একটি বিস্ফোরণ এবং নীরবতা!
বিস্ফোরণ বললেও কম বলা হয়। মুম্বইয়ের জুহুর বিখ্যাত পরিবারের অন্দরের কলহ নিয়ে ‘একদা’ পারিবারিক বন্ধু অমর সিংহ যে বোমাটা সম্প্রতি ফাটিয়েছেন, তাকে পরমাণু বিস্ফোরণই বলছিলেন কেউ কেউ। সংবাদমাধ্যমে সপা নেতা দাবি করেছেন, তাঁর সঙ্গে আলাপের দীর্ঘদিন আগে থেকেই অমিতাভ ও জয়া বচ্চন আলাদা থাকেন। কিন্তু গত কাল খবরটা ‘ভাইরাল’ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরেও এ নিয়ে নীরব
বচ্চন পরিবার। ঘরে-বাইরে নানান সম্পর্ক নিয়ে কৌতূহল আর বিতর্ক বরাবরই তাড়া করেছে বচ্চনদের। কিন্তু কার্যত কোনও বারই পাল্টা যুক্তি-তর্কের পথে যাননি তাঁরা। সেই ট্র্যাডিশন বজায় রয়েছে এ বারেও।
দিন কয়েক আগে অমর ছিলেন লখনউ-কলহের কেন্দ্রে। তখন অখিলেশ যাদব বলেছিলেন, অমর এবং শিবপাল যাদবের কলকাঠিতেই বাবা মুলায়মের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল ধরছে তাঁর। শেষ পর্যন্ত বাবা-ছেলের মিল হয়েছে। আর ফের একা পড়ে গিয়েছেন অমর। প্রশ্নটা রাখা হয়েছিল সপা-য় চিড় ধরার নেপথ্যে তাঁর সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়েই।
প্রশ্ন শুনে অমর বলেন, ‘‘সারা দেশে যাবতীয় ভাঙনের জন্য লোকে আমাকেই দায়ী করে। আমায় আর বচ্চনদের নিয়েও অনেক কথা বলা হয়। অথচ অমিতাভের সঙ্গে আমার আলাপের আগে থেকেই উনি এবং জয়া বচ্চন আলাদা থাকতেন। জয়া থাকেন ‘প্রতীক্ষা’য়, অমিতাভ থাকেন ‘জনক’ নামে অন্য একটি বাংলোয়।’’ অমরের দাবি, জয়া এবং তাঁর পুত্রবধূ ঐশ্বর্যার মধ্যে সমস্যা নিয়েও নানা জল্পনা রয়েছে। কিন্তু সে সবের জন্য তিনি দায়ী নন।
এ যাত্রা অবশ্য অমরের ‘ভাঙন-ভূমিকা’ নিয়ে আম সিনেভক্তদের মাথাব্যথা কম। বরং কৌতূহলের স্পটলাইটে বচ্চন দম্পতিই। তবে কি সব লোক-দেখানো? অ্যাওয়ার্ড ফাংশনে অমিতাভ-জয়ার পাশাপাশি বসা, মলদ্বীপে প্রমোদতরীতে গোটা বচ্চন পরিবারের ফটোফিচার, ‘কভি খুশি কভি গম’ ছবি থেকে বিজ্ঞাপনে আখছার অমিতাভ-জয়া জুটির পুরনো ঝলক— সব মিথ্যে?
প্রশ্ন উঠছে। উত্তর নেই।
কথাটা যদি সত্যিই হয়, তা হলে তার কারণ কী?
এরও উত্তর নেই। তবে অমরের দাবির পরে আরও এক বার চর্চা শুরু হয়েছে ‘বাস্তবের সিলসিলা’ নিয়ে।
১৯৮১ সালে যশ চোপড়া তাঁর ‘সিলসিলা’ ছবিটা অমিতাভ-জয়া-রেখার ‘সত্যিকারের’ ত্রিকোণ প্রেমের গল্প নিয়েই বানিয়েছিলেন বলে মনে করেন অনেকে। অমিতাভ-রেখার একসঙ্গে সেটাই শেষ ছবি। বলা হয়, ১৯৭৬ সালে ‘দো আনজানে’র শ্যুটিংয়ের সময়ে কাছাকাছি চলে আসেন অমিতাভ-রেখা। সেই থেকে জয়ার সঙ্গে অমিতাভের সম্পর্কের অবনতি শুরু। এ-ও রটে যায়, গোপনে নাকি অমিতাভকে বিয়েও করেছেন রেখা। সেই জল্পনার আগুনে ঘি পড়ে ঋষি ও নীতু কপূরের বিয়েতে রেখাকে দেখে। সে দিন রেখার সিঁথিতে ছিল সিঁদুর।
অমিতাভ কখনওই কিছু বলেননি এই সম্পর্ক নিয়ে। তবে রেখা মুখ খুলেছেন। এক বার বলেছিলেন, ‘‘প্রথমে জয়া কিছু মনে করত না। ওর ভাবত, শুধু আনন্দের জন্য ওর স্বামী সম্পর্কটায় জড়িয়েছে। কিন্তু যখন বুঝল এই সম্পর্কে আবেগও রয়েছে, তখনই কষ্ট পেতে শুরু করল।’’ রেখা আরও বলেন, এক সন্ধ্যায় জয়ার ডাকেই তাঁর সঙ্গে গল্প করতে গিয়েছিলেন। গল্পে কখনওই অমিতাভের প্রসঙ্গ আসেনি। কিন্তু ফেরার সময় জয়া নাকি তাঁকে বলেন, ‘‘যা-ই হয়ে যাক, অমিতকে আমি কখনওই ছেড়ে যাব না।’’ এর পরেও কেন বিচ্ছেদ হয়নি অমিতাভ-জয়ার? রেখা বলেছিলেন, ‘‘নিজের এবং পরিবারের ভাবমূর্তির জন্যই উনি তা করেননি। আমি ওঁকে ভালবাসি, উনি আমাকে। এটাই সত্যি!’’ যদিও রেখার এই দাবির পরেও বচ্চন দম্পতির অবস্থান একই ছিল। অমর প্রসঙ্গেও যেটা তাঁদের অবস্থান। নীরবতা।
বরং অমরের কথায় অতীতে তবুও মুখ খুলেছেন অমিতাভ। সপা-র টিকিটে জয়া এখন রাজ্যসভার সাংসদ। অমর এক বার দাবি করেন, অমিতাভ নাকি তাঁকে বলেছিলেন জয়াকে দলে না নিতে। সেই কথা শুনে অমিতাভের প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘‘বন্ধু হিসেবে ওঁর বলার অধিকার রয়েছে।’’ এরও আগে এক সাক্ষাৎকারে অমর বলেছিলেন, ‘‘বন্ধু থাকতে না চাওয়ার সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন অমিতাভই।’’
‘ওঁরা’ নীরব হোন বা সরব, নিজের উপস্থিতি কিন্তু জানান দিয়ে যান ‘অমর-সঙ্গী’!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy