Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভুয়ো লগ্নি বিল নিয়ে কেন্দ্র পরোক্ষে বিঁধল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকেই

অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর নাম না-করে তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সারদা-রোজ ভ্যালির কারবারে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুললেন এবং কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই যাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর ধর্নায় বসা নিয়ে কটাক্ষ করলেন।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৯ ০২:৩৩
Share: Save:

নাম উচ্চারণ হল না। সরাসরি আঙুলও তোলা হল না। কিন্তু লোকসভায় বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার কারবার রোখার বিল পাশের পর্বে আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকেই ঠারেঠোরে নিশানা করল মোদী সরকার।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর নাম না-করে তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সারদা-রোজ ভ্যালির কারবারে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুললেন এবং কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই যাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর ধর্নায় বসা নিয়ে কটাক্ষ করলেন। পাশাপাশি বিরোধীদের মধ্যে ফাটল তৈরির লক্ষ্যে বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সাধুবাদ দিলেন কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরীকে।

পাল্টা আক্রমণে গিয়ে তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ তুলেন, মোদী সরকার লাগাতার সঞ্চয় প্রকল্পে সুদ কমাচ্ছে। ফলে গরিব, বৃদ্ধ, বিধবাদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে উঠছে। তাই তাঁরা পঞ্জি স্কিমের প্রলোভনে পড়ে যাচ্ছেন। সরকারই গরিব মানুষকে পঞ্জি স্কিমের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

অনিয়ন্ত্রিত সঞ্চয় প্রকল্প নিষেধাজ্ঞায় আগেই অধ্যাদেশ জারি করেছিল মোদী সরকার। তাকেই পাকাপাকি আইনের চেহারা দিতে আজ লোকসভায় বিল পাশ হয়েছে। বিল পাশের আগে অনুরাগ বলেন, ২০১৪-এর জুলাই থেকে ২০১৮-এর জুলাইয়ের মধ্যে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে ৯৭৮টি নতুন মামলা দায়ের হয়েছে। তার মধ্যে ৩২৬টি-ই পশ্চিমবঙ্গে। বিজেপি সাংসদদের ‘শেম, শেম’ রব থামিয়ে

অনুরাগ বলেন, ‘‘কেন্দ্র আইন পাশ করলেও রাজ্য সরকারের দায়িত্ব রয়েছে। রাজ্য সরকারের দায়িত্ব হল কোনও পঞ্জি স্কিমের কারবারির পাশে না দাঁড়ানো। যে সব অফিসার এদের মদত দিয়েছেন, তাঁদেরও পাশে না দাঁড়ানো।’’

অধীর চৌধুরী বিল নিয়ে আলোচনায় বলেছিলেন, তিনি নিজে বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে লড়েছেন। সেই সূত্র ধরে অনুরাগ বলেন, ‘‘এই জন্যই অধীর জিতে এসেছেন। দলের নেতা হয়েছেন। গরিবের হয়ে লড়াই করার জন্যই সম্মানিত হয়েছেন।’’ এর পর তৃণমূলকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা গরিবের জন্য লড়েননি, তাঁদের টাকা লুঠে মদত দিয়েছেন, তাঁদের কী অবস্থা হয়েছে, দেখাই যাচ্ছে। ভবিষ্যতে কী হবে, তা-ও দেখা যাবে।’’

কল্যাণ দাবি করেন, ২০১৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারই আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় আইন এনেছিল। দিল্লিতে রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য ২ বছর সেই বিল আটকে রাখা হয়। এতে ইউপিএ, এনডিএ দুই সরকারেই দায় রয়েছে। এই বিলেও রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্র।

সারদা-রোজ ভ্যালিতে পাঁচ বছর ধরে সিবিআই তদন্ত চললেও এখনও শুনানি শুরু হয়নি। তার আগে প্রাক্তন বিচারপতি শ্যামল সেনের কমিটি রাজ্যে টাকা ফেরানোর কাজ করছিল। তাঁর প্রশ্ন, সর্বস্বান্ত হওয়া মানুষ যদি টাকাই ফেরত না পান, তা হলে আইন করে কী লাভ? অনুরাগ জবাবে বলেন, তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে, সম্পত্তি নিলামের পরেই আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE