Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গোমাংস খাওয়ার অধিকার নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে গ্রেফতার আদিবাসী শিক্ষক

জিতরাইয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের জুলাইয়ে  ফেসবুকে পোস্টটি করেছিলেন ওই অধ্যাপক। তার পরেই তাঁর নামে অভিযোগ দায়ের হয়। ওই অধ্যাপককে থানায় হাজিরা দিতে বলা হলেও গ্রেফতার করা হয়নি তখন।

জিতরাই হাঁসদা।

জিতরাই হাঁসদা।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৯ ০১:২৫
Share: Save:

আদিবাসীদের গোমাংস খাওয়ার অধিকার নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করেছিলেন। তার জেরেই গ্রেফতার হলেন জিতরাই হাঁসদা নামে এক আদিবাসী অধ্যাপক। বিজেপি শাসিত ঝাড়খণ্ডের সাকচির ঘটনা। অভিযোগ, সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি কলকাঠি নাড়ায় কলেজ থেকে সাসপেন্ডও হয়েছেন ওই অধ্যাপক।

জিতরাইয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ফেসবুকে পোস্টটি করেছিলেন ওই অধ্যাপক। তার পরেই তাঁর নামে অভিযোগ দায়ের হয়। ওই অধ্যাপককে থানায় হাজিরা দিতে বলা হলেও গ্রেফতার করা হয়নি তখন। প্রায় দু’বছর পরে, গত কালই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন তিনি। তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক স্বার্থেই ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পরে গ্রেফতার করা হয়েছে জিতরাইকে। ভোটের আগে আদিবাসীদের চটিয়ে তাঁদের সমর্থন হারাতে চায়নি রঘুবর দাসের নেতৃত্বাধীন রাজ্যের বিজেপি সরকার। ঝাড়খণ্ডে এ বার ১৪টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১২টি-ই পেয়েছে বিজেপি। অনেকেই মনে করছেন, আদিবাসী ক্ষুব্ধ হলে এতটা ভাল ফল করা বিজেপির পক্ষে সম্ভব হত না।

জিতরাই নিজে আদিবাসীদের অধিকার রক্ষা নিয়ে কাজ করেন। পাশাপাশি নাট্যব্যক্তিত্বও। ফেসবুকে তিনি লিখেছিলেন, ভারতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে গোমাংস খাওয়ার রেওয়াজ বহু দিনের। এটা তাঁদের গণতান্ত্রিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার। ভারতে গোমাংস ভক্ষণ বিরোধী আইনের বিরোধী তাঁরা। তিনি আরও জানান, দেশের জাতীয় পাখি ময়ূরের মাংসও খান এই সম্প্রদায়ের মানুষ। ফেসবুকে হিন্দু রীতি অনুসরণ করার অনিচ্ছাও প্রকাশ করেন তিনি।

জিতরাইয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, ফেসবুক পোস্টটি করার কিছুদিনের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। তত দিনে তলায় তলায় জিতরাইকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে এবিভিপি। সংবাদমাধ্যম সূত্রে তা জানার পরে কোলহান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে চিঠি লেখে একটি আদিবাসী অধিকার রক্ষা সংস্থা। কোলহান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ একটি কলেজের অধ্যাপক জিতরাই। চিঠিতে সংস্থার এক মুখপাত্র লেখেন, ‘‘আদিবাসীরাও ভারতের নাগরিক। অন্যদের মতো আমাদেরও সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য অনুসরণ করার অধিকার রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার যদি গোহত্যায় নিষেধাজ্ঞা আনে, তবে তা আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করবে।’’ যদিও এই চিঠিতে কাজ হয়নি। কিছু দিনের মাথায় সাসপেন্ড করা হয় হাঁসদাকে।

পুলিশ জানিয়েছে, এটা পুরনো ঘটনা। ওই অধ্যাপক বেশ কয়েক মাস নিখোঁজ ছিলেন। খবর পেয়ে গত কাল তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Adivasi Beef Religious Harmony
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE