রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত।—ছবি পিটিআই।
বিজেপি যে রাজস্থানে নির্বাচিত কংগ্রেস সরকার ফেলার চেষ্টা করছে, তা কি নরেন্দ্র মোদী জানেন! খোদ প্রধানমন্ত্রীকেই চিঠি লিখে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত এই প্রশ্ন ছুড়লেন।
মোদী সরকারের মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে কংগ্রেসের দল ভাঙানোর অভিযোগ উঠেছে। গোটা বিষয় জানিয়ে গহলৌত মোদীকেই চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘আমার জানা নেই এ সম্পর্কে আপনি কতখানি অবহিত অথবা কতখানি আপনাকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে।’’ একই সঙ্গে গহলৌতের ‘সাবধানবাণী’— ‘‘ইতিহাস এমন কাজকর্মে জড়িত কাউকেই ক্ষমা করে না।’’
কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, পোড় খাওয়া গহলৌত একেবারে ভীমরুলের চাকে ঢিল ছুড়েছেন। বিজেপিতে এখন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহর অনুমতি ছাড়া গাছের পাতাও পড়ে না। সেখানে ঘোড়া কেনাবেচায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নাম জড়ানোর পরেও প্রধানমন্ত্রী তা জানেন না, তা হতে পারে না। গজেন্দ্র কার নির্দেশে কংগ্রেসের বিধায়কদের ভাঙানোর চেষ্টা করছিলেন, তা নিয়ে কংগ্রেস আগেই প্রশ্ন তুলেছিল। সেখানে আজ গহলৌত প্রধানমন্ত্রীকে নৈতিক প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিলেন বলেই কগ্রেসের দাবি। বিজেপি নেতাদের অবশ্য বক্তব্য, রাজস্থানে সরকারের টালমাটাল দশায় বিজেপির কোনও হাত নেই। পুরোটাই কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল।
বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর ভাই অগ্রসেন গহলৌতের বাড়ি ও অফিসে আট বছরের পুরনো একটি মামলার সূত্রে ইডি হানা দেয়। অগ্রসেনের মালিকানাধীন সংস্থা ‘অনুপম কৃষি’র বিরুদ্ধে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগ রয়েছে বলে ইডি-র দাবি। রাজস্থানের ছ’টি, গুজরাতের চারটি, পশ্চিমবঙ্গের দু’টি ও দিল্লির একটি জায়গায় ইডি হানা দিয়েছে। কংগ্রেসের যুক্তি, এত পুরনো মামলায় ইডি-র সক্রিয়তা থেকেই স্পষ্ট, মোদী সরকারও গহলৌত সরকারের উপর চাপ তৈরি করতে চাইছে। এমতাবস্থায় গহলৌত মোদীকে চিঠিতে মনে করিয়েছেন, দল বদল রুখতে রাজীব গাঁধী সরকারের তৈরি আইন অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় আরও শক্তপোক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এখন রাজ্যে রাজ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ঘোড়া কেনাবেচা চলছে। রাজস্থানের খেলায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শেখাওয়াত, বিজেপির অন্য নেতাদের সঙ্গে কংগ্রেসের কিছু উচ্চাকাঙ্ক্ষী নেতাও জড়িত। এঁদের মধ্যে কংগ্রেস বিধায়ক ভাঁওয়ারলাল শর্মা বিজেপিতে থাকার সময় বিজেপিরই ভৈঁরো সিংহ শেখাওয়াতের সরকার ফেলার চেষ্টা করেছিলেন।
এ দিকে গহলৌতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করা সচিন পাইলট এবং তাঁর অনুগামী ১৮ জন নেতার বিধায়ক পদ খারিজের দাবির ব্যাপারে তাঁদের বক্তব্য জানতে নোটিস পাঠিয়েছিলেন স্পিকার। রাজস্থান হাইকোর্ট তাতে শুক্রবার পর্যন্ত স্পিকারকে পদক্ষেপ করতে না বলায় স্পিকার সি পি জোশী আজ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। জোশীর যুক্তি, স্পিকারই বিধায়ক পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তা ছাড়া তিনি বিধায়কদের জবাব চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছেন। কারও বিধায়ক পদ খারিজ করেননি। হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অরুণ মিশ্রর বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে।
আবার কংগ্রেসের বিধায়ক গিরিরাজ সিংহ মলিঙ্গা বিজেপির হয়ে ভোট করার জন্য ৩৫ কোটি টাকার প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন সচিন পাইলটের বিরুদ্ধে। সচিন আজ তাঁকে প্রতীকী ভাবে ১ টাকা দিয়ে লিখিত ক্ষমা না চাইলে মানহানির মামলা করা হবে বলে নোটিস পাঠিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy