ফাইল চিত্র।
পূর্ব বর্ধমানের ইশরারুল হক মণ্ডল জানিয়েছেন, তিনি পেশায় শিক্ষক। বাড়ি খণ্ডঘোষে। নিজের আধার নম্বর ও প্যান জানিয়েছেন। গত বছরে আয়কর রিটার্ন জমা দিয়ে কতটা আয়কর মিটিয়েছেন, তা-ও জানিয়েছেন।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক মুকলেসুর রহমানও নিজের আধার, প্যান সব জানিয়ে বলেছেন, শেষ বার কত আয়কর মিটিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের এমনই ২০ জন শিক্ষক-অধ্যাপক নিজের নাগরিকত্ব সম্পর্কে তথ্য দিয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টে এনপিআর বা জাতীয় জনগণনা পঞ্জির বিরুদ্ধে মামলা করলেন। তাঁদের মূল দাবি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এনপিআর তৈরির জন্য যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, তা অসাংবিধানিক। কারণ, নাগরিকত্ব বিধি অনুযায়ী, স্থানীয় রেজিস্ট্রার চাইলে কাউকে এনপিআর-এ ‘সন্দেহজনক নাগরিক’ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন। একই সঙ্গে নয়া নাগরিকত্ব আইনে ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করা হচ্ছে বলে এটিকেও অসাংবিধানিক বলে খারিজ করে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন ইশরারুলরা।
প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডের বেঞ্চ আজ এই মামলায় কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিস জারি করেছে। সিএএ-র বিরুদ্ধে আগেই পাঁচ ডজন মামলা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক-অধ্যাপকদের মামলারও একই সঙ্গে ২২ জানুয়ারি শুনানি হতে পারে।
তবে শিক্ষক-অধ্যাপকরা যে ভাবে পিটিশনে নিজেদের আধার, প্যান, আয়কর রিটার্নের তথ্য তুলে দিয়েছেন, তাতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরাও চমকে গিয়েছেন।আধার-প্যান তথ্য দিয়ে কী বার্তা দিতে চাইছেন? পূর্ব বর্ধমানের সরফিয়া হাই মাদ্রাসা-র শিক্ষক ইশরারুল বলেন, ‘‘আমরা মুসলিম। কিন্তু সকলেই ভারতীয় নাগরিক। আয়কর জমা করি। ঘটনাচক্রে যারা মামলা করেছি, তারা সকলেই মুসলিম। কিন্তু হিন্দু-মুসলিম সকলের জন্যই মামলা। গঙ্গা-পদ্মার তীরবর্তী এলাকার হিন্দু-মুসলমানকে প্রতি বছরই বন্যার জেরে ঘরছাড়া হতে হয়। তাঁরা কী ভাবে কাগজ দেখিয়ে নাগরিকত্ব প্রমাণ করবেন? সিএএ-তে মুসলিমদের কেন বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে প্রশ্ন উঠেছে। আমরা বলছি, নাগরিকত্ব পেতে কেন হিন্দুদের নিজেদের বাংলাদেশি বলতে হবে?’’
বিভিন্ন জেলার ২০ জন একসঙ্গে মামলা করলেও আলিয়া-র অধ্যাপক মুকলেসুর রহমানের দাবি, তাঁদের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মুকলেসুর বলেন, ‘‘সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে মাদ্রাসায় নিয়োগের পক্ষে মামলা লড়তে আমরা বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরাম তৈরি করেছিলাম। সেখানেই এনপিআর-এর বিরুদ্ধে মামলার কথাবার্তা হয়।’’
সিএএ-কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কেরল সরকারও সুপ্রিম কোর্টে সম্প্রতি মামলা করেছে। কেরলের মামলার বিরুদ্ধে আজ পাল্টা মামলা করেছেন কেরলের বিজেপি নেতা, মিজোরামের প্রাক্তন রাজ্যপাল কে রাজাশেখরণ। মামলায় তাঁর প্রশ্ন, এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাতের প্রশ্ন কোথায়? মামলা করতে গিয়ে সরকারি অর্থ খরচের আগে রাজ্যপালের সঙ্গেও কেরল সরকার আলোচনা করেনি বলে রাজাশেখরণের অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy