Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সম্মানরক্ষার নামে খুন, ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি খুন হন সচিন এস ঘারু এবং তাঁর দুই বন্ধু— সন্দীপ থানবর ও রাহুল কন্ধরে। এঁরা মেহতার সম্প্রদায়ের। ত্রিমূর্তি পবন প্রতিষ্ঠানের হাইস্কুল ও জুনিয়র কলেজে দেখাশোনার কাজ করতেন ওই তিন জন।

সংবাদ সংস্থা
নাসিক শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৭
Share: Save:

পাঁচ বছর আগে সম্মানরক্ষার নামে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছিল তিন দলিত যুবককে। মহারাষ্ট্রের অহমদনগরের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। ওই হত্যাকাণ্ডে আজ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিল নাসিকের একটি আদালত। খুন ও ষড়যন্ত্রের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে পোপট ভি দরন্দলে, গণেশ পি দরন্দলে, প্রকাশ ভি দরন্দলে, রমেশ ভি দরন্দলে, অশোক এস নবগিরে ও সন্দীপ এম কুরহে। প্রমাণের অভাবে রেহাই পেয়েছে অশোক আর ফালকে নামে এক অভিযুক্ত।

২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি খুন হন সচিন এস ঘারু এবং তাঁর দুই বন্ধু— সন্দীপ থানবর ও রাহুল কন্ধরে। এঁরা মেহতার সম্প্রদায়ের। ত্রিমূর্তি পবন প্রতিষ্ঠানের হাইস্কুল ও জুনিয়র কলেজে দেখাশোনার কাজ করতেন ওই তিন জন। সেই স্কুলেরই এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সচিনের। কিন্তু নিম্নবর্ণের ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি মরাঠা পরিবার। সচিনক ও তার সঙ্গিদের খুনের ছক কষে মেয়েটির বাবা পোপট, ভাই গণেশ ও দরন্দলে পরিবারের আরও দু’জন। অশোক ও সন্দীপকে নেওয়া হয় দলে।

ইংরেজি নববর্ষের দিনে ওই তিন যুবককে বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করার অছিলায় ডেকে পাঠায় পোপটরা। তাঁরা সেখানে পৌঁছলে প্রথমে একটি কাস্তে দিয়ে সচিনকে খুন করা হয়। সন্দীপ ও রাহুলের উপরেও কোদাল নিয়ে চড়াও হয় দরন্দলে পরিবার। ওই দু’জনকে খুন করে তাঁদের দেহ গ্রামের বাইরে একটি শুকনো কুয়োয় ফেলে দেওয়া হয়। আর সচিনের মাথা ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে দেহাংশগুলি বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেয় পোপটরা।

হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া তিন যুবকের পরিবার থানায় অভিযোগ জানালে পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। ঘটনার এক দিন পরে পোপটদের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হয় সচিনের দেহাংশগুলি। তিন দিন পরে উদ্ধার হয় সন্দীপ ও রাহুলের গলিত দেহ। মামলা চলে পাঁচ বছর। সাক্ষ্য দেন ৫৪ জন। অভিযুক্তদের আইনজীবী এস এস আদাস আর্জি জানান, ওই মেয়েটির ভাই, গণেশের বয়স কম। তাঁকে রেহাই দেওয়া হোক। কিন্তু চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি ৭ অভিযুক্তের মধ্যে ৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন নাসিক জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক রাজেন্দ্রকুমার আর বৈষ্ণব। আজ ওই ছ’জন দোষীকে মৃত্যুদণ্ড শোনাল আদালত।

বিচারক বৈষ্ণব বলেন, ‘‘অন্যদের অনুভূতি বোঝার ক্ষমতা হারিয়েছে ওই দোষীরা। এমন মানুষদের সমাজে বেঁচে থাকার কোনও অধিকার নেই। তাই সমাজকে বাঁচাতে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে।’’ বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি উজ্জ্বল নিকম দোষীদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে সরকারকে ওই ক্ষতিপূরণ নিহতদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Honour Killing Sentenced to death Dalit Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE