Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ভারাভারা-গৌতমেরা মাওবাদীই, কোর্টে যুক্তি পুলিশের

ভারাভারা রাও, সুধা ভরদ্বাজ, গৌতম নওলাখা-সহ পাঁচ সমাজকর্মীই সিপিআই (মাওবাদী)-র সক্রিয় সদস্য বলে মহারাষ্ট্র পুলিশ সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানাল। পুলিশের দাবি, নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-র কর্মসূচি অনুযায়ী বড় মাপের নাশকতার মধ্য দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁরা।

এক অনুষ্ঠানে ‘আমিও শহুরে নকশাল’ প্ল্যাকার্ড নিয়ে গিরীশ কারনাড। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া।

এক অনুষ্ঠানে ‘আমিও শহুরে নকশাল’ প্ল্যাকার্ড নিয়ে গিরীশ কারনাড। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:২৭
Share: Save:

ভারাভারা রাও, সুধা ভরদ্বাজ, গৌতম নওলাখা-সহ পাঁচ সমাজকর্মীই সিপিআই (মাওবাদী)-র সক্রিয় সদস্য বলে মহারাষ্ট্র পুলিশ সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানাল। পুলিশের দাবি, নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-র কর্মসূচি অনুযায়ী বড় মাপের নাশকতার মধ্য দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁরা। তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করার প্রমাণও আছে বলেও দাবি পুলিশের।

গত ২৮ অগস্ট ভীমা কোরেগাঁওতে হিংসার মামলায় পাঁচ সমাজকর্মীকে গ্রেফতার করে পুণে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রোমিলা থাপার, প্রভাত পট্টনায়ক-সহ পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক। অভিযোগ ছিল, ওই পাঁচ সমাজকর্মী কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধ মতাবলম্বী বলেই তাঁদের উপরে কোপ পড়েছে। তাঁদের ব্যক্তি-স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট সেই অভিযোগ শুনে মনে করিয়ে দিয়েছিল, বিরুদ্ধ মতই ‘সেফটি ভাল্‌ভ’। সেটি না থাকলে প্রেশার কুকারটাই ফেটে যাবে। বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত ওই পাঁচ জনকে পুলিশি হেফাজতে না-নিয়ে গৃহবন্দি করে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।

মহারাষ্ট্র পুলিশ আজ যুক্তি দিয়েছে, বিরুদ্ধ মত বা মতাদর্শগত বিরোধিতার জন্য ওই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়নি। মাওবাদীদের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগের ‘অকাট্য প্রমাণ’ রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে হলফনামায় পুণে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শিবাজী পওয়ার যুক্তি দিয়েছেন, বিরুদ্ধ মত বা মতাদর্শগত বিরোধিতায় নিষেধাজ্ঞা চাপানোর বদলে গণতান্ত্রিক দেশে তাকে স্বাগত জানানোই উচিত। রোমিলা থাপার, প্রভাত পট্টনায়কদের অভিযোগের বিষয়ে মহারাষ্ট্র পুলিশের যুক্তি, ব্যক্তিগত ধারণার ভিত্তিতেই তাঁরা ওই কথা বলেছেন। সেই ধারণা হল, ধৃতরা সকলেই বিশিষ্ট, সুপরিচিত ও সম্মানিত মানবাধিকার-যোদ্ধা। কিন্তু ধৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখার কোনও আর্জি বিশিষ্টেরা জানাননি। তদন্ত নিয়ে তাঁদের কিছু জানাও নেই। কিন্তু তাঁদের ধারণা ভুল প্রমাণ করার মতো প্রমাণ ধৃতদের ল্যাপটপ, মোবাইল, কম্পিউটার থেকে উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি, এর আগে ভীমা কোরেগাঁওয়ের ঘটনায় রোনা উইলসন, সোমা সেনের মতো যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাঁদের থেকেও প্রমাণ মিলেছে। গত ১ জানুয়ারি পুণের ভীমা-কোরেগাঁওতে দলিত বিজয় দিবসের বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানের পরেই এলাকায় হিংসা ছড়ায়। তার জন্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের দিকে আঙুল তোলেন আয়োজকেরা। হলফনামায় পুলিশের যুক্তি, সিপিআই (মাওবাদী)-ই ‘এলগার পরিষদ’-এর ব্যানারে ৩১ ডিসেম্বর জনসভার আয়োজন করেছিল। ‘এলগার’ শব্দটি আসলে এসেছে ‘ইয়ালগার’ থেকে। যার অর্থই হল ‘হামলা’।

পাঁচ ধৃতকে তাদের হেফাজতে তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়ে পুলিশের যুক্তি, ঘরবন্দি থেকেও অভিযুক্তেরা প্রমাণ নষ্ট করতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE