Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
National News

মেহের তারারের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্ক ছিল তারুরের, সুনন্দা মামলায় সওয়াল দিল্লি পুলিশের

বিশেষ সরকারি আইনজীবী অতুল শ্রীবাস্তব ময়নাতদন্তের রিপোর্ট উল্লেখ করে জানান, সুনন্দার মৃত্যুর কারণ বিষক্রিয়া। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে হাত, পা এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ মিলিয়ে মোট ১৫টি আঘাতের চিহ্ন মিলেছে সুনন্দার শরীরে।

সুনন্দা পুস্কর (বাঁ দিকে), শশী তারুর ও মেহের তারার। —ফাইল চিত্র

সুনন্দা পুস্কর (বাঁ দিকে), শশী তারুর ও মেহের তারার। —ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ১৩:২৫
Share: Save:

স্বামী শশী তারুরের অত্যাচার, মারধর। তার জেরে সম্পর্কের টানাপড়েন।তার জেরেই আত্মহত্যা। সুনন্দা পুস্কর রহস্যমৃত্যুতে এ ভাবেই মামলা সাজাচ্ছে পুলিশ। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা শশী তারুরের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে বধূ নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট উল্লেখ করে পুলিশ জানিয়েছে, সুনন্দার শরীরে অন্তত ১৫টি আঘাতের চিহ্ন ছিল। পাক সাংবাদিক মেহের তারারের সঙ্গে তারুরের যে ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্ক ছিল, সেই দাবিও করেছেন বিশেষ সরকারি আইনজীবী। মামলার পরবর্তী শুনানি ৩১অগস্ট।

২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি দিল্লির লীলা প্যালেস হোটেলে রহস্যজনক ভাবে উদ্ধার হয়েছিল সুনন্দার দেহ। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, শরীরে বিষক্রিয়ার জেরেই মৃত্যু হয়েছিল শশী তারুরের স্ত্রীর। সেই মামলাতেই চার্জশিট গঠনের প্রক্রিয়া চলছে আদালতে। বুধবার সেই শুনানি ছিল দিল্লি আদালতের বিচারক অজয়কুমার কুহরের এজলাসে।

এই শুনানিতেই বিশেষ সরকারি আইনজীবী অতুল শ্রীবাস্তব ময়নাতদন্তের রিপোর্ট উল্লেখ করে জানান, সুনন্দার মৃত্যুর কারণ বিষক্রিয়া। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, হাত-পা এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে মোট ১৫টি আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তাঁর দাবি, সুনন্দা হতাশাগ্রস্ত ছিলেন, মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। মৃত্যুর আগে তারুর-সুনন্দার মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছিল বলেও দাবি তাঁর।

আরও পড়ুন: এখনও স্বস্তির ইঙ্গিত নেই সুপ্রিম কোর্টে, চিদম্বরমের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস ইডির

মামলায় সুনন্দার বন্ধু মহিলা সাংবাদিক নলিনী সিংহর বয়ান রেকর্ড করেছিল দিল্লি পুলিশ। সেই বিবৃতিও এ দিন আদালতে উল্লেখ করেন সরকারি আইনজীবী। নলিনী বলেছিলেন, ‘‘আমি যখন সুনন্দার ফোন পাই, অন্য প্রান্তে তখন ও খুব কাঁদছিল। আমি তাঁকে বলেছিলাম, মেহের তারার কেউ নন, তিনিই সবকিছু। কিন্তু ও তারুর এবং মেহের তারারের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল। ...ও বলেছিল, তারুর এবং তারারের মধ্যে যে মেসেজ চালাচালি হয়েছিল, সেগুলো পেয়েছে। সুনন্দা বাড়ি যেতে চায়নি এবং লীলা হোটেলে গিয়ে ওঠে। ওঁদের মধ্যে সম্পর্ক খুব খারাপ ছিল।’’

পাক সাংবাদিকের সঙ্গে তারুরের সম্পর্ক ‘ঘনিষ্ঠ’ বোঝাতে একাধিক ই-মেলের উল্লেখ করেন অতুল শ্রীবাস্তব। তাঁর দাবি, একটি ই-মেলে মেহের তারারকে ‘মাই ডার্লিংয়েস্ট’ বলে উল্লেখ করেছিলেন তারুর। শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘এই ধরনের ভাষা ব্যবহার করেছিলেন তারুর। এই রকম বহু চিঠি আছে, যাতে তারুর এবং তারারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রমাণ রয়েছে।’’ আর এই সম্পর্কের জেরেই যে তারুর এবং সুনন্দার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল এবং সুনন্দা আত্মহত্যার পথ বেছে নেন, তার পক্ষে সওয়াল করেছেন।

আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে ফের মধ্যস্থতার প্রস্তাব ট্রাম্পের, বললেন ভারত-পাকিস্তান বৈরিতার অন্যতম কারণ ধর্ম

শশী তারুরের হয়ে সওয়াল করছেন বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশ পাহোয়া। তারুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ খণ্ডন করতে তিনিও পাল্টা সওয়ালে বলেন, এই ধরনের কোনও ই-মেলের কথা তাঁর জানা নেই।

তারুরের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮ ধারায় বধূ নির্যাতন এবং ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনেছিল তদন্তকারী দিল্লি পুলিশ। বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন তারুর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE