Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

অসমের ভোটে অশান্তি, মারধর  

তৃণমূল করার ‘অপরাধে’ কাছাড়ে এক মহিলা-সহ চার জনকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। অসমে পঞ্চায়েত ভোটে এ বার প্রথম লড়ছে তৃণমূল।

সর্বশেষ পাওয়া হিসেব অনুযায়ী, অসমে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দ্বিতীয় দফাতে ভোট পড়েছে ৭৫ শতাংশ। ছবি: পিটিআই।

সর্বশেষ পাওয়া হিসেব অনুযায়ী, অসমে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দ্বিতীয় দফাতে ভোট পড়েছে ৭৫ শতাংশ। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর ও গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৪৬
Share: Save:

অসমে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দ্বিতীয় দফাতেও সঙ্গী রইল অশান্তি। কোথাও বিজেপি-কংগ্রেসে সংঘর্ষ। ব্যালট ছাপায় ভুল, ভোটার তালিকায় নাম না-থাকার কারণেও অশান্তি হয় বিভিন্ন জায়গায়। ভোট বয়কটও হয়েছে বেশ কিছু জায়গায়। তৃণমূল করার ‘অপরাধে’ কাছাড়ে এক মহিলা-সহ চার জনকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। অসমে পঞ্চায়েত ভোটে এ বার প্রথম লড়ছে তৃণমূল।

এ দিন ভোট হল নলবাড়ি, বরপেটা, বঙাইগাঁও, ধুবুড়ি, দক্ষিণ শালমারা-মানকাচর, গোয়ালপাড়া, কাছাড়, হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ ও হোজাইয়ে। সর্বশেষ পাওয়া হিসেব অনুযায়ী ভোট পড়েছে ৭৫ শতাংশ। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হরেন্দ্রনাথ বরা জানান, ভোটদানের হার ৮০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। কাছাড়, করিমগঞ্জের কয়েকটি কেন্দ্র, নলবাড়ির একটি কেন্দ্রে ১১ ডিসেম্বর ফের ভোট হবে। সবচেয়ে বেশি, ৮৬ শতাংশ ভোট পড়েছে ধুবুড়িতে। প্রথম দফায় ভোট হয়েছিল ১৬ জেলায়। ভোট পড়ে ৬৫ শতাংশ। প্রথম দফায় ভোট বাতিল হওয়া লখিমপুরের ২৭টি বুথেও আজ ভোট হয়।

দক্ষিণ কৃষ্ণপুর ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সময় আজ চার জনকে মারধর করা হয় তৃণমূল করার কারণে। তাঁরা শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জখম শাহরুল আহমেদ লস্কর জানান, সকালে বোন-ভাগ্নেকে নিয়ে অটোতে চেপে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ তিন-চার জন যুবক অটো থামিয়ে তাঁদের মারতে শুরু করে। তৃণমূলের ভোটার বলে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপও করে। শাহরুলের কথায়, পঞ্চায়েত সভাপতি পদে তৃণমূলের প্রার্থী আফসর হোসেন লস্কর তাঁদের আত্মীয়। তাই তাঁর জন্য কাজ করেছিলেন। হামলাকারীরা কোন পক্ষের, তাঁরা বুঝতে পারেননি।

দক্ষিণ ধলাইয়ের চান্নিঘাট স্কুলে ভোট শুরু হতেই কংগ্রেস-বিজেপির মারপিট শুরু হয় অনেকের নাম ভোটার তালিকায় না থাকায়। ব্যালট পেপার ছিঁড়ে, ব্যালট বাক্স খালে ফেলে দেওয়া হয়। সোনাইয়ের তিনটি ভোটকেন্দ্রেও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। পাথারকান্দির পয়লামুলি স্কুলে কংগ্রেস ও বিজেপির সংঘাতে ভোট বন্ধ হয়ে যায়। জখম হন চার জন।

করিমগঞ্জ জেলার দুল্লভছড়ায় ভুল প্রতীক ছাপা হওয়ায় একটি ওয়ার্ডে ভোট স্থগিত হয়। ধুবুড়ির কালাচাঁদ গ্রামের শতাধিক ভোটারের নাম তালিকায় না থাকায় বেলপাড়া জে বি স্কুলে ভোট বয়কট করে জনতা। নলবাড়ির কুলবিলে ব্যালট অসঙ্গতির কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখা হয়। লামডিঙের লঙ্কাজানে ভোটারদের হাতে ধরে ভোট দেওয়া শেখানোর চেষ্টা করে পোলিং অফিসার ভোটারদের হাতে মার খান। দরঙে ঝোপের মধ্যে এআইইউডিএফ ও কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া অনেক ব্যালট পেপার উদ্ধার হওয়ায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে বিকেলে। সেখানে ফের ভোট করার দাবি উঠেছে। বিলাসীপাড়ায় আবু বক্কর সিদ্দিকি নামে এক প্রিসাইডিং অফিসার গত রাতে কংগ্রেস কর্মীর ঘরে সব ব্যালট পেপার নিয়ে যান বলে অভিযোগ। রাতে স্থানীয় বাসিন্দারা ব্যালট পেপার-সহ তাঁকে ধরে মারধর করে। পুলিশের সঙ্গেও হাতাহাতি হয়। নলবাড়ির মাধাপুরে লোকজনকে হটাতে লাঠি চালায় সিআরপি। কয়েক জন জখম হন। গোলোকগঞ্জে ভোটার তালিকায় খোদ বিজেপি প্রার্থীর নাম না থাকায় প্রার্থী মহিমা বেগম ভোট দিতে পারেননি। নলবাড়ির উত্তর করিয়ায় পঞ্চায়েত সভাপতির নাম ব্যালট পেপারে না ছাপা হওয়ায় বুথে তালা লাগিয়ে দেয় জনতা।

আড়াই বছর ধরে বন্ধ কাছাড় কাগজকল। ‘রিভাইভ্যাল অ্যাকশন কমিটি’-র দাবি, বিভিন্ন জায়গায় মিল-পরিবারের একলক্ষ ভোটার আজ ভোটদানে বিরত থাকেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat Election Assam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE