উল্লাস এবিভিপি সমর্থকদের। ছবি: টুইটার।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এ বার জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়। ‘বাম দুর্গ’ বলে পরিচিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নির্বাচনেও সাফল্য পেল অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জেএনইউ-এ অবশ্য সব ক’টি আসন তুলে নিতে পারেনি তারা। মিলেছে শুধু যুগ্ম-সম্পাদকের আসনটি। কিন্তু সীতারাম ইয়েচুরি-প্রকাশ কারাটের আঁতুড়ঘর, বামপন্থী ও অতি-বামপন্থী রাজনীতির আখড়া হিসেবে পরিচিত জেএনইউ-এ এই একটি আসন জেতাকেই যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কারণ, প্রায় ১৪ বছর পরে জেএনইউ-এ খাতা খুলল এবিভিপি। দলের ছাত্র সংগঠনের এই সাফল্যে খুশি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের যুক্তি, দিল্লির এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘মিনি ইন্ডিয়া’ বলা যায়। সারা দেশের পড়ুয়ারা এখানে পড়তে আসেন। এবিভিপি-র সাফল্যই বলছে, তরুণ প্রজন্ম মোদী সরকারের নীতিকে সমর্থন করছে।
এবিভিপি-র মতোই জেএনইউ-এ এ বার সকলকে চমকে দিয়ে ছাত্র সংসদের সভাপতি পদে জয়ী হয়েছে সিপিআইয়ের ছাত্র সংগঠন এআইএসএফ। ওই পদে জয়ী কানহাইয়া কুমার ক্যাম্পাসে সভাপতি পদের জন্য বিতর্কে সকলের মন জয় করে ফেলেছিলেন। এক দিকে বিজেপির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও শিক্ষায় গৈরিকীকরণের অভিযোগ তুলে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ওঁরা আর কোথাও রাম দেখতে পান না। শুধু বাবরি মসজিদেই দেখতে পান।’’ আবার ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে বাম জোট ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়া নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এর জন্য আঙুল তুলেছিলেন অন্য বাম সংগঠনগুলির দিকে। রাষ্ট্রপতি পদে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন করা নিয়ে জেএনইউ-এ এসএফআই-তে ভাঙন ধরে। তৈরি হয় ডিএসএফ। অতীতে এসএফআই ও এআইএসএফ জেএনইউ-তে জোট বেঁধে লড়লেও গত বছর এআইএসএফ হাত মিলিয়েছিল ডিএসএফ-এর সঙ্গে। এ বার তিন দলই পৃথক ভাবে লড়েছিল। এসএফআই, ডিএসএফ চারটি শীর্ষ পদের একটিও না পেলেও কানহাইয়া সভাপতি পদে জিতে গিয়েছেন। গত কয়েক বছর ধরে চারটি পদেই জিতে আসা আইসা প্রার্থীকেও পিছনে ফেলে দিয়েছেন তিনি। জেতার পর কানহাইয়া জানিয়েছেন, যদি পুণের এফটিআইআই-এর মতো জেএনইউ-তেও ‘গৈরিকীকরণের’ চেষ্টা হয়, তা সর্বশক্তি দিয়ে রোখা হবে।
সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ এ বারও আইসা দখল করেছে। কিন্তু সেখানেও দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে এবিভিপি। বাজপেয়ী জমানায় কয়েক বার জেএনইউ-তে সাফল্য পেয়েছিল বিজেপির ছাত্র সংগঠন। ২০০১-এ সন্দীপ মহাপাত্র জেএনইউ-এর ছাত্র সংসদের ভোটে সভাপতির পদে জিতেছিলেন। তার এত বছর পরে ফের সাফল্য। জেএনইউ-এ এবিভিপি-র এই উত্থান দেখে প্রাক্তন ছাত্র নেতারা মনে করছেন, বামেদের একজোট হয়ে লড়া দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy