অরুন্ধতী ও মেনকা।
সমকামিতাকে অপরাধের তকমামুক্ত করতে দীর্ঘ আইনি লড়াই করেছিলেন তাঁরা। সুপ্রিম কোর্টের এই দুই মহিলা আইনজীবী— অরুন্ধতী কাটজু ও মেনকা গুরুস্বামী এ বার প্রকাশ্যে নিজেদের সমকামী সম্পর্কের কথা মেনে নিলেন।
সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে লড়াইয়ের কথা শোনাচ্ছিলেন অরুন্ধতী ও মেনকা। সঞ্চালক যখন তাঁদের বললেন, ‘‘এই রায় মানুষের মধ্যে কী প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে আপনাদের থেকে তা জানতে চেয়েছি। কারণ আপনারা কোর্টে আবেদনকারীদের হয়ে লড়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টি তো ব্যক্তিগতও। আপনারা নিজেরাও এমন সম্পর্কে রয়েছেন।’’ সঞ্চালকের প্রশ্নে হেসে সায় দিয়েছেন ওঁরা। অগুস্তাকাণ্ড, টুজি স্পেকট্রাম, জেসিকা লাল হত্যার মতো মামলা লড়া অরুন্ধতী সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মার্কণ্ডেয় কাটজুর আত্মীয়া। তিনি বললেন, ‘‘রায় ঘোষণার পরে বাবা-মা আর পরিবারের সকলের সঙ্গে আনন্দটা ভাগ করে নিতে পেরেছিলাম। এটাই তো সবচেয়ে বড় সাফল্য।’’ রাজনৈতিক চিন্তাবিদ মোহন গুরুস্বামীর মেয়ে মেনকা। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনীর কথায়, ‘‘এই রায় দিয়ে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে ভারত। ইউরোপ, আমেরিকার পাশাপাশি ভারতের উদাহরণকে সামনে রেখে এলজিবিটিরা লড়াই শুরু করেছেন শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়ায়।’’ সে দিনের শো-এ তাঁদের স্বকণ্ঠে নিজেদের সমকামী বলে মেনে নেওয়ার অংশটি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
২০১৮ সালে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারাটিকে বাতিল ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ব্রিটিশ আমলের ওই আইনে সমকামকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলা হয়েছিল। গত বছর মামলাটি লড়ে জেতেন অরুন্ধতীরা। সেই লড়াইকে স্বীকৃতি দিয়ে এ বছর টাইম পত্রিকায় বিশ্বের সেরা ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় নাম উঠেছে জুটির।
তবে আইনি স্বীকৃতিই তো শেষ কথা নয়। সামাজিক ভাবে, সম্মানের সঙ্গে ভালবাসার অধিকার আদায় করে নেওয়াই অরুন্ধতীদের লক্ষ্য। পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে সম্প্রতি নিজের সমকামী সম্পর্কের কথা ঘোষণা করেছেন ক্রীড়াবিদ দ্যুতি চন্দ। এ বার অরুন্ধতী-মেনকা এগিয়ে আসায় জনসমক্ষে মুখ খোলায় সাহস পাচ্ছেন সমকামী যুগলেরা।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy