Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

টু-জি রায়েও বিবাদ সিপিএমে

তাই বিচার এগোনো এবং অভিযুক্তদের শাস্তির জন্য উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ দরকার। পলিটব্যুরোর ভাষায়, ‘টু-জি মামলার এই রায় জবাবের চেয়ে বেশি প্রশ্ন তুলেছে’!

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:০৬
Share: Save:

কংগ্রেস বলছে, বফর্সের পরে আর এক বার বিনা দোষে তাদের সাজার ইতিহাস সামনে এল! বিশেষ আদালতের রায়ে টু-জি স্পেকট্রাম-কাণ্ডে এ রাজা, কানিমোড়িরা নির্দোষ সাব্যস্ত হওয়ার পরে বিজেপি-র ‘মিথ্যাচার’কেই নিশানা করছে তারা। কিন্তু সে পথে হাঁটল না সিপিএম। তাদের বরং দাবি, উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ করা হোক, যাতে ওই কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্তেরা ছা়ড় না পায়! যে লাইন মিলে যাচ্ছে বিজেপি-র অরুণ জেটলিদের সঙ্গেই! গুজরাত ভোটের পরে বিজেপি-কে কোণঠাসা করার এমন সুযোগ হাতছাড়া করা হচ্ছে কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে সিপিএমের অন্দরেই।

সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে টু-জি মামলার বিশেষ আদালত বলেছে, এমন ভাবে ধারণা নির্মাণ করা হয়েছিল যাতে সকলের মনে হয়েছিল, বিশাল দুর্নীতি হয়েছে। অথচ বাস্তবে কোনও দুর্নীতি হয়নি। এই রায়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সিপিএম পলিটব্যুরোর বিবৃতি কিন্তু ‘দুর্নীতি হয়নি’র তত্ত্বকে আমলই দিচ্ছে না। পলিটব্যুরোর বক্তব্য, টু-জি স্পেকট্রাম বণ্টনে অনিয়মের জেরে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির কথা ছিল সিএজি রিপোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কিছু টেলিকম সংস্থার লাইসেন্স বাজেয়াপ্তও হয়েছিল। সিবিআই মামলায় তদন্তকারীদের তরফে ‘অপর্যাপ্ত’ তথ্যপ্রমাণ পেশ করা হয়েছে। তাই বিচার এগোনো এবং অভিযুক্তদের শাস্তির জন্য উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ দরকার। পলিটব্যুরোর ভাষায়, ‘টু-জি মামলার এই রায় জবাবের চেয়ে বেশি প্রশ্ন তুলেছে’!

তাৎক্ষণিক ক্ষেত্রে যা হয়ে থাকে সিপিএমে, সেই প্রথা মেনেই বৃহস্পতিবার দিল্লিতে উপস্থিত পলিটব্যুরোর সদস্যদের এক প্রস্ত আলোচনার পরে এই বিবৃতি জারি করা হয়েছে। কিন্তু দলেরই একাংশের বক্তব্য, ভবিষ্যতে উচ্চতর আদালতের রায়ের কথা মাথায় রেখে চাইলে নীরব থাকা যেত। তৃণমূল যেমন এ দিন কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। অথচ সিপিএম এমন প্রতিক্রিয়া জানাল, যাতে এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়ানো এবং লোকসভা ভোটের আগে তামিলনাড়ুতে ডিএমকে-র মতো দলকে ধর্মনিরপেক্ষ জোটে টানার সুযোগ হাতছাড়া হল! দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘বিজেপি-কে আক্রমণ করার আরও একটা সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল। কিন্তু বিবৃতিতে বিজেপি-র বিরুদ্ধে একটা শব্দও নেই!’’

পলিটব্যুরোয় প্রকাশ কারাট শিবিরের পাল্টা যুক্তি, কংগ্রেসের অর্থনীতি এবং তাদের সরকারের দুর্নীতি প্রবণতার বিরুদ্ধে বরাবরই সরব থেকেছে সিপিএম। টু-জি মামলায় এখনও উচ্চ আদালতে ভিন্ন রায়ের দরজা বন্ধ হয়ে যায়নি। তাই এখনই পুরনো অবস্থান থেকে পুরোপুরি সরে আসা উচিত নয়। কারাট শিবিরের এক নেতার মন্তব্য, ‘‘ভবিষ্যতে যদি সিবিআই বা ইডি-র দুর্বল চার্জশিটের জেরে সারদা-নারদ মামলায় তৃণমূল ছাড় পেয়ে যায়, তা হলে আমরা কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে সার্টিফিকেট দেব!’’ পার্টি কংগ্রেসের আগে যে কোনও প্রশ্নেই সিপিএমে যে বিভাজন থাকবে, টু-জি রায়েই ফের তা স্পষ্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

2G Scam CPM A Raja M Kanimozhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE