Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জোটে নেই, বেশি আসন চেয়ে চাপ দিচ্ছেন কেজরীবাল

রাজধানীতে বিজেপিকে রুখতে জোট চেয়েছিল দু’দলই। সাত লোকসভা আসনের দিল্লিতে কে ক’টি আসনে লড়বে, তা নিয়ে প্রাথমিক রফাসূত্রেও রাজি হয়েছিল কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টি (আপ)।

বিরোধী মহাজোটে নেই আম আদমি পার্টি, ঘোষণা কেজরীবালের। —ফাইল ছবি

বিরোধী মহাজোটে নেই আম আদমি পার্টি, ঘোষণা কেজরীবালের। —ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৮ ০৩:২৮
Share: Save:

রাজধানীতে বিজেপিকে রুখতে জোট চেয়েছিল দু’দলই। সাত লোকসভা আসনের দিল্লিতে কে ক’টি আসনে লড়বে, তা নিয়ে প্রাথমিক রফাসূত্রেও রাজি হয়েছিল কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টি (আপ)। কিন্তু গত কাল রাজ্যসভায় ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী হারতেই তলে তলে বেশি আসনের দাবিতে সরব হল অরবিন্দ কেজরীবালের দল। যাকে কেন্দ্র করে নতুন করে চাপান-উতোর শুরু হল দুই শিবিরে। যদিও অজয় মাকেন এবং শীলা দীক্ষিতের দুই বিবদমান গোষ্ঠী মিশে যাওয়ায় কেজরীবালের চাপের কাছে মাথা নোয়াতে নারাজ রাজ্য কংগ্রেস। দলের একাংশের মতে, কেজরীবালের সাহায্য ছাড়াই সাতটির মধ্যে অধিকাংশ আসনে জিতবে কংগ্রেস।

কাল রাজ্যসভায় ভোটাভুটি বয়কট করে আপ। শুরুতে কংগ্রেসের প্রার্থীকে সমর্থনে রাজি ছিলেন কেজরীবাল। কিন্তু শর্ত ছিল, রাহুল গাঁধী যেন তাঁকে ফোন করেন। কিন্তু রাহুল তা করেননি। ফলে পিছিয়ে আসে আপ। কাল কংগ্রেস প্রার্থী হেরে যেতেই কেজরীবাল জানিয়েছেন, বিজেপি-বিরোধী মহাজোটে থাকছে না আপ। তাঁর এই হুমকিকে অবশ্য বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না কংগ্রেস। দলের বক্তব্য, সময় বুঝে আসন নিয়ে দর কষাকষিতে নেমেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। জোট থেকে কেজরীবালের সরে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিরোধী ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা হলেও লোকসভা ভোটের আগে দেখবেন, সবাই একসঙ্গেই রয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলকে একত্রিত করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চেষ্টা করছেন। বিরোধী শক্তিকে একসঙ্গে দেখতে চায় মানুষ। ফলে কেউ ফাটল ধরানোর চেষ্টা করলেও তাতে ক্ষতি হবে না।’’

সিপিএম অবশ্য পাল্টা বিঁধেছে তৃণমূলকেই। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘ফেডারেল ফ্রন্টের জন্য মুখ্যমন্ত্রী প্রথম যাদের সঙ্গে বৈঠক করেন, সেই টিআরএস রাজ্যসভায় ভোট দিয়েছে বিজেপির পক্ষে। ব্রিগেডে যাদের আমন্ত্রণ জানানোর কথা শোনা যাচ্ছে, তাদের কী অবস্থা? বিজেডি-শিবসেনা রাজ্যসভায় সমর্থন করেছে বিজেপিকে। এখন কেজরীবাল এই কথা বলছেন। আমরা প্রথম থেকেই বলছি, ফেডারেল ফ্রন্টের নামে বিজেপির হাত শক্তের চেষ্টা হচ্ছে।’’

কর্নাটক ও উত্তরপ্রদেশের অভিজ্ঞতা থেকে কংগ্রেস বুঝেছে, একমাত্র বিরোধীদের জোট হলে তবেই বিজেপিকে হারানো সম্ভব। তাই বিজেপি-বিরোধী সমস্ত শক্তিকে একটি মঞ্চে আনতে চাইছে কংগ্রেস। সেই লক্ষ্যে আপের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনায় ঠিক হয়েছিল, দিল্লিতে সাতটির মধ্যে পাঁচটি আসনে লড়বে কংগ্রেস, দু’টিতে আপ। তবে দিল্লির শাসক দল হওয়ার সুবাদে এই সমীকরণে আপের একটি বড় অংশের আপত্তি ছিল। নিমরাজি ছিলেন কেজরীবাল নিজেও। গত কাল কংগ্রেস প্রার্থী হারার পরেই হরিয়ানার রোহতকের সভা-মঞ্চ থেকে তিনি বলেছেন, ‘‘মহাজোটে যোগ দেওয়া দলগুলি দেশের উন্নতিতে কোনও ভূমিকাই রাখেনি। তাই আমাদের দল ওই জোটে থাকবে না।’’ আপ নেতার মতে, বিরোধী ঐক্যের প্রশ্নে সব চেয়ে বড় বাধা কংগ্রেসই।

প্রাক্তন সাংসদ শরদ যাদব আজ জানান, আগামী ১৬ তারিখে তাঁর ‘সাঁঝি বিরাসত’ কর্মসূচির বৈঠকে প্রায় সমস্ত বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আগের বৈঠকগুলিতে প্রধান বিরোধী দলগুলির নেতারা হাজির ছিলেন। কেজরীবাল ও শরদ অতীতে পরস্পরের সমর্থনে মুখ খুলেছেন। ১৬ তারিখ আপ নেতা বৈঠকে আসেন কি না, আপাতত সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

AAP Opposition Alliance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE