রাজীব গাঁধীর জন্মবার্ষিকী মঞ্চে সনিয়া। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের সর্বশক্তি দিয়ে পি চিদম্বরমের পাশে থাকার নির্দেশ দিলেন দলের অন্তর্বর্তী সভাপতি সনিয়া গাঁধী। আজ প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর ৭৫তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে পরোক্ষে ভাবে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। রাজীবের উদাহরণ টেনে সুকৌশলে বুঝিয়ে দিলেন কংগ্রেস আমল আর এই আমলের ফারাক।
আজ সকালে কংগ্রেস দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতির নাম করে বলেন, ‘‘সিবিআই ও ইডিকে দিয়ে বদলা নেওয়া হচ্ছে। তা না হলে কেন কোনও চার্জশিট-প্রমাণ ছাড়া, সংশ্লিষ্ট বাকিদের না ছুঁয়ে চিদম্বরমকে গ্রেফতার করা হল? বিশেষ করে যিনি দেশের সেবায় জীবনের চল্লিশটি বছর দিয়েছেন।’’
গত কাল রাতেই সনিয়া স্থির করেন চিদম্বরমের গ্রেফতারি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানাবেন। কংগ্রেস সূত্রে খবর, কী বিবৃতি দেবেন, তা নিয়ে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। রাজীবের জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘১৯৮৪ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকারে এসেছিলেন রাজীব। কিন্তু সেই শক্তিকে
ভয়ের পরিবেশ তৈরি বা ধমকানোর জন্য ব্যবহার করেননি তিনি। সংস্থার স্বাধীনতা নষ্ট করার জন্যও করেননি। কারও সঙ্গে মতের অমিল থাকলে তাঁকে দমন করার পথ নেননি। গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য ও জীবন-শৈলীর পথ বিপন্ন করার চেষ্টা করেননি।’’ ঠারে ঠারে মোদী-শাহ জুটিকে বিঁধে সনিয়ার আক্রমণ, ‘‘রাজীব গাঁধী সকলকে নিয়ে চলতেন। শুধু অহঙ্কার দেখিয়ে, স্লোগান দিয়ে নয়। নিজের কাজ ও আচরণ দিয়ে দেখাতেন।’’
২০১৪ সালে মোদী ক্ষমতায় আসার পরে অনেক রাজ্যে অন্য দল ভাঙিয়ে বা সংখ্যালঘু থাকা সত্ত্বেও জোড়াতালি দিয়ে সরকার গড়েছে বিজেপি। তা নিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে বিজেপির বিস্তর সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। আজ সরাসরি না বললেও রাজীবের নজির টেনে কৌশলে ফের বিজেপি-কে বিঁধলেন সনিয়া। তিনি বলেন, ‘‘১৯৮৯ সালে কংগ্রেস একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। রাজীব মর্যাদা ও বিনম্রতার সঙ্গে সেই জনমত স্বীকার করেছেন। সব থেকে বড় দল হয়েও তিনি সরকার গড়ার দাবি পেশ করেননি। কেন? কারণ, তাঁর ভিতরে নৈতিকতা, উদারতা, সততা ছিল।’’
তবে কংগ্রেসের সামনে যে কঠিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সে কথা অস্বীকার করেননি সভাপতি। গোটা দেশ থেকে আসা নেতাদের সামনে তিনি স্পষ্ট করে দেন, ভোটে উত্থান-পতন থাকেই। কিন্তু আদর্শের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে বিভাজনকারী শক্তির বিরুদ্ধে। যে শক্তি ভারতের ভাবনা ও সমাজকে বদল ও বিভাজনের চেষ্টা করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy