Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

অনুরাগের ছোঁয়া নেই আডবাণীর, বাতিল নেট-বৈঠক

বিরোধীদের সুরে সুর মিলিয়ে নিজের দলের নেতাদের মতামতের বিরুদ্ধে গিয়েই সংসদের স্থায়ী কমিটির বৈঠক কার্যত ভেস্তে দিলেন বিজেপির প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী। ঘটনাস্থল, নেট নিরপেক্ষতা নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির বৈঠক। কমিটির চেয়ারম্যান বিজেপির অনুরাগ ঠাকুর বর্তমান নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০৩:৩২
Share: Save:

বিরোধীদের সুরে সুর মিলিয়ে নিজের দলের নেতাদের মতামতের বিরুদ্ধে গিয়েই সংসদের স্থায়ী কমিটির বৈঠক কার্যত ভেস্তে দিলেন বিজেপির প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী। ঘটনাস্থল, নেট নিরপেক্ষতা নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির বৈঠক। কমিটির চেয়ারম্যান বিজেপির অনুরাগ ঠাকুর বর্তমান নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সেখানে তাঁর মতের উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে থাকা বিরোধী দলগুলিকে সমর্থন জানিয়ে আডবাণী যে ভাবে ম্যাচ বার করে আনলেন, তাতে শাসক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তাঁর বিরাগই ফের ফুটে উঠল বলে মনে করছেন অনেকে।

তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ দিন তিনটি মোবাইল পরিষেবা সংস্থা (ভোডাফোন, আইডিয়া, এয়ারটেল)-কে মতামত নেওয়ার জন্য ডাকা হয়। এই
কমিটি এমনিতে তারকাখচিত। কিন্তু জাভেদ আখতার, জয়া বচ্চন, হেমা মালিনী, সচিন তেন্ডুলকরের মতো তারকা সদস্যরা এ দিন বৈঠকে ছিলেন না। বস্তুত, মোট ত্রিশ জন সদস্যের মধ্যে ছিলেন মাত্র আট জন।
অনুরাগ এবং আডবাণী ছাড়া বিজেপির ছিলেন আর এক সাংসদ সুনীল গায়কোয়াড়। এ ছাড়া কংগ্রেস, তৃণমূল, বিএসপি থেকে ছিলেন পাঁচ জন। অনুরাগের
পাশে দাঁড়ান সুনীল। কিন্তু বিরোধীদের সঙ্গে আডবাণী যোগ দেওয়ার পরে দেখা যায়, হাজির ছ’জনই অনুরাগের মতের বিরোধী।

এ দিনের বৈঠকে বিরোধীরা দাবি করেন, নেট নিরপেক্ষতা নিয়ে কোনও আইন করতে গেলে শুধু টেলি পরিষেবা সংস্থাই নয়, উপভোক্তা, সব রকম কনটেন্ট ও অ্যাপ নির্মাতা সংস্থারও মত নিতে হবে। তাঁদের বক্তব্য, এ দিন ডাকা হয়েছে শুধু তিন টেলি পরিষেবা সংস্থাকে। হোয়াটসঅ্যাপ, স্কাইপ, বিবিএমের মতো কনটেন্ট ও অ্যাপ নির্মাতা সংস্থাগুলির মতও নেওয়া দরকার।

প্রতিবাদ প্রথম শোনা যায় তৃণমূলের দিক থেকে। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় কংগ্রেস ও বিএসপি। বিরোধীদের বক্তব্য, এই বৈঠকে শুধুমাত্র তিনটি সংস্থার প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে। বিরোধীদের সমর্থন করেন আডবাণীও। এই পরিস্থিতিতে অনুরাগ ঠাকুর বলেন, আপাতত ওই তিন জনের মতামতই আজ শুনে নেওয়া হোক, বাকিদের পরের বৈঠকে ডাকা যাবে। কিন্তু আডবাণী বলেন, অধিকাংশ সদস্য যা বলছেন, তা সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত। আজকের বৈঠক স্থগিত রেখে পরবর্তী বৈঠকে বাকিদের উপস্থিত থাকতে বলা হোক। তার পরই ওই তিন সংস্থার সঙ্গে
বৈঠক বাতিল করে দিতে হয় চেয়ারম্যান অনুরাগকে।

কিন্তু যে ভাবে আজ আডবাণী বিরোধিতা করলেন, তাতে বিজেপির অন্তর্কলহেরই আভাস দেখছেন নেতারা। প্রবীণ রাজনীতিক হিসেবে আডবাণী স্থায়ী কমিটিতে নিয়ম মেনে চলবেন, এর মধ্যে অস্বাভাবিকতা কিছু দেখছেন না তাঁরা। কিন্তু বিরোধীদের পাশে দাঁড়িয়ে যে ভাবে তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ অনুরাগকে থামিয়ে দিলেন, তাতে স্পষ্ট, বিজেপি নেতৃত্বের প্রতি এখনও তিনি যথেষ্ট অসন্তুষ্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE