Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

গণপিটুনির বিরুদ্ধে প্রচারে এহসান-কন্যা

আমেরিকায় ডেলাওয়ারের বেয়ার শহরতলি থেকে ফোনে নিশরিন বলেন, ‘‘ভারতে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেই চলেছে। আসলে আগেকার ঘটনা থেকে লোকে বুঝে গিয়েছে যে এ সব করেও পার পাওয়া যাবে। তাই কারও ভয়ডর নেই। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশিকা দিলেও কারও হেলদোল নেই। বরং গণপিটুনিতে অভিযুক্তদের মালা পরানো হয়। এটাই দুর্ভাগ্যজনক।’’

বাবার সঙ্গে কিশোরী নিশরিন।

বাবার সঙ্গে কিশোরী নিশরিন।

স্বাতী মল্লিক
শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৮ ০৫:১৯
Share: Save:

গুজরাত হিংসার সময়ে আমদাবাদের গুলবার্গ সোসাইটি আবাসনে তাঁর বৃদ্ধ বাবা, প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরিকে কুপিয়েছিল উন্মত্ত জনতা, তার পর পুড়িয়ে মেরেছিল। আমেরিকায় বসে তিনি শুনেছিলেন সেই খবর। ১৬ বছর পর, গণপিটুনির বিরুদ্ধে অনলাইন প্রচারে
নামলেন এহসান-কন্যা নিশরিন জাফরি হুসেন।

আমেরিকায় ডেলাওয়ারের বেয়ার শহরতলি থেকে ফোনে নিশরিন বলেন, ‘‘ভারতে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেই চলেছে। আসলে আগেকার ঘটনা থেকে লোকে বুঝে গিয়েছে যে এ সব করেও পার পাওয়া যাবে। তাই কারও ভয়ডর নেই। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশিকা দিলেও কারও হেলদোল নেই। বরং গণপিটুনিতে অভিযুক্তদের মালা পরানো হয়। এটাই দুর্ভাগ্যজনক।’’ দাদরির আখলাখ থেকে অলওয়ারের আকবর খান, গো-হত্যা থেকে চুরি-ডাকাতি-শিশুপাচারকারী সন্দেহে গণপিটুনি— মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গণপিটুনিতে নিহতের সংখ্যা অন্তত ২০ জন। সে প্রসঙ্গের উল্লেখ করে নিশরিন বলেন, ‘‘সম্প্রতি ভিডিয়োয় অলওয়ারে নিহত আকবর খানের মেয়েদের দেখছিলাম, নিজেকে সামলাতে পারিনি। আমরা যারা ভুক্তভোগী, যারা এ ভাবেই নিজেদের প্রিয়জনকে হারিয়েছি, তাদের পক্ষে এগুলো দেখে চুপ থাকা খুব কঠিন।’’

গণপিটুনির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়ে বিজেপির বিক্ষুব্ধ সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্‌হাকে লেখা একটি চিঠি সম্প্রতি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন নিশরিন। সেখানেই দেশবাসীকে সই করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তাঁর বাবাকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে মারার ঘটনা এখনও তাঁর জীবনে জড়িয়ে রয়েছে। তবে তিনি ভেবেছিলেন, ভারতে আর এই ঘটনা ঘটবে না। কিন্তু এখনও ভারতে নানা অজুহাতে যুবকদের পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটছে। তাই জনপ্রতিনিধি হিসেবে শত্রুঘ্ন যেন রুখে দাঁড়ান। নিশরিনের দাবি, হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুক মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার মানুষ এই প্রচারে সাড়া দিয়েছেন। ১ অগস্ট সই-সমেত সেই চিঠি সাংসদের মুম্বই ও দিল্লির বাড়িতে পাঠিয়েছেন নিশরিন।

কেন শত্রুঘ্ন? নিশরিন বলছেন, ‘‘ছোট থেকেই ফিল্মে ওঁকে রক্ষাকর্তা হিসেবেই দেখে এসেছি। বাস্তবেও তিনি হিরো হতে পারবেন, সেই আশা থেকেই চিঠি। আশা করি, তিনি অন্তত এ ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ করবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lynching Nishrin Campaign
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE