Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

কাজে, বেতনে নারী-বৈষম্য বেশি ভারতে, বলছে সমীক্ষা

দেশে মহিলাদের উপরে অত্যাচার বেড়ে চলায় সর্বস্তরে উদ্বেগ বাড়ছে। তারই পাশাপাশি সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা দেখাচ্ছে, কর্মক্ষেত্র হোক বা ইন্টারনেটের ব্যবহার, দক্ষিণ এশিয়ায় নারীদের প্রতি বৈষম্যের তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে ভারত!

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৮ ০৪:২২
Share: Save:

দেশে মহিলাদের উপরে অত্যাচার বেড়ে চলায় সর্বস্তরে উদ্বেগ বাড়ছে। তারই পাশাপাশি সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা দেখাচ্ছে, কর্মক্ষেত্র হোক বা ইন্টারনেটের ব্যবহার, দক্ষিণ এশিয়ায় নারীদের প্রতি বৈষম্যের তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে ভারত!

পরামর্শদাতা সংস্থা ম্যাকেন্সি লিঙ্গবৈষম্য নিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্সের এক অনুষ্ঠানে যে-রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তাতেই উঠে এসেছে এই তথ্য। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতে কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের সুযোগ চিন, জাপান, ফিলিপিন্স, মায়ানমার, বাংলাদেশের থেকেও কম। এ দেশে ৩০% মহিলা কর্মরত। বেতন-বৈষম্যেও ভারত প্রথম সারিতে। ৫০% মহিলা একই কাজে কম বেতন পান। পাকিস্তানে সেই হার ৪৮%, বাংলাদেশে ৪৬%।

ম্যাকেন্সির রিপোর্ট অনুযায়ী ৭২% ভারতীয় মহিলা নেট দুনিয়ার সুবিধা পান। জাপান, কম্বোডিয়া বা তাইল্যান্ডের তুলনায় যা অনেকটাই কম। সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মহিলাদের এই অবস্থা উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা জানান, বিভিন্ন সংস্থা সামাজিক দায়বদ্ধতার আইনের বাধ্যবাধকতার জন্য মহিলাদের নিয়োগ করছে। কিন্তু বেতনে বৈষম্য থাকছে। বাড়তি কাজ করানো হচ্ছে মহিলাদের দিয়ে, যা তৈরি করছে বৈষম্যের নয়া সমীকরণ।

বঞ্চনার বারোমাস্যা

• ৩০% মহিলা কর্মরত।

• কর্মরত মহিলাদের ৫০% বেতন-বৈষম্যের শিকার।

• ৭২% মহিলা ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পান।

• কর্মস্থলে ৩৭% মহিলা হেনস্থার শিকার।

• ৭০% ভারতীয় মনে করেন, কর্মরতাদের সন্তানেরা অবহেলিত।

তথ্যসূত্র: পরামর্শদাতা সংস্থা ম্যাকেন্সির সাম্প্রতিক রিপোর্ট

মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞ তুষার বসু বলেন, ‘‘কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের গুরুত্ব বাড়লে তবেই বৈষম্য কমবে।’’ নারী আন্দোলন কর্মী শাশ্বতী ঘোষের ব্যাখ্যা, কাজের বাজারে অংশগ্রহণ কম হওয়ায় বেতন নিয়ে মহিলারা দরাদরির সুযোগ পাচ্ছেন না। সেই জন্য বৈষম্য বেড়েই চলেছে।

আরও পড়ুন: মেয়েদের সুরক্ষা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিশানা রাহুলের

রিপোর্ট বলছে, ৭০% ভারতীয় মনে করেন, কর্মরত মহিলাদের সন্তান অবহেলার শিকার। স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে কর্মরতাদের সন্তানেরা পছন্দের তালিকায় পিছনের সারিতে থাকে। শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, ‘‘স্কুলের পাঠ্যবই প্রথম শেখায়, বাবা খবরের কাগজ পড়়ছেন, অফিস যাচ্ছেন। কিন্তু মা রান্না করছেন। শিক্ষা ব্যবস্থায় পিতৃতান্ত্রিক মনোভাব কত প্রবল, এটা তার প্রমাণ।’’ তবে তিনি মনে করেন, সন্তানের জন্মের পর থেকেই বাবা-মায়ের দায়িত্ব সমান গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে তুলে ধরার ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চালিয়ে গেলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE