Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হাইলাকান্দিতে বাল্য বিবাহ রুখল প্রশাসন

মঙ্গলাচরণ হয়ে গিয়েছে। বিয়ের প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। এরই মধ্যে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা বিয়ে বাড়িতে উপস্তিত হয়ে বন্ধ করে দিল নাবালিকার বিয়ের অনুষ্ঠান। স্তব্ধ হয়ে গেল সানাইয়ের বাজনা আর নাচগান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাইলাকান্দি শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩৭
Share: Save:

মঙ্গলাচরণ হয়ে গিয়েছে। বিয়ের প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। এরই মধ্যে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা বিয়ে বাড়িতে উপস্তিত হয়ে বন্ধ করে দিল নাবালিকার বিয়ের অনুষ্ঠান। স্তব্ধ হয়ে গেল সানাইয়ের বাজনা আর নাচগান।

ঘটনাটি ঘটেছে হাইলাকান্দির বড়বন্ধ গ্রামে। জেলা শিশু সুরক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাইলাকান্দি সার্কেলের প্রত্যন্ত গ্রাম বড়বন্ধ তৃতীয় খন্ডের এক পরিবারে ওই বিবাহের আয়োজন চলছে বলে খবর আসে। বিয়ে রুখতে শুরু হয় তৎপরতা। এগিয়ে আসে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, সংগীতা মহিলা সমিতি। দেরী না করে জেলা শিশুসুরক্ষা আধিকারিক জিতুল বরার নেতৃত্বে একটি দল ও সদর পুলিশ শুক্রবার ওই গ্রামে হাজির হয়। বিয়ের দিন ঠিক হয়ে ছিল রবিবার, ১২ মার্চ। বাড়িতে আত্মীয়স্বজনরাও পৌঁছে গিয়েছেন। সামাজিক রীতিনীতি অনুসারে গানবাজনা, ধামাইল ইত্যাদিও চলছে যথারীতি।

এরই মধ্যে প্রশাসন ও পুলিশের কর্তারা বিয়ে বাড়িতে হাজির হওয়ায় ভিড় জমে যায়। জিতুলবাবু মেয়ের বাবা, দীপঙ্কর দাসকে জানান, তিনি ১৫ বছরের নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিতে পারেন না। তা আইনত অপরাধ। মেয়ের বাবা দাবি করেন, মেয়ের বয়স আঠারো।
তবে এ সংক্রান্ত কোন প্রমাণ তিনি দেখাতে পারেননি। মেয়ের বাবার মাথায় হাত। বিয়ের নিমন্ত্রণ হয়ে গেছে। বাজারহাটও শেষ। পাত্রও প্রস্তুত। অপেক্ষা শুধু বিয়ের। বাবা-মা কান্নাকাটি শুরু করেন। জিতুলবাবু জানিয়ে দিলেন, আইনকে উপেক্ষা করে তাঁরা এই বিয়ে দিতে গেলে তাঁদের গ্রেফতার করা হবে। অবশেষে আইনের রক্ত চক্ষু দেখে পিছু হঠেন মেয়ের বাবা। এ ব্যাপারে তাঁকে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের কাছে একটি মুচলেকা দিতে হয়।

নাবালিকা এই কনের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছুল পাশের গ্রামের সুনীল দাসের পুত্র উদয়শঙ্করের সঙ্গে। উদয়ের বয়স অবশ্য ২৩ বছর। জিতুলবাবু তাঁদেরও জানিয়ে দেন, বিয়ের চেষ্টা হলে তাঁদেরও গ্রেফতার করা হবে। পুলিশ ছেলের বাবার কাছ থেকেও হলফনামা লিখিয়ে নেয়।

হাইলাকান্দি জেলায় এই প্রথম সরকারি প্রচেষ্টায় বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করা হল। এ ব্যাপারে জিতুল বরা বলেন, জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ ভাবে মাঝে মধ্যেই বাল্য বিবাহের ঘটনা ঘটছে। তবে ঘটনা গ্রামে গ্রামে রটে গেলে একটি বার্তা যাবে। এ ব্যাপারে গ্রামের মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিরও সহযোগিতা চান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Administration Hailakandi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE