সোমবার আদালত চত্বরে রঞ্জন দৈমারি। ছবি: পিটিআই।
এক দশকের পুরনো অসম বিস্ফোরণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত রঞ্জন দৈমারি। জঙ্গি সংগঠন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট অব বড়োল্যান্ডের (এনডিএফবি) স্বঘোষিত সুপ্রিমো সে। সোমবার গুয়াহাটির বিশেষ সিবিআই আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে সংগঠনের অন্য ১৩ সদস্যকেও। তাদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি তুলেছেন সরকারি আইনজীবী টিডি গোস্বামী। সবদিক খতিয়ে দেখে বুধবার সাজা ঘোষণা করবে আদালত।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রঞ্জন দৈমারি-সহ জর্জ বড়ো, জয়ন্ত ব্রহ্মা, অজয় বসুমাতারি, প্রভাত বড়ো, রাজু সরকার, খড়্গেশ্বর বসুমাতারি, রাজেন গয়ারি, বি থরাই ওরফে বৈসাগ, লোকো বসুমাতারি, মাথুরাম ব্রহ্ম, আনসাই বড়ো এবং ইন্দ বড়়োকে দোষী সাব্যস্ত করেন সিবিআই আদালতের বিশেষ বিচারপতি অপরেশ চক্রবর্তী। অভিযুক্তের তালিকায় নাম ছিল মৃদুল গয়ারি এবং নিলিম দৈমারিরও। তাঁদের বেকসুর খালাস করা হয়েছে।
সরকারি আইনজীবী টিডি গোস্বামী বলেন, ‘‘বিস্ফোরণ কাণ্ডে দু’টি চার্জশিট জমা পড়েছিল। একটি চার্জশিটে ১৯ জনের নাম ছিল। অন্যটিতে ছিল ৩ জনের। অভিযুক্তদের মধ্যে ৭ জন ফেরার। তাদের মধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নানা সূত্রে খবর মিলেছে। তবে তা নিশ্চিত করা যায়নি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৬৫০ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। প্রমাণস্বরূপ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সমেত নথিপত্র জমা পড়েছে ৬৮৭টি।’’ দোষী সাব্যস্ত সকলের মৃত্যদণ্ডের দাবি জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার এনএস যাদব।
আরও পড়ুন: বিদেশে পালাতে পারেন কে ডি সিংহ! তৃণমূল সাংসদের বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি
আরও পড়ুন: মেধাতালিকা না দিলে জেলে ভরব সচিবকে, এসএসসি মামলায় মন্তব্য ক্ষুব্ধ বিচারপতির
২০০৮-এর ৩০ অক্টোবর গুয়াহাটির গণেশগুড়ি, পানবাজার, কাছারি, বরপেটা, কোকরাঝাড় এবং বঙ্গাইগাঁওতে একসঙ্গে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তাতে প্রাণ হারান ৯০ জন। প্রায় ৩০০ জন আহত হন। জঙ্গি সংগঠন আলফার সঙ্গে হাত মিলিয়ে, এনডিএফবি সুপ্রিমো রঞ্জন দৈমাই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। টাডা আইনে মামলা দায়ের হয় তার বিরুদ্ধে। বিস্ফোরণের পর দীর্ঘদিন বাংলাদেশে গা ঢাকা দিয়ে ছিল রঞ্জন দৈমারি। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সীমান্ত বাহিনী তাকে অসম পুলিশের হাতে তুলে দেয়। যদিও ২০১৩ সালে শর্ত সাপেক্ষে জামিন পেয়ে যায় সে।
পৃথক বড়োল্যান্ডের দাবিতে ১৯৮৬-র ৩ অক্টোবর সালে বিচ্ছিন্নতাবাদী দল হিসাবে বড়ো সিকিউরিটি ফোর্সের প্রতিষ্ঠা করে রঞ্জন দৈমারি ওরফে ডিআর নাবলা। পরে সংগঠনের নাম পাল্টে রাখা হয় ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট অব বড়োল্যান্ড। ২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে অস্ত্রবিরতি স্বাক্ষরিত হয় তাদের। কিন্তু তা সত্ত্বেও নাশকতামূলক কাজকর্মে লিপ্ত ছিল তারা। তা নিয়ে দলের মধ্যেও অন্তর্ঘাত দেখা দেয়। যার জেরে ২০০৮ সালে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে রঞ্জন দৈমারির নাম উঠে এলে, দু’ভাগে ভেঙে যায় সংগঠন। নিজের অনুগামীদের নিয়ে একটি অংশের নেতৃত্ব নিজের হাতে তুলে নেয় রঞ্জন দৈমারি। অন্য অংশের নেতৃত্ব তার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy