নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত
বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থান— পাঁচ রাজ্যের মধ্যে চারটিতেই বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায়। অন্যটি, মানে বিহারে তারা নীতীশ কুমারের দলের সঙ্গে জোট গড়ে ক্ষমতায়।
আর এই পাঁচ রাজ্যই গোটা দেশকে পিছনের দিকে টেনে রাখছে বলে মন্তব্য করে শোরগোল ফেলে দিলেন নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত। তাঁর যুক্তি, ‘‘বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থান সামাজিক মাপকাঠিতে ভারতকে পিছনের দিকে টেনে রাখছে।’’ অমিতাভ কান্তের মঙ্গলবারের এই মন্তব্য ঘিরে বুধবার সকাল থেকে বিজেপি শিবির উত্তাল। কারণ উত্তরপ্রদেশে এক বছর আগে বিজেপির যোগী আদিত্যনাথ সরকার ক্ষমতায় এলেও ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশে রমন সিংহ, শিবরাজ সিংহ চৌহানরা গত ১৫ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে। রাজস্থানেও গত ১৫ বছরের মধ্যে বিজেপি ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় থেকেছে।
ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে চলতি বছরের শেষেই বিধানসভা ভোট। আগামী বছর লোকসভা ভোটে ক্ষমতায় ফিরতে হলে এই পাঁচ রাজ্যের সিংহ ভাগ আসনে নরেন্দ্র মোদীর দলের জেতা জরুরি। কিন্তু তাঁর মন্তব্য রাজনৈতিক ভাবে বিজেপিকে বিপাকে ফেলেছে বুঝে অমিতাভ কান্ত পাল্টা ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘‘এই রাজ্যগুলি উত্তরাধিকার সূত্রে মানব উন্নয়ন সূচকে পিছিয়ে রয়েছে। বরং বর্তমান সরকার অনুন্নত জেলাগুলিকে চিহ্নিত করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টির দিকে নজর দিয়ে পরিস্থিতি শোধরানোর চেষ্টা করেছে। আমি এটাই বলতে চেয়েছি।’’
কংগ্রেসের পাল্টা প্রশ্ন, আর কত দিন উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সমস্যার ধুয়ো তুলবে বিজেপি? ছত্তীসগঢ়ের ভারপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা পি এল পুণিয়ার কথায়, ‘‘ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশে টানা ১৫ বছর বিজেপি ক্ষমতায়। রাজস্থানেও গত ১৫ বছরের মধ্যে ১০ বছর তারাই গদিতে। বিহারে তো সুশাসন-বাবু! তার পরেও কেন এই রাজ্যগুলির উন্নতি হয়নি, সেই জবাব তো বিজেপিকেই দিতে হবে। এই রাজ্যগুলি পিছনের সারিতে থাকলে সেই সমস্যা সমাধানের নীল নকশা নীতি আয়োগের সিইও-র কাছে কোথায়?’’
সুযোগ পেয়ে অমিতাভ কান্তের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে লালুপ্রসাদ-পুত্র তথা বিহারের বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব প্রশ্ন তুলেছেন, বিহার যদি পিছিয়েই থাকে, তা হলে প্রতিশ্রুতি মতো ‘বিশেষ শ্রেণিভুক্ত রাজ্য’-এর তকমা বা বিশেষ প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে না কেন? তেজস্বী বলেন, ‘‘বিহার ও বিহারিরা একই হারে কর মেটান। দেশ গঠনে একই
রকম অবদান রয়েছে তাঁদের।
বিহার থেকে এনডিএ-তে ৩৩ জন সাংসদ, সাত জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। রাজ্য ও কেন্দ্রে একই দলের জোট। তার পরেও এই সব আমলারা বলছেন, বিহার অনগ্রসর!’’
আশির দশকে বিহার, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশের আর্থিক ও সামাজিক দুরবস্থার জন্য তাদের ‘বিমারু’ রাজ্যের তকমা দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষমতায় থেকে বিজেপিই এখন দাবি করে যে তাদের দৌলতেই মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ‘বিমারু’ গোষ্ঠী থেকে বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু সেই যুক্তিই তো উল্টো হয়ে গেল! ঢোক গিলে বিজেপি সূত্রের দাবি, নীতি আয়োগের সিইও উল্টো বলে আসলে আমাদেরই বিপদে ফেলে দিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy