Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
কাশ্মীর কর্মশালা নিয়ে বিতর্ক

রাষ্ট্রদ্রোহে অভিযুক্ত ভারতের অ্যামনেস্টি

রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে কাঠগড়ায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ভারতীয় শাখা! কাশ্মীরবাসীদের মানবাধিকারের কথা বলতে গিয়ে আদতে ওই সংগঠন দেশবিরোধী স্লোগান তুলেছে বলে কাল রাতে পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেছে বিজেপির ছাত্র-যুব সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)।

সংবাদ সংস্থা
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৬ ০৪:০৭
Share: Save:

রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে কাঠগড়ায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ভারতীয় শাখা!

কাশ্মীরবাসীদের মানবাধিকারের কথা বলতে গিয়ে আদতে ওই সংগঠন দেশবিরোধী স্লোগান তুলেছে বলে কাল রাতে পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেছে বিজেপির ছাত্র-যুব সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। তার ভিত্তিতে অ্যামনেস্টির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। অভিযোগটি ভিত্তিহীন বলে দাবি অ্যামনেস্টি কর্তৃপক্ষের।

গত শনিবার, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে কাশ্মীরে একটি কর্মশালার আয়োজন করে নোবেল পুরস্কার পাওয়া এই সংগঠন। কাশ্মীরের কয়েকটি পরিবারকে সেখানে আমন্ত্রণও জানানো হয়। বিভিন্ন সময়ে কী ভাবে ভারতীয় সেনার হাতে তাঁরা হেনস্থার শিকার হয়েছেন, কর্মশালায় পরিবারগুলি সে কথা বলে। এবিভিপি-র অভিযোগ, কাশ্মীরকে পাকিস্তানের অংশ হিসেবে দেখার পক্ষ নিয়ে স্লোগান তোলা হয় ওই কর্মশালায়! তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে রাষ্ট্রদ্রোহের পাশাপাশি অ্যামনেস্টির বিরুদ্ধে বেআইনি জমায়েত, দাঙ্গা, বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্বেষ তৈরি করার চেষ্টার ধারাও দিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত এফআইআরের প্রতিলিপি তাদের হাতে আসেনি বলে দাবি অ্যামনেস্টির। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে আইন মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

কিছু দিন ধরেই ‘ভারতের ভেঙে যাওয়া পরিবার’ নামে কয়েকটি কর্মশালার আয়োজন করেছে ওই সংগঠন। তার মধ্যেই ছিল কাশ্মীরের মানবাধিকারের প্রসঙ্গ। সূত্র বলছে, শনিবারের কর্মশালায় কিছু পরিবার ভারতীয় সেনার হাতে অত্যাচারিত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে আনায় উত্তেজনার পারদ চড়ে। শেষে উপস্থিত দর্শকরা দু’ভাগে ভাগ হয়ে যায়। এক দল কাশ্মীরের ‘আজাদি’র পক্ষে মন্তব্য করতে শুরু করে। অন্য দলটি কাশ্মীরকে ভারতের অংশ হিসেবে দেখার পক্ষ নেয়। সে কথা স্বীকার করেই অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, সেই বিতর্কে সংগঠনের কোনও কর্মী যোগ দেননি। সেই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, অ্যামনেস্টি মনে করে, শান্তিপূর্ণ ভাবে নিজের রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ করাও বাকস্বাধীনতার মধ্যেই পড়ে।

সংগঠনের মতে, ওই কর্মশালায় যে বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে, সংসদে, আদালতে এবং রাজনৈতিক মহলে সেই সব প্রসঙ্গ নিয়মিত ওঠে। পাশাপাশি অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, ২০১৫ সালে প্রকাশিত একটি রিপোর্টের প্রেক্ষিতেই ওই কর্মশালায় কথা হয়েছে। সেই রিপোর্টটি পুলিশ রিপোর্ট, তথ্য জানার অধিকার আইনে পাওয়া তথ্য এবং কাশ্মীরের বিভিন্ন পরিবারের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি। অ্যামনেস্টি পুলিশের কাছে ওই কর্মশালার সম্পূর্ণ ভিডিও ফুটেজও জমা দিয়েছে ।

অ্যামনেস্টির ভারতীয় শাখার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর আকর পটেলের কথায়, ‘‘ওই অনুষ্ঠানে পুলিশের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। তার পরেও দোশদ্রোহের অভিযোগ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, ভারতে স্বাধীনতা আর মৌলিক অধিকার রক্ষা করার বিশ্বাসে কিছু ঘাটতি রয়ে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Amnesty International
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE