্যবসায়ীর সঙ্গে সোমবার রাহুল গাঁধীর খোলামেলা আলোচনা। নিজস্ব চিত্র

বৈঠক: দিল্লির ‘অন্ধ্র ভবন’-এ ‘নিজের কথা রাহুলের সঙ্গে’। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাত ব্যবসায়ীর সঙ্গে সোমবার রাহুল গাঁধীর খোলামেলা আলোচনা। নিজস্ব চিত্র

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৫
Share: Save:

আট জনের টেবিল। মুখ চাওয়া-চাওয়ি করছেন সাত জন। অষ্টম ব্যক্তিটি কে?

বেলা একটায় হুড়মুড়িয়ে ঢুকলেন রাহুল গাঁধী। সাত জনের চোখ ছানাবড়া। আগে তো জানানো হয়নি! এসেই গল্প জুড়লেন রাহুল। দিল্লির ‘অন্ধ্র ভবন’-এর দোতলার ঘর। সকলের জন্য এল অন্ধ্রের খাবার। সাত জনই ছোট ব্যবসায়ী। ভাবেননি, রাহুল তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন। অপেক্ষা করছিল আরও চমক।

মধ্যপ্রদেশের ইন্দৌর থেকে এসেছেন সঞ্জয় পটবর্ধন। স্কুলে খাদির ইউনিফর্ম দিতে চান। কিন্তু প্রতি পদে হোঁচট খেতে হচ্ছে। খেতে খেতেই পকেট থেকে মোবাইল বার করলেন রাহুল। ফোনে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথকে। জানালেন, সঞ্জয়ের সমস্যার কথা। সেখানেই থামলেন না। ফোনটি দিয়েও দিলেন ব্যবসায়ীটিকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য। কমল নাথের সঙ্গে তাঁর বৈঠকও পাকা করে দিলেন।

সপ্তাহখানেক আগে এ ভাবেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা পড়ুয়াদের সঙ্গে আচমকা বৈঠক করে চমকে দিয়েছিলেন রাহুল। ‘নিজের কথা রাহুলের সঙ্গে’ শীর্ষক আলোচনায় আজ ছিল ছোট ব্যবসায়ীদের পালা। নোটবন্দি ও জিএসটি চালুর পর যাঁদের অবস্থা শোচনীয়। তার জন্য মধ্যপ্রদেশ, কাশ্মীর, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্য থেকে আনা হয়েছিল ছোট ব্যবসায়ীদের। তাঁদের সমস্যার কথা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন রাহুল। ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস কী করবে, তা-ও শোনালেন। চিনকে টেক্কা দিতে ভারতের কী করা উচিত, জানতে চাইলেন সে ব্যাপারেও।

রাহুলের সঙ্গে ঘন্টা দেড়েক কাটিয়ে আপ্লুত সকলেই। এঁদের মধ্যে অলোক মেহতা ব্যবসা করেন ফরিদাবাদে। সুহানি মোহনের স্যানিটারি ন্যাপকিনের যন্ত্র বানানোর ব্যবসা মুম্বইয়ে। খালিদ মহম্মদ কারগিলের হোটেল ব্যবসায়ী। মুম্বইয়ে মোবাইলের যন্ত্রাংশ তৈরি করেন পল সেবিয়া। সকলেই এক সুরে বললেন, ‘‘বড় বড় নেতারা বড় বড় ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেন। আমাদের মতো ছোটখাটোদের খেয়াল কে রাখেন? সোশ্যাল মিডিয়ায় রাহুলের সম্পর্কে নানা কথা ছড়ানো হয়, কিন্তু তাঁর সঙ্গে কথা বলে ধারণাই বদলে গেল। আমরাও তাঁকে জয়ের আগাম অভিনন্দন জানালাম।’’

লোকসভা ভোটের আগে রাহুলের জন্য এ ভাবেই ঝকঝকে এক প্রচারের পসরা সাজাচ্ছে কংগ্রেস। যেখানে নরেন্দ্র মোদীর মতো একতরফা কথা নয়, রাহুল শুনবেন সকলের কথা। নিজের কথাও বলবেন। সেই আঙ্গিকেই আজ বার্তা দেওয়া হল— মোদী শুধু বড় বড় ব্যবসায়ীদের জন্য। রাহুলের ভাবনা সকলকে নিয়ে।

কংগ্রেস সভাপতি যখন ছোট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত, দিল্লিতে দলের ‘ওয়ার রুম’-এ তখন সব রাজ্যের নেতাদের নিয়ে চলছে প্রচারের কৌশল রচনা। পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসেছেন অমিতাভ চক্রবর্তী। সেখানে স্থির হয়েছে, সব রাজ্যের জেলা স্তর পর্যন্ত হবে দলের ‘ওয়ার রুম’। পশ্চিমবঙ্গে রেডিয়োতে ‘জিঙ্গ্ল’ বাজবে বাংলায়। টিভিতে বিজ্ঞাপনও। গ্রামে গ্রামে ঘুরবে এলইডি ভ্যান। আর থাকবে হোর্ডিং।

ভোট পর্যন্ত দফায় দফায় বদলে যাবে হোর্ডিংয়ের স্লোগান। ভোট ঘোষণার আগে পর্যন্ত থাকবে মোদীর ব্যর্থতা। আর তার পরে, কংগ্রেস কী করবে, তার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE