প্রতীকী ছবি।
তাঁর মতো লড়াকু বোধহয় দেখা যায় না। জীবদ্দশা তো বটেই, মৃত্যুর পরেও লড়াই চালিয়ে গেলেন তিনি। তাও মাত্র ৩১২ টাকার জন্য!
১৯৭৫ সাল। মিরজাপুরের গঙ্গা দেবী। যখন তাঁর ৩৭ বছর বয়স মিরজাপুর জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পক্ষ থেকে সম্পত্তি সংক্রান্ত নোটিশ পাঠানো হয়। তার প্রতিবাদ করে তিনিও মামলা করেন। টানা দু’বছর লড়াইয়ের পর অর্থাৎ ১৯৭৭ সালে তাঁর পক্ষেই বিচারক রায় দেন।
কিন্তু যদি ভেবে থাকেন এখানেই তাঁর লড়াই শেষ হয়ে গেল, ভুল ভাবছেন। এর থেকে অনেক তুচ্ছ বিষয়ে অনেক বড় লড়াই লড়তে হয়েছে তাঁকে।
কী রকম?
চার্জ গঠন হওয়ার সময় কোর্ট ফি হিসেবে বিচারক কাঁকে ৩১২ টাকা জমা দিতে বলেছিলেন। তিনি কোর্ট ফি জমাও দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর পক্ষে মামলার রায়ের কপি নেওয়ার সময় কোর্ট ফি-এর রিসিপ্টটা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। মামলার রায়ের কপি হাতে পাওয়ার জন্য তিনি যে কোর্ট ফি জমা দিয়েছেন তা প্রমাণস্বরূপ রশিদের প্রয়োজন। আরও একবার ৩১২ টাকা কোর্ট ফি জমা করে তিনি নির্দিধায় রায়ের কপি সংগ্রহ করে নিতে পারতেন। কিন্তু তা করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন গঙ্গা দেবী।
আরও পড়ুন: শ্বশুরবাড়িতে পুড়ে মৃত্যু হয়েছিল মেয়ের, সুবিচার চেয়ে এখনও অপেক্ষা করে চলেছেন মা
৩১২ টাকা কোর্ট ফি দেওয়া সত্ত্বেও তাঁকে রায়ের কপি হস্তান্তর করা হয়নি, এই মর্মে ফের মামলা করেন গঙ্গা দেবী। সালটা ১৯৭৭। তারপর ৪১ বছর ধরে ১১ বিচারকের হাত ঘুরে মামলার ফাইল পৌঁছয় বিচারক জয়সবালের এজলাসে। ৩১ অগস্ট ২০১৮ সালে সেই মামলার রায় ঘোষিত হয়। ৪১ বছর পর ৩১২ টাকার মীমাংসা হল। লড়াই করে ফের জয় ছিনিয়ে নিলেন গঙ্গা দেবীই।
তবে ৩১ অগস্ট যখন এই রায় দেওয়া হয়, তা দেখার জন্য গঙ্গা দেবী অবশ্য কোর্টে উপস্থিত ছিলেন না। উপস্থিত ছিলেন না তাঁর পরিবারের লোকেরাও। কারণ ২০০৫ সালে মৃত্যু হয়েছে গঙ্গা দেবীর। আর পরিবার কেউ কোর্টে না আসায় রায়ের একটি কপি স্পিড পোস্টে তাঁর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy