জনজাতি সংঘর্ষের ২৪ ঘণ্টা পরে স্বাভাবিক হচ্ছে আগরতলা। তবে আজও শহরে টহল দিয়েছে বিএসএফ, সিআরপি, টিএসআর ও রাজ্য পুলিশ। অফিস-কাছারি, বাজারহাট খোলা থাকলেও রাস্তায় মানুষ কম। গাড়িও অল্প। সরকারও ঝুঁকি নিতে চাইছে না, তাই শহর জুড়ে ১৪৪ ধারা আজও জারি। পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাশাসক মিলিন্দ রামটেক জানান, ‘‘২৫ অগস্ট গভীর রাত পর্যন্ত ১৪৪ ধারা থাকবে।’’ পুর এলাকার বাইরে হলেও শহরতলির উপজাতি অধ্যুষিত হেজামারায় আতঙ্কের জন্য চলছে অঘোষিত বন্ধ।
গত কালের অভিজ্ঞতা আগরতলার মানুষের কাছেই নতুন। প্রবীণরা বলছেন, আগরতলায় এমন ঘটনা এই প্রথম। এই শহর কার্ফু দেখেছে, ১৪৪ ধারাও জারি হয়েছে, কিন্তু শহরবাসীর উপর এমন হামলা এই প্রথম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীণের দৃঢ় ধারণা, ‘‘এ আক্রমণ পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক!’’ তাঁর বক্তব্য, আইপিএফটি কর্মীদের মারমুখী আচরণের কথা সবাই জানেন। তার পরেও প্রশাসন কী ভাবে উপযুক্ত পাহারা ছাড়া মিছিল বেরোতে দিল! এই অঙ্কটাই মিলছে না।
ঘটনা নিয়ে শাসক-বিরোধী চাপানোউতোর শুরু হয় গত কালই। আইপিএফটি-র প্রধান এন সি দেববর্মা বলেন, ‘‘গত কাল কিছু দুষ্কৃতী আইপিএফটি মিছিল নিয়ে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করে। আইপিএফটিকে কোণঠাসা করতেই এই পরিকল্পনা।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজ্য-রাজনীতিতে চাপের মুখে দাঁড়ানো সিপিএমের উস্কানিতেই কালকের গন্ডগোলকে জাতি-সংঘর্ষের রূপ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।’’ কাল কিছু ক্ষণের জন্য সমর্থকদের উপরে যে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ ছিল না, তা-ও স্বীকার করেন। হাইকোর্টের কোনও বিচারপতিকে দিয়ে তদন্ত কমিশন গঠনেরও দাবি জানান তিনি। সিপিএমের উপজাতি সংগঠন— গণমুক্তি পরিষদের সম্পাদক রাধাচরণ দেববর্মা বলেন, ‘‘কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠীর উস্কানিতে অশান্তি তৈরি করেছে আইপিএফটি।’’ রাধাচরণবাবু কোনও দলের নাম না করলেও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘শান্তি-সম্প্রীতি নষ্টের ছক আইপিএফটি-র। এতে তৃণমূল ইন্ধন দিয়েছে।’’ অনুমতি না-পাওয়ায় তৃণমূল আজ ‘শান্তি মিছিল’ করতে পারেনি। তৃণমূল নেতা আশিস সাহা বলেন, ‘‘সিপিএম বিভাজনের রাজনীতি করছে। সত্য সামনে আনতে আমরা বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy