Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

জেটলি সক্রিয় নন, চাপে দল

নরেন্দ্র মোদীর প্রথম পাঁচ বছরেও সংসদের উচ্চকক্ষে শরিকদের নিয়ে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না। কিন্তু সামলে নিতেন জেটলি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ০৩:৩৫
Share: Save:

কখনও কংগ্রেসের পি চিদম্বরম, জয়রাম রমেশ, কখনও তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়। নিয়ম দেখিয়ে কথায় কথায় প্যাঁচে ফেলার চেষ্টা করেন সরকারকে। অতীতে এ ধরনের পরিস্থিতিতে দুঁদে আইনজীবী অরুণ জেটলি রাজ্যসভার নিয়ম দেখিয়েই পাল্টা যুক্তি দিতেন। এর বাইরে নিয়মিত লিখতেন ব্লগও। অসুস্থতার কারণে অরুণ জেটলি এখন আর আসেন না রাজ্যসভায়। তাঁর অনুপস্থিতি প্রতি পদে অনুভব করছে বিজেপি শিবির। ব্লগ লিখে সেই ঘাটতি কিছুটা পূরণের চেষ্টায় নেমেছেন অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ রাজ্যসভার সাংসদ ও বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদব। তিনিও আইনজীবী।

নরেন্দ্র মোদীর প্রথম পাঁচ বছরেও সংসদের উচ্চকক্ষে শরিকদের নিয়ে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না। কিন্তু সামলে নিতেন জেটলি। বিরোধী পক্ষের নেতাদের সঙ্গেও সখ্য রয়েছে তাঁর। এখন লোকসভায় তিনশোর বেশি আসন নিয়ে জিতে আসার পর রাজ্যসভাতেও দাপট দেখাতে চাইছে বিজেপি। শরিকদের পাশাপাশি নবীন পট্টনায়ক, জগন্মোহন রেড্ডি, কে চন্দ্রশেখর রাওদের সমর্থন পেতে খোদ প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করতে হচ্ছে। জেটলির অনুপস্থিতিতে থাওরচন্দ্র গহলৌতকে রাজ্যসভার নেতা করা হলেও আইনের বিষয়ে তিনি তেমন ‘চৌকস’ নন। এই সুযোগে বিরোধীরাও চেপে ধরছে সরকারকে। ১৭টি বিরোধী দল একজোট হয়ে সভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে চিঠি লিখে বিলগুলি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন। কাল থেকেই শুরু হচ্ছে সংসদের বর্ধিত মেয়াদ। যেখানে প্রশ্নোত্তর পর্ব বাতিল করে বিল পাশে নজর মোদী সরকারের।

এই ধরনের পরিস্থিতিতে বিরোধীদের চাপে রাখতে জেটলি অতীতে নিয়মিত ব্লগ লিখতেন। এ বারে সেই কাজটি শুরু করলেন অমিত-ঘনিষ্ঠ ভূপেন্দ্র। বিরোধীদের একহাত নিতে আজ তিনি ব্লগ লিখেছেন। যার বক্তব্য, মোদীর গত জমানায় সংসদের অধিবেশন চলতে দেওয়া হয়নি। অনেক বিল আটকে রয়েছে। আর বিরোধীরা বিল সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি তুলছেন। ইউপিএর শেষ পাঁচ বছরে মাত্র ৫টি বিল রাজ্যসভার সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। অথচ মোদী সরকারের প্রথম জমানায় পাঠানো হয়েছে ১৭টি।

ব্লগের পাশাপাশি টুইটারেও ভূপেন্দ্রর পরামর্শ, ‘‘বিরোধীরা কোনও বিলের সঙ্গে একমত হতে পারেন বা না-হতে পারেন। কিন্তু অযথা বাধা সৃষ্টি করাটা গণতন্ত্রের পক্ষে স্বাস্থ্যকর নয়। গণতন্ত্রকে মজবুত করতে তাঁরা যে গঠনমূলক ভূমিকা নিতে পারেন, সেটা বিরোধীদের বোঝা উচিত।’’ ভূপেন্দ্রর আরও দাবি, ‘‘এ বারে সংসদে যত কাজ হচ্ছে, অতীতে কোনও সরকারের আমলে তা হয়নি।’’ প্রধানমন্ত্রী ক’দিন আগেই বলেছিলেন, লোকসভার জন্য যে জনমত এসেছে, সেই ভাবনা মাথায় রাখতে হবে রাজ্যসভাকেও। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, গায়ের জোরে বিল পাশ করানোর চেষ্টা করছে সরকার। সম্প্রতি ‘বুথ দখল’ করে তথ্যের অধিকার আইন রাজ্যসভায় পাশ করানো হয়েছে। আগামী দেড় সপ্তাহে তাৎক্ষণিক তিন তালাক, ‘সারোগেসি’, রূপান্তরকামী, ভাতা বিধির মতো বিল পাশ করাতে চায় সরকার। সরকারের লক্ষ্য, অধিবেশনের বর্ধিত মেয়াদে লোকসভায় ১৫টি ও রাজ্যসভায় অন্তত ১৮টি বিল পাশ করিয়ে নেওয়া। তবে এ পর্যন্ত যে কার্যসূচি তৈরি হয়েছে, তাতে তিন তালাকের মতো স্পর্শকাতর কোনও বিলের প্রসঙ্গ রাখা হয়নি আগামী দু’দিনে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arun Jaitley Rajya Sabha TMC BJP Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE