Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
National News

শিক্ষকদের ‘যৌন হেনস্থার’ জেরেই কি আত্মহত্যা ১৫ বছরের কিশোরীর?

যৌন হেনস্থা-সহ পরীক্ষায় ইচ্ছাকৃত ভাবে ফেল করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন স্কুলের প্রিন্সিপাল। তাঁর কথায়, “এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। পরিষ্কার করে জানিয়ে দিচ্ছি, ইশিকাকে ফেল করেনি। বরং ফের পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল।”

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৮ ১২:৩০
Share: Save:

ঘণ্টা দুয়েকের জন্য বাড়ির বাইরে গিয়েছিলেন মা-বাবা। বাড়িতে সে সময় একাই ছিল কিশোরী মেয়ে। ফিরে এসে তাঁরা দেখেন, সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে মেয়ের দেহ। মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের নয়ডার ঘটনা।

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, স্কুলের দুই শিক্ষকের কাছে যৌন হেনস্থার শিকার তাঁদের মেয়ে। এমনকী, ইচ্ছাকৃত ভাবেই তাকে পরীক্ষায় পাশ করতে দিতেন না অভিযুক্তেরা। ওই শিক্ষকদের ‘অতিরিক্ত চাপেই’ আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য করেছে তাঁদের মেয়েকে। যদিও যৌন হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

নয়ডার এসপি অরুণ কে সিংহ জানিয়েছেন, স্কুলের এসএসটি টিচার রাজীব সহগল এবং নীরজ আনন্দের বিরুদ্ধেই যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছে তার মা-বাবা। ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া ছাড়াও পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, নয়ডার বাসিন্দা বছর পনেরোর ওই কিশোরীর নাম ইকিশা রাঘব শাহ। ময়ূর বিহারের একটি বেসরকারি স্কুলের ক্লাস নাইনের ছাত্রী ছিল সে।

আরও পড়ুন
মিথ্যে বলিনি, প্রমাণ হল, বলছেন ৩৯ জনকে খুনের ‘সাক্ষী’

মৃতের পরিবারের এক আত্মীয় জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেলে ইকিশাকে বাড়িতে রেখে ছেলেকে নিয়ে বাইরে গিয়েছিলেন তার মা-বাবা। ঘন্টা দুয়েক পরে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বাড়িতে ফিরে আসেন তাঁরা। সে সময় ইকিশার ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করা ছিল। অনেক ক্ষণ ডাকাডাকির পরেও কোনও সাড়া না মেলায় দরজা ভেঙে ফেলেন তাঁরা। দরজা ভেঙে দেখেন, সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে ইকিশার দেহ। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ইকিশাকে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানেই তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। সে রাতেই রাজীব সহগল এবং নীরজ আনন্দ নামে ইকিশার স্কুলের দু্ই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন তাঁরা।

পুলিশের কাছে বয়ানে ইকিশার বাবার দাবি, “মেয়ে আমাকে বলেছিল, এএসটি টিচারেরা আমাকে অযাচিত ভাবে ছুঁতেন। মেয়েকে বলেছিলাম, আমিও তো শিক্ষক, তাঁরা এমনটা করতে পারেন না।” ইকিশার বাবার আক্ষেপ, “সেটাই আমার ভুল হয়েছিল। কেননা, মেয়ে বলেছিল, ওই শিক্ষকদের ভয় পেত সে। পরীক্ষায় যত ভাল করেই লিখুক না কেন, মেয়েকে ইচ্ছে করে ফেল করিয়ে দিতেন তাঁরা।” ইকিশার মায়ের দাবি, পড়াশোনা নিয়ে প্রায়শই মেয়েকে বকাঝকা করতেন ওই দু’জন। তাঁদের ভয়ে স্কুলেও যেতে চাইত না সে।

আরও পড়ুন
শিক্ষকের কটূক্তি, কেরল জুড়ে তরমুজ-প্রতিবাদ

যৌন হেনস্থা-সহ পরীক্ষায় ইচ্ছাকৃত ভাবে ফেল করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন স্কুলের প্রিন্সিপাল। তাঁর কথায়, “এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। পরিষ্কার করে জানিয়ে দিচ্ছি, ইশিকাকে ফেল করেনি। বরং ফের পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল।”

পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। প্রাথমিক ভাবে পুলিশে অনুমান, আত্মহত্যাই করেছে ইকিশা। তবে ময়নাতদন্তের পরই তা নিশ্চিত ভাবে জানা যাবে বলে জানিয়েছে তারা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, কিছু দিন আগেই স্কুলের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি ইকিশা। তার জেরেই সে এই পথ বেছে নিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suicice Noida New Delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE