Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জোটের পথেই দরজা খোলা, বিজেপিকে হারাতে মুখ রাহুল

রাহুলই প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘২০০৪ সালের থেকে বেশি আসন আনতে চায় কংগ্রেস। ২০০-র বেশি সংখ্যা হলে স্বাভাবিক ভাবেই কংগ্রেস নেতৃত্ব দেবে। বাকি দল সঙ্গে আসতেই পারে। স্বাভাবিক ভাবেই কংগ্রেস সভাপতিকে সামনে রেখে কংগ্রেস ভোটে লড়বে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৮ ০৪:৩১
Share: Save:

জোটের দরজা খোলা রেখে রাহুল গাঁধীকেই মুখ করে ভোটযুদ্ধে ঝাঁপাচ্ছে কংগ্রেস।

ক’দিন আগেই নতুন ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করেছিলেন রাহুল। আজ সেই কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সব রাজ্য নেতাদেরও ডেকে নেন তিনি। সেখানে রাহুল স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘‘বিজেপিকে হারাতে যা যা দরকার, করা হবে।’’ আর তার জন্য পথ হল, এক, নিজেদের শক্তি বাড়িয়ে কংগ্রেসকে একার জোরে ২০০-র বেশি আসন জিততে হবে। আর দুই, যেখানে কংগ্রেসের শক্তি কম, সেখানে সমমনস্ক দলের সঙ্গে জোট করতে হবে। কংগ্রেসের স্বার্থ রক্ষা করেই সে ক্ষেত্রে নমনীয় হবে দল। আর রাহুলই দলের মুখ।

বৈঠকের গোড়াতেই সনিয়া গাঁধী জোটের সুর বেঁধে দিয়ে জানান, ব্যক্তিগত উচ্চাশাকে পাশে রেখেই বিভিন্ন দলের সঙ্গে কৌশলগত জোট করতে হবে। রাহুল পরে জানান, ভোটের আগে ও পরে বিভিন্ন দলের সঙ্গে জোটের ব্যাপারে তিনি একটি কমিটি গড়ছেন। সনিয়ার মন্তব্যের পরে অনেক কংগ্রেস নেতা মনে করছেন, মমতা-মায়াবতীর মতো যাঁরা প্রধানমন্ত্রী হতে চান, তাঁদেরও এ দিন বার্তা দিলেন সনিয়া। বুঝিয়ে দিলেন, রাহুল জোটেরও মুখ। বৈঠকে একাধিক নেতা আজ দাবি তোলেন, বিরোধী জোটের মধ্যমণি হতে হবে রাহুলকেই।

রাহুলই প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘২০০৪ সালের থেকে বেশি আসন আনতে চায় কংগ্রেস। ২০০-র বেশি সংখ্যা হলে স্বাভাবিক ভাবেই কংগ্রেস নেতৃত্ব দেবে। বাকি দল সঙ্গে আসতেই পারে। স্বাভাবিক ভাবেই কংগ্রেস সভাপতিকে সামনে রেখে কংগ্রেস ভোটে লড়বে।’’ দলের এক নেতা বলেন, রাহুল আগেই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী হতে তিনি রাজি। আর মমতাও বলেছেন, বড় দল হলে কংগ্রেসেরই প্রধানমন্ত্রী হবেন। ফলে কোথাও কোনও সংশয় নেই। তবে মোদীকে হারাতে এখন জোট গড়া যে হেতু প্রয়োজন, তাই এখনই স্পষ্ট ভাবে রাহুলকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ বলা হচ্ছে না।

কংগ্রেসের বৃহত্তম দল হয়ে ওঠার রূপরেখা তুলে ধরে আজ বৈঠকে পি চিদম্বরম বোঝান, কোন কৌশলে ১২টি রাজ্য থেকে কংগ্রেসের আসন সংখ্যা তিনগুণ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব। বিজেপি-আরএসএসের সংগঠনের মোকাবিলায় কংগ্রেসের কৌশল কী হবে, তা ব্যাখ্যা করেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের ভিত বাড়ানোই আমাদের সবথেকে বড় কাজ। সব কেন্দ্র ধরে তাঁদের কাছে পৌঁছতে হবে, যাঁরা আমাদের ভোট দেননি।’’ রাহুলের কথায়, ‘‘সংসদে প্রধানমন্ত্রী আমার একটি প্রশ্নেরও জবাব দিতে পারেননি। মোদী-বিজেপি-আরএসএসের বিকল্প হিসেবে কংগ্রেসের ভাবনা পৌঁছে দিতে হবে সবার কাছে।’’ এ দিনের অনুষ্ঠানে সঙ্ঘকে তীব্র আক্রমণ করেছেন রাহুল। সঙ্ঘ কী ভাবে সরকারি সাহায্য নিয়ে বিভিন্ন স্তরে প্রভাব বাড়াচ্ছে, তা-ও দলীয় স্তরে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, বিরোধী দলের মতাদর্শের সঙ্গে কংগ্রেসকে একাত্ম করতে না পারলে দীর্ঘমেয়াদে সঙ্ঘের ভাবধারাকে ঠেকানো কঠিন।

মনমোহন সিংহ এ দিন মোদীর কড়া সমালোচনা করেন। সনিয়া বলেন, ‘‘গোটা দেশে ঘৃণা, ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বাঁচাতে হবে গণতন্ত্রকে। মোদী জমানার বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে মানুষকে রক্ষা করতে হবে।’’ তবে ‘ব্যক্তি’ মোদী নন, মোদীর বিচারধারাকে টক্কর দিতে চাইছেন রাহুল। তাই মোদী জমানার দশটি ব্যর্থতাকে আজ ওয়ার্কিং কমিটিতে চিহ্নিত করে ভোটের রূপরেখা তৈরি করলেন কংগ্রেস সভাপতি।

বিরোধী জোটে ফাটল ধরাতে বিজেপি মুখে পরিবারতন্ত্র নিয়ে সরব হলেও তারা যে বিরোধী জোট নিয়ে চিন্তিত, তা বোঝা গিয়েছে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বক্তব্যে। আজ মুম্বইয়ে দলের কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘জোট নিয়ে যা যা পরিস্থিতি তৈরি হবে, তার জন্য আমাদের তৈরি থাকতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE