Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
National News

এখানে মন্দির বানাব, চ্যাপেলের দরজায় লিখে দিয়ে গেল কারা!

একটি ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার। আর গতকালই অন্য ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। আজ, শনিবারের মধ্যেই চেয়েছেন প্রশাসনিক রিপোর্ট।

সেন্ট স্টিফেন্স কলেজের উপাসনাস্থলের দরজায় লেখা সেই স্লোগান।

সেন্ট স্টিফেন্স কলেজের উপাসনাস্থলের দরজায় লেখা সেই স্লোগান।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৮ ২০:৩৭
Share: Save:

কলেজের ভিতর খ্রিস্টানদের উপাসনাস্থলের (চ্যাপেল) দরজায় হিন্দিতে লেখা হয়েছে স্লোগান- ‘এখানেই মন্দির বানানো হবে।’ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট স্টিফেন্স কলেজের ভিতর। আর দিল্লিরই সফদরজঙ্গ এনক্লেভের হুমায়ুনপুর গ্রামে তুঘলক আমলের বহু প্রাচীন একটি সৌধে মন্দির বানানো হয়েছে বলে অভিযোগ। দু’টি ঘটনা নিয়েই তোলপাড় রাজধানী দিল্লি।

একটি ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার। আর গতকালই অন্য ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। আজ, শনিবারের মধ্যেই চেয়েছেন প্রশাসনিক রিপোর্ট।

খোদ রাজধানী দিল্লিতেই এমন দু’টি ঘটনায় অনেকের মনে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি আবার রামমন্দির নির্মাণ যজ্ঞের সেই কালো দিনগুলি ফিরিয়ে এনে নতুন করে গণ্ডগোল সৃষ্টির চেষ্টা চলছে? এই ভাবেই কি একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা, বিভিন্ন অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে মানুষের নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে অন্য দিকে?

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, গতকাল সন্ধ্যায় ছাত্রছাত্রীরা দেখেন, সেন্ট স্টিফেন্স কলেজের ভিতরের উপাসনাস্থলের (চ্যাপেল) দরজায় কেউ বা কারা লিখে গিয়েছেন স্লোগান- ‘এখানেই মন্দির বানানো হবে।’ সেখানে থাকা একটি ‘ক্রশ’কেও বিকৃত করা হয়েছে। তার উপর লেখা হয়েছে, ‘আমি নরকে যাচ্ছি।’

আরও পড়ুন- ক্যানসেলড চেকে প্রতারণা, মহিলার প্রায় ৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিল স্বামী-স্ত্রী!​

আরও পড়ুন- পছন্দমতো গান না শোনানোয় ডিস্ক জকিকে গুলি​

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সেন্ট স্টিফেন্স কলেজের এক ছাত্র বলেছেন, ‘‘আমি গতকাল ওই সব দেখিনি। আজ ভোরে (শনিবার) ‘জগিং’ করতে গিয়ে ওটা চোখে পড়ে। ফিরে এসে দেখি, কলেজের কর্মচারীরা সেগুলি মুছে ফেলছেন।’’

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রকি তুসেদ ওই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘এই ভাবে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যে ঘটনা ঘটেছে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে, সেই একই ঘটনা এখানেও ঘটেছে।’’

ও দিকে, দিল্লির সফদরজঙ্গ এনক্লেভের হুমায়ুনপুর গ্রামে বহু প্রাচীন একটি সৌধে মন্দির বানানোর খবর প্রকাশিত হওয়ার জেরে গতকালই ওই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। অভিযোগ, ওই ঐতিহ্যশালী সৌধটি পঞ্চদশ শতাব্দীর তুঘলক আমলের। শুক্রবার একটি ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য হিন্দু’-র সাংবাদিকরা হুমায়ুনপুর গ্রামে গেলে, স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের জানান, ওই সৌধের গায়ে চিত্রাঙ্কন করা হয়েছে গত মার্চে। ওই সময়েই সৌধটিতে বসানো হয়েছে অনেকগুলি হিন্দু মূর্তি। তাঁরা অবশ্য এও দাবি করেন, বহু দিন ধরেই সেটি মন্দির ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা বহু দিন ধরেই সেটিকে মন্দির বলে জানতেন। ওই ‘মন্দির’-এর শীর্ষে ধাতব অংশটিকে তাঁরা ‘বহু শতাব্দীর পুরনো’ বলেও দাবি করেছেন।

সেই ঐতিহ্যশালী সৌধে (হেরিটেজ) মন্দির গড়া হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, গতকাল তার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া রাজ্যের শিল্প, সংস্কৃতি ও ভাষা মন্ত্রকের সচিবকে আজ, শনিবারই সেই তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন তিনি।

গতকাল শিল্প সচিবকে দেওয়া নির্দেশে দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘ওই সৌধটি ঐতিহ্যশালী (হেরিটেজ প্রপার্টি)। তার নিরাপত্তার দেখভাল করার দায়িত্ব রয়েছে রাজ্যের পুরাতত্ত্ব দফতরের। কেউ কোনও হেরিটেজ সম্পত্তির ক্ষতি করলে বা নষ্ট করলে, তা আইন ভাঙার পর্যায়ে পড়ে। তা গুরুতর অপরাধও। ফলে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে পুরাতত্ত্ব দফতরকেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Manish Sisodia Delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE